জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পরমানন্দপুর গ্রামে বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা।
৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার বাদ এশা নিজ গ্রাম পরমানন্দপুর পশ্চিমপাড়ায় তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে তার প্রতিষ্ঠা করা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঞা ডিগ্রি কলেজ মাঠে শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অরুয়াইল, পাকশিমুল ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকার হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে।
জাতীয় সংসদ ও সরাইল সদরে আব্দুস ছাত্তারের পৃথক জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা শনিবার ভোরে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অসুস্থতার কারণে এক সপ্তাহ আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি ছয়বারের সংসদ সদস্য ছিলেন। নানা কারণে ইদানীং তিনি বেশ আলোচিত হয়ে ওঠেন।
শনিবার বাদ আসর সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা-পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন নাসিরনগর এলাকার সংসদ সদস্য বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার, সরাইল ও আশুগঞ্জের সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা, সরাইল উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, নাসিরনগর উপজেলা চেয়ারম্যান রাফি উদ্দিন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, আওয়ামী লীগ নেতা মাহফুজ আলী ও উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার ছেলে মাইনুল হাসান তুষার।
এ সময় উকিল আবদুস সাত্তার ভূঞার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সহযোগী বিএনপির কোনো নেতাকর্মী উপস্থিত হননি বলে জানা গেছে। এ নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সরাইল উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক ঠাকুর বলেন, ‘যারা দীর্ঘদিন সিরিঞ্জ দিয়ে সাত্তার সাহেবকে চুষে বড়লোক হয়েছেন, তারা কেউ আজ তাকে শেষ বিদায় জানাতে আসেননি, এটা বড় বেদনার।
উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার ছেলে মাইনুল হাসান তুষার বলেন, আমার বাবা সারা জীবন সৎ জীবনযাপন করেছেন। আমাকেও সৎভাবে বাঁচার নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। তিনি চিরকাল মানুষের কল্যাণই চিন্তা করেছেন।
আব্দুল সাত্তার ভূঞা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ ভূঞা ও রহিমা খাতুনের সন্তান। ১৯৩৯ সালের ১৬ জানুয়ারি তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন।
উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৭৯ সালে তৎকালীন কুমিল্লা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও জুনের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকার থেকে টেকনোক্রেট মন্ত্রী হিসেবে আব্দুস সাত্তার আইন, মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে তিনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন।
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন।
ঠিকানা/এনআই
                           
                           
                            
                       
     
  
 

 ঠিকানা অনলাইন
 ঠিকানা অনলাইন  
                                
 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                