Thikana News
১৯ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪


 

খালেদাকে কেন সহানুভূতি দেখাতে হবে : লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী

খালেদাকে কেন সহানুভূতি দেখাতে হবে : লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী ছবি সংগৃহীত


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন তুলে বলেছেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে খালেদা জিয়ার প্রতি কেন সহানুভূতি দেখাতে হবে? তিনি বলেছেন, এখন তার আর কিছু করার নেই। আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে তিনি যেতে পারবেন না।

২ অক্টোবর সোমবার যুক্তরাজ্যে স্থানীয় সময় বিকালে মধ্য লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার এলাকার ম্যাথডিস্ট চার্চ হলে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘রোজই শুনি এই মরে মরে, এই যায় যায়। আর বয়স তো আশির ওপরে। এমনি তো সময় হয়ে গেছে। তার মধ্যে অসুস্থ। এখানে এত কান্নাকাটি করে তো লাভ নাই। আমি বলেছি, এখানে আমার কোনো এক্সিকিউটিভ অথরিটি নাই, কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে তাকে আমরা পাঠাতে পারি না। কিন্তু এটাকে ইস্যু করে আন্দোলন সংগ্রাম। মায়ের প্রতি যদি এত দরদই থাকত, ছেলে তো একবার দেখতে যেত। তা তো যায় না। তাহলে বিষয়টা কী?’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘এতিমখানার জন্য টাকা এসেছিল। সেই এতিমদের টাকা মেরে দিয়ে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া। যা-ই হোক বয়স্ক মানুষ। তার বড় বোন ভাই সব এসে কান্নাকাটি। সে সাজাপ্রাপ্ত আসামি কারাগারে বন্দী। তার বোনের কান্নাকাটিতে সত্যি কথা বলতে কি আমি তার সাজাটা স্থগিত করে বাসায় থাকার মতো ব্যবস্থা করে দিয়েছি, এক্সিকিউটিভ অথরিটি আমার আছে। এখন তাদের আন্দোলন তাকে বিদেশে পাঠাতে হবে। পৃথিবীর কোন দেশে  সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে চিকিৎসার জন্য পাঠায় বলতে পারেন, কোন দেশ পাঠায়? আবার কেউ কেউ আমাদের আতেলরা আছে তারা আবার বলে একটু কি সহানুভূতি দেখাতে পারেন না। সহানুভূতি আমাকে দেখাতে বলে। আমি আপনাদের কয়েকটা ঘটনা বলি।’

এরপর প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি ঘটনার স্মৃতিচারণা করেন। তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট তো খালেদা জিয়ার জন্মদিন না। তার বিয়ের দলিলে নাই। সে যে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিল, সেখানেও ১৫ আগস্ট লেখা নাই। (খালেদা জিয়া) প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তার বাবা ইন্টারভিউ দিয়েছিল পত্রিকায়, সেখানেও লেখা নাই। ১৫ আগস্ট কোন দিন, যেদিন আমার বাবা-মা, আমার ছোট ভাই সবাইকে হত্যা করেছে। যে দিনটা আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। ওই দিনটাকে উৎসবের দিন বানিয়েছে। বড় বড় কেক কেটে উৎসব করে সেদিন। কত বড় জঘন্য মনোবৃত্তি হলে পরে... সেই ভুয়া জন্মদিন বানিয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু তা-ই নয়, ১৫ আগস্টের খুনি জিয়াউর রহমান যেমন তাদের ইনডেমনিটি দিয়েছে, খালেদা জিয়া তেমন ভোট চুরি করে তাদের পার্লামেন্টে বসিয়েছে। তা ছাড়া ২১ আগস্ট ২০০৪, যখন গ্রেনেড হামলা করা হলো, আইভী রহমানসহ আমাদের ২২ জন নেতাকর্মী... প্রায় ২৫ জনের মতো আমাদের নেতাকর্মী আহত। ওবায়দুল কাদের থেকে শুরু করে সবাই সেখানে গ্রেনেড হামলায়, সবার শরীরে কিন্তু স্প্লিন্টার। সেই কেসের কোনো আলামত রাখতে দেয়নি।  পার্লামেন্টে কথা বলতে দেয়নি। নিন্দা প্রস্তাব আনতে বলেছি, সেটা আনতে দেয়নি। বরং খালেদা জিয়া বলেছে, ও শেখ হাসিনাকে আবার কে মারবে। উনি তো ভ্যানিটি ব্যাগে নিয়ে গিয়ে গ্রেনেড নিজে মারছে। আমি তার পরও আজকে তাকে কারাগার থেকে বাসায় থাকতে দিয়েছি।’

বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) দেওয়া নিয়েও কথা বলেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘আজকে আরেকটা খেলা শুরু হয়েছে স্যাংশন। কথায় কথায় স্যাংশন। কে কাকে স্যাংশন দেয়, সেটা আমার প্রশ্ন। আমি স্পষ্ট কথা বলছি, যাদের দিয়ে সন্ত্রাস দমন করলাম, যাদের দিয়ে জঙ্গিবাদ দমন করলাম, তাদের ওপর স্যাংশন। এটা কোন ধরনের কথা। তাহলে কি জঙ্গি আর সন্ত্রাসী থাকবে বাংলাদেশে? আমি সবাইকে বলে দিয়েছি, ওইসব নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নাই। আপনাদেরও বলব, স্যাংশন-ট্যাংশন নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। দেশ আমাদের। আমাদের দেশটাকেই আমরা গড়ে তুলব। কারও মুখাপেক্ষী হয়ে চলতে হবে না। আর বেশি আমাদের স্যাংশন দিলে আমরাও স্যাংশন দিতে পারি।’

বিএনপির চলমান আন্দোলনের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে প্রচুর অর্থ-সম্পদ বানিয়েছে। জনগণ কিছু না পেলেও তারা প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তাদের কারণেই দেশে ইমার্জেন্সি হলো। আমাকেই প্রথম জেল খাটতে হলো। তারা আন্দোলন করুক, আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। আন্দোলনের নামে তারা যদি দেশের মানুষকে আবার অত্যাচার করতে চায়, তাহলে তাদের কোনো ছাড় নেই। যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখা হবে।

এর আগে সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের যাত্রা শুরু হবে। তখন যেমন অনেক সুযোগ আমরা পাব, আবার অনেক চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ জাতির পিতার আহ্বানে যা কিছু ছিল তাই নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে। কাজেই ওই সমস্ত চ্যালেঞ্জ আমরা ভয় পাই না, যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক। সংবর্ধনা সভায় যোগ দিতে আগে থেকেই জড়ো হতে শুরু করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। লন্ডনের বাইরের দূরদূরান্তের শহর ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকেও অনেকে সভায় যোগ দেন।

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স