টানা বৃষ্টিতে আবারও সিলেট নগরীর বেশির ভাগ এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। নগরীর রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, দোকানপাট সব পানিতে একাকার। পানি ঢুকে পড়েছে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়ও।
তিন দিনের টানা বৃষ্টির কারণে নগরীর ছড়া-খালগুলো পানিতে টইটম্বুর হয়ে গেছে। সুরমা নদীর পানিও বাড়ছে। এর ফলে ৭ অক্টোবর শনিবার নগরীর অধিকাংশ বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।
নগরীর শাহজালাল উপশহর, শিবগঞ্জ, সোনার পাড়া, এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কাজলশাহ, দরগা মহল্লা, কালীঘাট, বাগবাড়ি, কানিশাইল, লামাপাড়া, লালা দিঘিরপাড়, মাছুদিঘিরপাড়, বাদামবাগিছা, শাহপরান, কুয়ারপাড়, সোবহানীঘাট, যতরপুর, মাছিমপুর, কামালগড় ও দক্ষিণ সুরমার পিরোজপুর, সিলেট রেলওয়ে স্টেশনসহ সিলেট নগরীর বেশির ভাগ এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও পানি ঢুকেছে।
পানিতে নিচতলা তলিয়ে গেছে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। এতে ব্যাহত হচ্ছে সেবা কার্যক্রম। এই হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের প্রধান অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর নুরুল হুদা নাঈম বলেন, ‘ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিচতলায় পানি ঢুকে মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও দামি আসবাবপত্র নষ্ট হচ্ছে। হাসপাতালের সামনের সড়কও পানির নিচে। হাঁটু পানি ভেঙেই ডাক্তাররা ডিউটিতে এসেছেন। একই অবস্থা মেডিকেল কলেজের সব ছাত্রাবাসের। সকাল থেকেই পানি নিষ্কাশন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’
তিনি আরও বলেন, টানা বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুবে যায় ওসমানী হাসপাতালসহ নগরীর অধিকাংশ এলাকা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী, ব্যাহত হয় চিকিৎসাসেবা। এ অবস্থা থেকে রেহাই পেতে পানি নিষ্কাশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগ, সিটি করপোরেশন ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সমন্বিত পরিকল্পনা প্রয়োজন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম বলেন, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মহানগরের ছড়া, নালা ও খালগুলো যথাসময়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হলেও আমাদের ফের জলাবদ্ধতার শিকার হতে হয়েছে। সুরমা নদী খনন না করলে এ ভোগান্তি থেকে আর রেহাই পাওয়া সম্ভব নয়।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে ৩৫৭ দশমিক ৮ মিলিমিটার। এ ছাড়া শনিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১০২ মিলিমিটার এবং ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ৪ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, টানা ভারী বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি কমলে পানি নেমে যাবে। ড্রেন-নালা পরিষ্কার রাখতে সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে।
ঠিকানা/এনআই