বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ ৩ অক্টোবর (মঙ্গলবার) দুপুর ৩টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। পাশাপাশি কারাদণ্ডিত হয়েও কে কে বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন, এমন উদাহরণ তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। সাংবাদিকদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন যে, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দুটি মামলায় সরকার উদ্দেশ্য-প্রণোদিত রায় দিয়ে কারাগারে আটক রাখে। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দীর্ঘদিন নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে স্যাঁতসেঁতে ভবনে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন বয়োবৃদ্ধ বেগম জিয়া।’
তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে দলীয় চাপে অসুস্থ বেগম জিয়াকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে শর্তসাপেক্ষে কারাগারের পরিবর্তে বাড়িতে থেকে চিকিৎসার জন্য নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয় ২০২০ সালের মার্চ মাসে। এরপর থেকে তিনি বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটে। বেশ কয়েকবার তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ডাক্তারদের নিবিঢ় পর্যবেক্ষণে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ইতোমধ্যে তিনি (খালেদা জিয়া) লিভারে জটিল রোগে আক্রন্ত হওয়ার পাশাপাশি তার দুটি কিডনি দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে ডাক্তারদের গঠিত মেডিকেল বোর্ড বারবার বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে পরিবারকে। সর্বশেষ গত দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে বেগম জিয়া ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে রয়েছেন। তার শারিরীক অবস্থার অবনতির কারণে প্রায়ই সিসিইউতে নেওয়া হচ্ছে। অবস্থার একটু উন্নতি হলে আবার কেবিনে ফেরত আনা হয়।’
তিনি বলেন, ‘এভারকেয়ার হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের আটজন অধ্যাপকসহ ১৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড সর্বসম্মতভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে প্রয়োজনীয় যথাযথ চিকিৎসার জন্য বিদেশে কোনো আধুনিক, উন্নত ও বিষেশায়িত হাসপাতালে দ্রুত স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছেন। এই অবস্থায় ডাক্তাররা পরিবারকে বারবার চাপে রাখছেন বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি দলীয়ভাবেও সরকারের কাছে নানাভাবে আবেদন জানিয়েছে গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে। কিন্তু সরকার এতে সায় দিচ্ছে না। এমনকি পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক আবেদন করা হয়েছে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সুযোগ দিতে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
ঠিকানা/এম