ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া ও পরবর্তী সময়ে বিশ্বকাপ দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তামিম ইকবাল, তা সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।
২৮ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় মাশরাফি এ মন্তব্য করেন।
বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের ক্রিকেটে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক বিষয়গুলো নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরতেই ভক্তদের সামনে এসেছেন মাশরাফি। এদিন প্রথমেই তিনি কথা বলেছেন তামিম ইস্যু নিয়ে।
জাতীয় দলের অন্যতম সফল অধিনায়ক মাশরাফি বলেন, ‘আমার কোনো অ্যাঙ্গেল থেকেই মনে হয়নি তামিমের অধিনায়কত্ব ছাড়া উচিত হয়েছে। তামিমের ইনজুরি একটা ইস্যু ছিল। ইনজুরি থাকলে আসলে কিছু করার নেই। ক্লিয়ারলি তার ইনজুরি ছিলও। তবে বোর্ড তামিমকে নিয়ে কমফোর্টেবল জোনে ছিল।’
মাশরাফি বলেন, ‘বোর্ড থেকে একটা জিনিস ক্লিয়ার কমিউনিকেশন করেছে যে তামিমকেই আমরা অধিনায়ক হিসেবে দেখছি। সেই জায়গা থেকে তামিমের অধিনায়কত্ব ছাড়া প্রয়োজন ছিল কি না, ইনজুরির সঙ্গে মিলিয়ে, সেটা তামিমই ভালো বলতে পারবে।’
গত আগস্টে অধিনায়কত্ব ছাড়েন তামিম। সেই সঙ্গে চোটের কারণে এশিয়া কাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। চিকিৎসার জন্য বিদেশেও গিয়েছিলেন। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সিরিজে দলে ফেরেন তিনি। তার বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়াও একরকম নিশ্চিতই ছিল।
কিন্তু গত কয়েক দিনে নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বদলে যায় দৃশ্যপট। শেষ পর্যন্ত তামিমকে ছাড়াই ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকাপ খেলতে গেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দল ভারতের উদ্দেশে যাত্রার পর তামিম ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় নিজের অবস্থান তুলে ধরেন। সেখানে বলেন, ‘কোনো রকম নোংরামির মধ্যে থাকতে চাননি তিনি।’
বোর্ড থেকে এক শীর্ষ কর্তার ফোন কলের কথা উল্লেখ করেন এই ওপেনার। দায়িত্বশীল ওই কর্মকর্তা প্রথমে আফগানিস্তান ম্যাচ না খেলার ও পরে তাকে নিচের দিকে ব্যাট করার প্রস্তাব দেন বলে উল্লেখ করেন তামিম। এর পরই তিনি উত্তেজিত হয়ে বিশ্বকাপ দলে তাকে না রাখার কথা বলে দেন।
মাশরাফি এ বিষয়ে বলেন, ‘তামিম বলেছে, বোর্ডের কেউ না কেউ তার সঙ্গে কথা বলেছে এবং কথা বলার পর সে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে যায় এবং উত্তেজিত হওয়ার পর সে দলে থাকতে চায়নি। আমি মনে করি, এটাও একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।’
মাশরাফি যোগ করেন, ‘রাগ-ক্ষোভের ওপর মানুষ যে সিদ্ধান্তই নেয় না কেন, সেটা সঠিক সিদ্ধান্ত হয় না। এটা আমরা সব সময় দেখে এসেছি। তামিম তার সিদ্ধান্ত আরেকটু ভেবেচিন্তে নিলে ভালো হতো।’
তামিমের অধিনায়কত্ব ছাড়ার বিষয় আরও একবার উল্লেখ করে মাশরাফি বলেন, ‘অধিনায়কত্ব যদি পরিবর্তন করতেই হতো, বিশ্বকাপের আগে না করে আরও ছয় মাস বা এক বছর আগে করা আইডিয়াল ছিল। যেহেতু ধরেই নেওয়া হয়েছিল তামিম অধিনায়কত্ব করবে, বিসিবি তাই তামিমকে ওই সুযোগ দিয়েছিল। আমি মনে করি, তামিম ওই সুযোগটা নিতে পারত।’
তবে কোনো বোর্ড কর্মকর্তার তামিমকে ওইভাবে নিচের দিকে ব্যাটিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার সমালোচনাও করেছেন মাশরাফি। তামিমকে এমন কোনো বার্তা দেওয়ার থাকলে সেটা অধিনায়ক সাকিব আল হাসানই দিতে পারতেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। দায়িত্বটা সাকিবই নিতে পারতেন বলে মত তার।
ঠিকানা/এনআই