Thikana News
১৮ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪


 

জামায়াতে নির্বাচন প্রশ্নে মতভিন্নতা

জামায়াতে নির্বাচন প্রশ্নে মতভিন্নতা


নির্বাচন প্রশ্নে জামায়াতে মতভিন্নতা প্রবল আকার  ধারণ করেছে। জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতারা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে। অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতৃত্ব এবং জামায়াতের প্রধান অঙ্গসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির সরকারের সঙ্গে কোনো রকম সমঝোতা ও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রবল বিরোধী। তারা বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক গভীরতর করে সরকার পতনের আন্দোলন তীব্রতর করার পক্ষে।
সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের হামলা ও বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারের ঘটনা তাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা করে সরকারবিরোধী আন্দোলনে মাঠে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করার অভিযোগে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। পরে অবশ্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে জামায়াতের মূল নেতৃত্বের সঙ্গে সরকারের আলোচনায় একটা সমঝোতা হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের যোগাযোগ রয়েছে। ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকের পর গ্রেফতারকৃত জামায়াত নেতাদের মুক্তি ও জামিনের ব্যবস্থা হয় বলে জানা গেছে। এতে জামায়াত নেতারা সন্তুষ্ট হলেও তাদের একটি অংশ এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের অনেকে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তারা সরকারের ফাঁদে পা দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রবল বিরোধী। বিএনপি ও বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে মিলে এক দফার আন্দোলন জোরদার করার পক্ষে জোরালো সিদ্ধান্ত নেন তারা। এই অংশের কয়েকজন নেতা লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে মোবাইলে আলাপ করেন। তারেক রহমান জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা এবং তাদের সঙ্গে নিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন না। সাম্প্রতিক সময়ে তার এ অবস্থানে পরিবর্তন এসেছে বলেই জানা যায়। এ ব্যাপারে তার মা বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশ রয়েছে বলে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এক নেতা জানান। খালেদা জিয়া বরাবর জামায়াতের সঙ্গে উন্নত সম্পর্ক বজায় রাখার নীতিতে বিশ্বাসী। এই বিশ্বাস থেকেই তিনি জামায়াত নেতাদের মন্ত্রিসভায়ও নিয়েছিলেন। জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠন, দেশ পরিচালনার ব্যাপারে পাকিস্তানের সর্বাধিক প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশ ছিল বলে বিএনপিরই নেতৃস্থানীয় সূত্রে জানা যায়। এখন জামায়াতকে নিয়েই সরকার পতনের আন্দোলন চূড়ান্ত লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বিএনপির এই সিদ্ধান্তে জামায়াতের একটি অংশ সন্তুষ্ট হলেও মূল নেতৃত্ব বিপক্ষে। জামায়াত দলগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। রাজনৈতিকভাবে দলকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার বৃহত্তর স্বার্থে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিকল্প নেই বলে তারা মনে করেন। জামায়াত নেতারা এ-ও মনে করেন, পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিএনপি তাদের ও অন্যান্য ইসলামি সংগঠনকে সম্মান দেখাচ্ছে, বাহ্যিকভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। নির্বাচনে অধিকসংখ্যক দলের অংশগ্রহণ যাতে না হয়, তার জন্যই প্রধানত তাদের এই কদর। নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ অর্জনের কথা বিবেচনায় নিয়েই জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেওয়ার দলগত সিদ্ধান্তে এখন পর্যন্ত অবিচল রয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর তারা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী ময়দানে জোরেশোরে অবতীর্ণ হতে পারে। তার আগেই জামায়াত ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে ভূমিকা রাখবে। মূলত যে কারণে বিএনপি নেতৃত্ব এক দফার আন্দোলন নিয়ে অনেকটা দ্বিধায় পড়েছে।


 

কমেন্ট বক্স