অতীতে সিলেট থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত মরহুম খন্দকার আব্দুল মালেকের সন্তান খন্দকার মুক্তাদির এবারও একই জেলার ১ নম্বর আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। প্রবাসী প্রচারণার অংশ হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন।
খন্দকার মুক্তাদির বলেন, “প্রবাসীরা এখনো দেশের টানে বাংলাদেশকে ভালোবাসেন। যে কারণে আপনাদের আলাপ-আলোচনা ও চর্চায় বাংলাদেশ সবসময় জীবন্ত। আমরা দেশকে নিয়ে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকে পরিকল্পনা নিয়েছি। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আমরা এখনও স্থিতিশীল হতে পারিনি। তাই ৫ আগস্টের ঘটনার পর আমরা রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে একমত হয়েছি যে, ভবিষ্যতে দলীয় সরকার নয়Ñশুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে।”

তিনি বলেন, “এখন থেকে প্রতিটি নির্বাচন হবে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। পার্লামেন্টে স্পিকার হবেন সরকারি দল থেকে, আর ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান হবেন বিরোধী দলের সদস্যরা।”
খন্দকার মুক্তাদির আরো বলেন, “ধরা যাক বিএনপি ক্ষমতায়। পাঁচ বছর পর নির্বাচনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পর বিএনপিও থাকবে ক্ষমতার বাইরে। অতীতে এই ব্যবস্থায় কখনো বিএনপি, কখনো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক সংকটে যেই সরকার বিদায় নিয়েছিল, তারাই এই ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়।”
তিনি বলেন, “এখন থেকে আজীবন একজন প্রধানমন্ত্রী থাকা যাবে না। সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে (প্রতি মেয়াদে পাঁচ বছর) প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ থাকবে। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের সেটআপও সরকার ও বিরোধী দলের ঐকমত্যে গঠিত হবে।”
সিলেটের প্রবাসী ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা আমাকে নির্বাচিত করলে ও বিএনপিকে বিজয়ী করলে আমরা জনগণের সরকার গঠন করব।” বক্তব্যের পর তিনি প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং বলেন, “বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় এলে সিলেটসহ দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে।”
বাংলাদেশ সোসাইটি, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন ও বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনুর সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল হোসেন খান, সাবেক সভাপতি বদরুন নাহান খাঁন মিতা, লিগ অব আমেরিকার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি বেদারুল ইসলাম বাবলা, অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন, তোফায়েল চৌধুরী, দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী, আহবাব চৌধুরী খোকন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির অন্যতম আয়োজক সিলেটের কৃতি সন্তান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লুর অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবাদ চৌধুরী।
নিউজার্সি বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির উদ্যোগে মতবিনিময়
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট জননেতা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির-এর সঙ্গে নিউজার্সিতে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির এক মতবিনিময় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নিউজার্সি বাংলাদেশি কমিউনিটি, ইউএসএ। সভায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, প্রবাসীদের ভূমিকা এবং বিএনপির ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির প্রবাসীদের সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতবিনিময় করেন এবং জাতীয় রাজনীতিতে প্রবাসীদের অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
মিশিগানে মতবিনিময় : যুক্তরাষ্ট্র সফররত বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের সঙ্গে মিশিগানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৯ অক্টোবর রোববার সন্ধ্যায় মিশিগান রাজ্যের হ্যামট্রামিক শহরের কনান্ট রোডে গেইট অব কলম্বাস হলে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিএনপি নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন মতাদর্শের প্রবাসী, সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং সাধারণ নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। হল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়, প্রবাসীদের উচ্ছ্বাসে মুখরিত ছিল পুরো পরিবেশ। মিশিগান বাংলাদেশি কমিউনিটির উদ্যোগে এ সভা অনুষ্টিত হয়। এসময় মঞ্চে আসীন হলে প্রবাসীরা তাকে ভালোবাসায় সিক্ত করে ফুলেল শুভেচ্ছা ও করতালিতে বরণ করে নেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে মতবিনিময় সভা শুরু হয়। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন ওয়াসিকুজ্জামান রনি।
খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকার গণতন্ত্র এবং গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। আগামীতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির মিশিগান প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। প্রবাসীরা বর্তমান রাজনীতি, সিলেটের বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করে তাকে প্রশ্ন করলে তিনি সাবলিলভাবে জবাব দেন। তার এ মত বিনিময় সভায় বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি তাকে আবেগ প্রবণ করে তোলে।
তিনি উপস্থিত সবাইকে বলেন, প্রবাসের এ নগর ব্যস্ততার মাঝেও যে আপনারা এসে আমাকে ভালবাসা দেখিয়েছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ, আপনাদের সকলের প্রতি আমার শুভেচ্ছা। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “আগামী নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে আমি একজন প্রার্থী সবার সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করছি। তিনি মিশিগানে স্থায়ী কনস্যুলেট অফিস স্থাপনের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে আশ্বাস দেন, এটি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেবেন।
সমাবেশ শেষে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুক্তাদির বলেন, “জুলাই আন্দোলনের সাথে যুক্ত রাজনৈতিক সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাই, ছোটখাটো বিষয় এড়িয়ে ‘জুলাই সনদে’ স্বাক্ষর করুন। প্রতীক বরাদ্দের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত।”

ঠিকানা রিপোর্ট


