ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, অংশগ্রহণমূলক এবং সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের নিয়ে সংলাপে বসেছে নির্বাচন কমিশন। আজ ২০ অক্টোবর (সোমবার) সকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ মতবিনিময় সভা শুরু হয়। ভোট প্রস্তুতির মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের নিয়ে এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ইসির প্রথম বৈঠক এটি। ভোটকেন্দ্র ও নির্বাচনি এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মতবিনিময় ও প্রাক প্রস্তুতির বিষয়ে এখানে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। সংলাপে চার নির্বাচন কমিশার, ইসি সচিব উপস্থিত রয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিসহ আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান ও প্রতিনিধিদের মধ্যে আছেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, সেনাবাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি লেফট্যানেন্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম, বিমানবাহিনীর প্রধানের প্রতিনিধি এয়ার ভাইস মার্শাল রুশাদ দিন আসাদ, নৌবাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান।
আরও আছেন এনএসআইয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবু মোহাম্মদ সরোয়ার ফরিদ, ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার ভিডিপি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়াল অ্যাডমিরাল মো. জিয়াউল হক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা, ঢাকার র্যাব হেডকোয়ার্টারের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, এসবির অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (প্রশাসন ও অর্থ) জি এম আজিজুর রহমান এবং সিআইডির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. ছিবগাত উল্ল্যাহ।
এআই, ড্রোন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ যা থাকছে আলোচনায়
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে প্রাক-প্রস্তুতিমূলক এ সভায় একগুচ্ছ আলোচ্যসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-
* ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও নির্বাচনি এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন
* আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর কর্মকাণ্ডে সমন্বয় সাধন ও সুসংহতকরণ
* সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা
* অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার রোধ ও নিয়ন্ত্রণ
* এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল ও মিথ্যা তথ্যের প্রচারণা রোধে কৌশল নির্ধারণ
* নির্বাচনে বিদেশি সাংবাদিক ও প্রাক পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা সহযোগিতা প্রদান
* পোস্টাল ভোটিং ব্যবস্থাপনা
* নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েনের পরিকল্পনা
* অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ন্ত্রণ
* অঞ্চল, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচন অফিসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
* পার্বত্য/দুর্গম এলাকায় নির্বাচনি দ্রব্যাদি পরিবহন এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের জন্য হেলিকপ্টার সহায়তা প্রদান
* গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতামত/পরামর্শের আলোকে শান্তিশৃঙ্খলা বিষয়ক কার্যক্রম গ্রহণ
* ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার নিষিদ্ধ করা
রোজার আগে ফেব্রুয়ারি প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজন করবে সাংবিধানিক এ সংস্থাটি। এ লক্ষ্যে আগামী ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
গেল ২৮ সেপ্টেম্বর নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে ‘সংলাপ পর্ব’ শুরু করে ইসি।
এরপর ৬ অক্টোবর গণমাধ্যম প্রতিনিধি এবং ৭ অক্টোবর নারী নেত্রী ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংলাপ করেছে।
ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয়ভাবে অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করছে। তাতে বিরাজমান আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, ভোটের পরিবেশ ও ইসির শক্ত ভূমিকা নেওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। এ ধারাবাহিক সংলাপের মধ্যে এবার আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে সংলাপ শুরু হল।
ঠিকানা/এসআর