লাহোরের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে বড় স্কোর এনে ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাটাররা। ১৯৩ রানের স্বল্প পুঁজিতে নির্ভর করে লড়াইটা করেছিলেন বোলাররাই। কিন্তু নির্জীব উইকেটে লড়াই করলেও ম্যাচের ফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসতে পারেননি শরীফুল ইসলাম-তাসকিন আহমেদরা।
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। স্বাগতিকদের বড় লক্ষ্য ছুড়ে দিতে ৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেননি বাংলাদেশ সাকিব আল হাসান। কিন্তু সাকিব ও মুশফিকুর রহিম ছাড়া ব্যাটাররা এই সুযোগের সদ্ব্যবহারই করতে পারেননি। টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর সাকিব-মুশফিকের শতরানের জুটি। এরপর আবার খেই হারিয়ে ৩৮.৪ ওভারে ১৯৩ রানেই থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
ইমাম উল হকের ১৯তম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ১১তম ওয়ানডে ফিফটির সৌজন্যে খুব সহজেই ৩৯.৩ ওভারে বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করে পাকিস্তান। তাতে এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে পথটা মসৃণ করে রাখলেন বাবর আজমরা।
পাকিস্তানের ৩৫ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন শরীফুল। ফখর জামানকে ফেরান এই বাঁহাতি পেসার। এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরার আগে ২০ রান করেন এই বাঁহাতি ওপেনার। এরপর বাবরকে নিয়ে দ্রুতই রান তুলতে থাকেন আরেক ওপেনার ইমাম। তাদের দ্বিতীয় উইকেটজুটি থেকে আসে ৩৮ বলে ৩৯ রান।
বাবরকে ফিরিয়ে ব্রেকথ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। পাকিস্তানের ৭৪ রানে তাসকিনের ফুলার লেংথের বল ব্যাটে লেগে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন পাকিস্তানের অধিনায়ক। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা বাবর ফিরলেন ২২ বলে ১৭ রান করে। তৃতীয় উইকেটে ইমাম-রিজওয়ানের ১০৪ বলে ৮৫ রানের জুটিতে পাকিস্তানের জন্য জয়টা মাত্র কিছু সময়ের অপেক্ষার ব্যাপার হয়ে ওঠে।
জয় যখন ৩৫ রান দূরে, ৩৩তম ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজকে পরপর এক ছক্কা ও চার মেরে পরের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ইমাম। ৮৪ বলে চারটি ছক্কা ও পাঁচটি চারে ৭৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর আগা সালমান ও রিজওয়ান আর কোনো সুযোগ দেননি বাংলাদেশের বোলারদের। পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন দুজনে। রিজওয়ান অপরাজিত থাকলেন ৬৩ রানে আর সালমান ১২ রানে।
পাকিস্তানের পেসারদের তোপে দাগানো বোলিংয়ে ১১.২ ওভার আগেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। এশিয়া কাপে দ্বিতীয়বারের মতো ১০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখালেন পাকিস্তানের পেসাররা। হারিস রউফ ৪ উইকেট, নাসিম শাহ ৩ উইকেট, ফাহিম আশরাফ ও শাহিন শাহ আফ্রিদি একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
৪৭ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলের চাপ সামলানোর চেষ্টা করেছিলেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার সাকিব ও মুশফিক। এই জুটির সৌজন্যে ২০.১ ওভারেই ১০০ পার হয় বাংলাদেশ। তখনো মনে হচ্ছিল, স্কোরটা একদমই কম হবে না। পঞ্চম উইকেটে ১২০ বলে ১০০ রানের জুটি গড়েছিলেন দুজনে।
কিন্তু ১৪৭ রানে পাকিস্তানকে ব্রেকথ্রু এনে দিলেন চলতি এশিয়া কাপে প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়া ফাহিম আশরাফ। পুল করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ফখরের হাতে ধরা পড়েন সাকিব। ৫৭ বলে ৫৩ রানের ইনিংস খেলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৫৪তম ওয়ানডে ফিফটিতে ছিল সাতটি চারের বাউন্ডারি। পরে ৮৭ বলে ৬৪ রান করে ফেরেন মুশফিকও। এ ছাড়া মোহাম্মদ নাঈম করেছিলেন ২০ রান। মাত্র ২৭ ইনিংসে ওয়ানডেতে ৫০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখালেন রউফ।
১৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন হারিস রউফ।
ঠিকানা/এনআই