আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন(ইভিএম) ব্যবহার হচ্ছে না। ভোট হবে পুরোনো ব্যালট পদ্ধতিতে। অন্যদিকে ৪০ হাজার ইভিএম স্ক্র্যাপ করে লোহালক্কড় হিসেবে বিক্রি করা হবে।সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকায় কেনা দেড় লাখ ইভিএম অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। ৪০ হাজার ইভিএম স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়েছে। অবহেলা ও অযত্নের কারণে ইভিএমগুলো ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) দায়ী। মাঠপর্যায়ে চটের বস্তা আর নোংরা জায়গায় ইভিএমগুলো সংরক্ষণ করা হয়। তাছাড়া মেশিনগুলো উপযুক্তভাবে ভোটে ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে, অনেক ইভিএমের নম্বর প্লেটও মুছে গেছে। কিছু ইভিএমের ভেতরে পানি ঢুকেছে। এ ছাড়া উইপোকা ও তেলাপোকা নষ্ট করেছে অনেক মেশিন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, কমিশনের হাতে বর্তমান ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম রয়েছে। তবে এগুলো এখন ব্যবহারের উপযোগী নয়। এসব ইভিএম ব্যবহারের উপযোগী করতে ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকার প্রয়োজন। বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে এসব মেশিন মেরামত করে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হবে। অন্যদিকে ৪০ হাজার ইভিএম মেরামত করে আর সচল করা যাবে না। এগুলো ইভিএম হিসেবে বিক্রি করাও সম্ভব নয়। অচল এসব মেশিনের দেশে-বিদেশে ক্রেতা নেই। নির্বাচন কমিশন চেষ্টা করেছিল এগুলো বিক্রির। ক্রেতা না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। কমিশন চিন্তা করছে ব্যবহারের অনুপযোগী ইভিএমগুলো স্ক্র্যাপ করে লোহালক্কড় আকারে বিক্রি করার। এতেও কয়েককোটি টাকা পাওয়া যাবে। বর্তমান অচল মেশিনগুলো সচল করা সম্ভব নয় বলে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি থেকে পরীক্ষা করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যবহারের অনুপযোগী ইভিএম মেশিনগুলো রাখতেও স্থান সংকট হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনে কোনো রকমে এগুলো ফেলে রাখা হয়েছে।
এদিকে ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেশিন মেরামত করে সচল করার জন্য নির্বাচন কমিশন সরকারের কাছে ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা চেয়েছে। সরকারের ওপর যাতে চাপ না পড়ে, সে জন্য নির্বাচন কমিশন দুই কিস্তিতে অর্থ ছাড় করতে বলেছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছে কমিশন অর্ধেক টাকা বাকি রাখার কথা বলেছে। মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি তাতেও রাজি হয়েছে। তারা বলেছে, তাদেরকে অন্তত ছয় মাস সময় দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে অর্ধেক পরিমাণ অর্থও দ্রুত ছাড় করতে হবে। কারণ এ জন্য প্রচুর পরিমাণ যন্ত্রপাতি, মালামাল ক্রয় করতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ না পাওয়ায় নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিকে টাকা দিতে পারেনি। তারা কাজও শুরু করতে পারেনি। এ অবস্থায় মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির পক্ষে নির্বাচনের আগে সবগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী মেশিন সচল করা সম্ভব হবে না।