Thikana News
২২ নভেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

সারা অঙ্গে এত ক্ষত! 

সারা অঙ্গে এত ক্ষত! 
মুহম্মদ শামসুল হক 

[পূর্ব প্রকাশিতের পর]
আলবেনি দখল করার জন্য কুইবেক সেনাবাহিনীকে প্রেরণ করা এবং বিস্ময়কর প্রত্যাক্রমণের আওতায় ম্যারিটাইম প্রভিন্সের সেনাবাহিনীর মেইনে ঝটিকা হামলা চালানোর বিষয়টিও প্রাধান্য পেয়েছিল পরিকল্পনায়। পরিকল্পনায় স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করা হয়েছিল, আমেরিকার পক্ষ থেকে রচিত প্রতিরোধব্যুহ দুর্ভেদ্য প্রমাণিত হলে এবং অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কানাডীয় বাহিনীর পক্ষে পশ্চাদপসারণ অপরিহার্য হয়ে পড়লে সময়ের প্রয়োজনে কিছু অভিনব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তেমন পরিস্থিতিতে মার্কিন বাহিনীর পাল্টা আক্রমণ বিলম্বিত করার খাতিরে কানাডীয় বাহিনী সকল সেতু এবং রেলপথ ধ্বংস করে দিয়ে পিছু হটে নিজেদের সীমান্তে অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। 

বস্তুত, ওই পরিকল্পনা কালনেমির লঙ্কাভাগে পরিণত হয়েছিল। আবার আটলান্টিকের অপর পাশে অবস্থানরত ব্রিটিশ বাহিনীর দৃঢ়মূল বিশ্বাস ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার যুদ্ধ বাধলে কানাডার অনুরোধে ব্রিটিশ বাহিনী কানাডাকে প্রয়োজনীয় সাহায্য করার জন্য সেনাবাহিনী প্রেরণ করবে। পরে ব্রিটিশ বাহিনী সম্যক উপলব্ধি করল যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল এবং শক্তিশালী-সুদক্ষ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের কবল থেকে কানাডাকে রক্ষা করা ব্রিটিশ বাহিনীর পক্ষে কোনোক্রমেই সম্ভব হবে না। তাই কানাডাকে রক্ষার প্রয়োজনে সেনাবাহিনী পাঠিয়ে সাহায্য না করে তারা পূর্বপরিকল্পনার স্থলে নতুন কৌশল অবলম্বন করল। ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সর্বোত্তম স্বার্থেই যুক্তরাষ্ট্র বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ না হয়ে ব্রিটিশ বাহিনী গতিপথ পরিবর্তন করল এবং ভিন্ন কৌশলে সময়ক্ষেপণের মাধ্যমে কানাডাকে রক্ষায় বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করল।

এদিকে ১৯১৯ সালের অক্টোবরে ব্রিটিশ প্রধান নৌসেনাপতির দপ্তর থেকে এক স্মারকে উল্লেখ করা হলো ব্রিটিশ সৈন্য সরাসরি কানাডায় প্রেরণ করা হলে ব্রিটিশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অসীম স্থলযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার উন্মুক্ত ক্ষেত্র তৈরি হতো। ফলে সময় ও দূরত্বের প্রশ্নকে নির্বাসনে দিয়ে ব্রিটিশ বাহিনীকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ও সরবরাহ অবরুদ্ধের দায়িত্ব বহন করতে হতো। প্রকৃত প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রে পূর্ণ আগ্রাসন চালানো ব্রিটিশ বাহিনীর পক্ষে পুরোপুরি অবাস্তব বিবেচিত হয়েছিল এবং ব্রিটিশ নৌবাহিনীর পক্ষেও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দুর্ভেদ্য অবরোধ গড়ে তোলা দুঃসাধ্য ছিল। 

এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সরবরাহের ক্ষেত্রে তীব্র বাধার সম্মুখীন হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটেনের পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল এবং দ্য রয়্যাল নেভি প্রতিরক্ষাব্যুহ রচনায়ও সক্ষম হতো না। অনবদ্য কারণে আমেরিকার নৌবাহিনী ব্রিটিশ আইসলেসের দিকে অগ্রসর হলে যুক্তরাজ্যের পক্ষে অনতিবিলম্বে আত্মসমর্পণ ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা থাকত না। এমনতর পরিস্থিতিতে দ্য ব্রিটিশ হাইকমান্ডকে বারমুডার মতো পশ্চিম গোলার্ধের বেইসে থাকা রয়্যাল নেভির যুদ্ধজাহাজ নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের পরিকল্পনা করতে হতো। তেমন পরিস্থিতিতে অবশ্য কানাডা এবং ব্রিটিশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বেইসের জাহাজগুলো আমেরিকার বাণিজ্যিক রণতরীগুলোর ওপর হামলা চালাতে পারত এবং ব্রিটিশ ও কমনওয়েলথের শিপিং কনভয়গুলো রক্ষায় সক্ষম হতো। ব্রিটিশ বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় বেইসগুলোতে বোমা, শেলিং এবং আগ্নেয়াস্ত্রের আঘাত হানার সুযোগও পেত। এ ছাড়া গভীর সমুদ্রে বিদ্যমান ব্রিটিশ বাণিজ্য জাহাজগুলো এবং হংকং কলোনির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়াটিক ফ্লিটের (নৌবহর) হামলা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ ইন্ডিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার সেনাবাহিনী সাহায্য করতে পারত। ব্রিটিশ সরকার আশা করেছিল, এসব নীতিমালার দরুন আমেরিকার সর্বস্তরের জনগণের নিকট সরকারের কর্মকাণ্ড ও পদক্ষেপ অপ্রিয় হয়ে উঠত এবং জনগণ শান্তিপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করত।

ইমপেরিয়াল জার্মান (জার্মান সাম্রাজ্যবাদ) : জার্মান সাম্রাজ্যবাদের পক্ষ থেকে ১৮৯৭ থেকে ১৯০৬ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক সামরিক অভিযানের নীলনকশা প্রণয়ন করা হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী ইউনাইটেড স্টেটস আটলান্টিক ফ্লিটকে যুদ্ধে জড়ানোর লক্ষ্যে শুরুতে ভার্জিনিয়ার নরফকে আঘাত হানার এবং পর্যায়ক্রমে উপকূল থেকে ইস্টার্ন সি-বোর্ডে বোমা হানার কথা ছিল। পরবর্তী সময়ে নিউইয়র্ক সিটি এবং বস্টনে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে অভিযান চালানোর বিষয়টিও নীলনকশার অন্তর্ভুক্ত ছিল। অবশ্য বাস্তবে এই দুর্ধর্ষ অভিযান পরিচালনা করার মতো পর্যাপ্ত সংখ্যক সেনাবাহিনী এবং অঢেল সামরিক সরঞ্জাম না থাকায় নীলনকশাটি সাফল্যের মুখ দেখেনি। এদিকে দ্বিতীয় কেইজার উইলহেম প্রণীত বৈদেশিক নীতিমালায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অহেতুক যুদ্ধবিগ্রহে জড়ানোর পরিবর্তে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছিল। ওই বৈদেশিক নীতিমালার সুবাদে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ১৯১৭ সালে জড়িত হওয়ার আগ পর্যন্ত ইউরোপের সঙ্গে যুদ্ধবিগ্রহে আমেরিকাকে তেমন শক্তি ক্ষয় করতে হয়নি। মূলত ১৯১৪ সালের আগস্ট থেকে ১৯১৭ সালের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র জার্মানির ব্যাপারে নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছিল। তাই জার্মান সামরিক ইন্টেলিজেন্স এবং গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কূটনীতিকের ছদ্মাবরণে আমেরিকান যুদ্ধসামগ্রী প্রস্তুতকারী করপোরেশন কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সকল ধরনের সামরিক যন্ত্রপাতি-রসদপত্র মিত্র শক্তির নিকট বিলম্বে পৌঁছানো ও ধ্বংস করার কাজে গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছিল। এরই ভয়াবহ পরিণতি হিসেবে ১৯১৬ সালের ৩০ জুলাই ব্ল্যাক টম বিস্ফোরণ এবং ১৯১৭ সালের ১১ জানুয়ারি কিংসল্যান্ডস বিস্ফোরণের মতো অন্তর্ঘাতের জন্ম দিয়েছিল।

জার্মানির নাৎসি বাহিনী : আমেরিকার বিরুদ্ধে জার্মানি যুদ্ধ ঘোষণার পর ১৯৪১ সালে জার্মান হাইকমান্ড স্বীকার করল যে যুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি সশস্ত্র হামলা কিংবা অভিযান চালিয়ে তা দখল করার মতো পর্যাপ্ত সংখ্যক সেনাবাহিনী এবং সাজসরঞ্জাম জার্মানির নেই। তাই জার্মান বাহিনী স্থল হামলার পরিবর্তে নৌযুদ্ধের ওপর গুরুত্ব আরোপ করল। এ পর্যায়ে জার্মান বাহিনী ইউ-বোটের সাহায্যে আটলান্টিকজুড়ে আমেরিকার রণতরী ও পণ্যবাহী জাহাজ, বিশেষত অপারেশন ড্রামবিটের অধীনে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর ওপর সাঁড়াশি হামলা চালাল। অবশ্য নানা দিক বিবেচনায় জার্মান নেতা এডলফ হিটলার একপর্যায়ে আমেরিকার রণ ও বাণিজ্যতরীর ওপর হামলা কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। জার্মান সামরিক বাহিনী এবং আলবার্ট স্পিয়ারের মতো অর্থনীতিবিশারদেরা উপলব্ধি করলেন, খাদ্যশস্য এবং সামরিক সাজসরঞ্জাম প্রস্তুত করার মতো অঢেল মাঠঘাট ও কলকারখানা যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে জার্মানি কখনো সাফল্যের মুখ দেখবে না। 

এরপর ১৯৪২ সালের বসন্তকালে বিশেষভাবে নকশাকৃত বায়ুবহনযোগ্য সর্বোচ্চ নির্মিত পাঁচটি এলএলএম’স আমেরিকা বোম্বার নামক ট্রান্স-আটলান্টিক রেঞ্জ বোমযানের সাহায্যে জার্মান সামরিক নেতারা যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু পশ্চিম গোলার্ধে এ শ্রেণির বোম্বার রাখার মতো পর্যাপ্ত বেইসের অভাব থাকায় এবং এ ধরনের অত্যধিক ব্যয়বহুল ও অত্যাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র প্রস্তুতির সক্ষমতা জার্মানির দ্রুত হ্রাস পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনাটি বাস্তবের মুখ দেখেনি। যাহোক, জার্মানির ধারণা ছিল ১৯৪৪ সাল নাগাদ জাপান যুক্তরাষ্ট্রে বড় ধরনের সামরিক হানা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে বহুলাংশে কাবু করে ফেলবে। বাস্তবে সেই আশার গুড়ে বালি পড়ায় ও জার্মানির ইউ-বোটের সংখ্যা দ্রুত কমে যাওয়ায় সর্বোপরি ১৯৪৪ সালে মিত্রবাহিনী গ্রিনল্যান্ড ও আইসল্যান্ড দখল করার পর জার্মান বাহিনী যুুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি সামরিক হামলা চালানোর অভিলাষ পুরোপুরি পরিত্যাগ করে। তত দিনে জার্মানির পরাজয়ের ঘণ্টাও বেজে উঠতে থাকে। 

১৯৪৪ সালে প্রকৃত প্রস্তাবে, ইস্টার্ন ফ্রন্টের অনেক যুদ্ধে রেড আর্মির সম্মুখ অভিযানে টিকতে না পেরে পলায়নরত জার্মান বাহিনী পশ্চিমা মিত্রবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণের পরিবর্তে আমেরিকার নিকট আত্মসমর্পণকে যুক্তিসিদ্ধ বিবেচনা করেছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জার্মান সামরিক কর্মকর্তারা নিজেদের সমর নীতিতে পরিবর্তন আনয়ন করলেন এবং আমেরিকায় আঘাত হানার স্থলে আমেরিকার নিকট আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। যাহোক, অপারেশন প্যাস্টোরিয়াস কালে ইউ-বোটযোগে ৮ জন জার্মান স্যাবোটাজ (অন্তর্ঘাত) এজেন্টের আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে অবতরণ ছিল সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। এই এজেন্টদের একটি গ্রুপ নিউইয়র্কে এবং অপর গ্রুপটি ফ্লোরিডায় অবতরণ করেছিল। দুজন এজেন্ট ছিল ত্রুটিযুক্ত এবং পরিকল্পনার বিষয়াদি এফবিআইর নিকট ফাঁস করে দেওয়ায় বাকিদের গ্রেপ্তারপূর্বক বিচারের সম্মুখীন করা হলো। বিচারে ছয়জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো। বাকি দুজনকে কারাদণ্ড প্রদান করা হলো এবং ১৯৪৮ সালে অধিকৃত জার্মানিতে তাদের প্রেরণ করা হলো। যাহোক, আলবার্ট স্পিয়ারের যুদ্ধ-পরবর্তী রচিত ‘স্পানডাউ : দ্য সিক্রেট ডায়েরিজ’ শীর্ষক গ্রন্থ থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র জার্মানির তৃতীয় বৃহত্তর শত্রুতে পরিণত হবে এই বদ্ধমূল ধারণাবশে এডলফ হিটলার ১৯৩৩ সালে ম্যাচটারগ্রিফাঙের পূর্বেই নিউইয়র্ক সিটিকে পুড়িয়ে ছাইভস্মে পরিণত করার মোহগ্রস্ত ছিল। কিন্তু নানা কারণে হিটলারের সেই মোহ চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়েছিল।

জাপানের আগ্রাসন ও পার্ল হার্বার : হাওয়াই এবং যুক্তরাষ্ট্রে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান হানার মতো সৈন্য-সামন্ত এবং যুদ্ধাস্ত্র জাপানের ছিল না। তা সত্ত্বেও জাপানের নৌবাহিনী ওয়াহু আক্রমণের পর ইমপেরিয়াল জাপানিজ নেভির মিনোরু গেনডা হাওয়াইকে বেইস হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে আমেরিকার হাওয়াই সংলগ্ন অঞ্চলে ভীতি সঞ্চার এবং যুদ্ধ সমাপ্তিতে আপসরফায় তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে হাওয়াইতে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ডুবুরি বোম্বার, টর্পেডো বোম্বারসহ ৩৫৩টি ইমপেরিয়াল জাপানিজ এয়ারক্রাফট বা যুদ্ধবিমানের বহর ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর রোববার হাওয়াই অপারেশন ও অপারেশন ওয়ান এবং অপারেশন জেডের আওতায় হনলুলুতে আঘাত হানল। পার্ল হার্বার নামে সমধিক খ্যাত ওই হামলায় আমেরিকার আটটি নেভি যুদ্ধজাহাজের মধ্যে ওই এলাকায় বিদ্যমান ছয়টি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেল এবং চারটি ডুবে গেল। এ ছাড়া জাপান যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ক্রুজার, তিনটি ডেসট্রয়ার, একটি অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট প্রশিক্ষণ জাহাজ এবং একটি মাইনলেয়ার ডুবিয়ে ও ধ্বংস করে দিয়েছিল। ওই সাঁড়াশি হামলায় সর্বমোট ২ হাজার ৪০৩ জন আমেরিকান প্রাণ হারিয়েছিলেন এবং ১ হাজার ১৭৮ জন গুরুতর আহত হয়েছিলেন। পাওয়ার স্টেশন, ড্রাই ডক, শিপইয়ার্ড, মেইনটেন্যান্স ও ফুয়েল এবং টর্পেডো স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ওই হামলার আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে না জড়িয়ে নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছিল। কিন্তু ১৯৪১ সালের ৮ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন জাপানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করল। পার্ল হার্বারের বিষাদময় স্মৃতি যুক্তরাষ্ট্রবাসীকে আজও অশ্রুসিক্ত করে। জাতি বিনম্র শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায় নিহত এবং আহতদের অদ্যাবধি স্মরণ করে। [আগামী সপ্তাহে টুইন টাওয়ার ধ্বংসের কাহিনির মাধ্যমে সমাপ্তি]  

লেখক : সহযোগী সম্পাদক, ঠিকানা, নিউইয়র্ক। 

৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩।

কমেন্ট বক্স