Thikana News
১৯ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

সনদের আইনি ভিত্তির দাবিতে মঞ্চের সামনে জুলাই যোদ্ধাদের অবস্থান

সনদের আইনি ভিত্তির দাবিতে মঞ্চের সামনে জুলাই যোদ্ধাদের অবস্থান ছবি : সংগৃহীত



 

সনদের আইনি ভিত্তির দাবিতে সংসদ ভবন এলাকায় প্রবশে করে অবস্থান নিয়েছেন জুলাই যোদ্ধারা। ১৭ অক্টোবর (শুক্রবার) সকাল ১০টা ২৫ মিনিট দক্ষিণ গেটের ওপর দিয়ে প্রথমে প্রবেশের চেষ্টা করেন প্রায় ৫ শতাধিক বিক্ষুব্ধ। পরে ফটক খুলে দেন দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্যরা। মূল মঞ্চের সামনে গিয়ে জড়ো হন তারা। 

 

এ সময় বিক্ষোভ করতেও দেখা যায় জুলাই যোদ্ধাদের। মঞ্চ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের শান্ত হয়ে আসন গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। মূল মঞ্চ এবং অতিথিদের জন্য নির্ধারিত স্থানে বসে পড়েন জুলাই যোদ্ধারা।

 

জুলাই যোদ্ধাদের অভিযোগ, তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের খোঁজ নেয়া হয়নি। জুলাই সনদে তাদের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।  

 

তাদের দাবি, ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা যাতে মঞ্চের সামনে এসে তাদের দাবি দাওয়া শোনেন।

 

বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের। এতে উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

 

চব্বিশের দীর্ঘতম মাস জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরই দাবি ওঠে পুরো কাঠামো আমূল সংস্কারের। রাষ্ট্রীয় সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয় ১৫ ফেব্রুয়ারি। প্রথম পর্যায়ে চলতি বছরের ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৩২টি দল ও জোটের সঙ্গে কমিশনের মোট ৪৪টি বৈঠক হয়। যাতে ১৬৬টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ৬২টির বিষয়ে ঐক্য হয়। দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে সংবিধান সংশ্লিষ্ট মৌলিক ১৯টি সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়, যার ১০টিতেই নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।

 

ছয়টি সংস্কার কমিশনের যে ৮৪টি প্রস্তাব নিয়ে জুলাই জাতীয় সনদ, তার মধ্যে ৪৭টি বিষয়কে ‌‌‘সংবিধান সংশোধন সাপেক্ষে সংস্কার’ এবং বাকি ৩৭টি বিষয়কে ‘আইন/অধ্যাদেশ, বিধি ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংস্কার’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ঐকমত্য কমিশন। জুলাই সনদের পটভূমি ব্যাখ্যা করে সংস্কারযজ্ঞ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম তুলে ধরার পর সংস্কারের ৮৪ দফা তুলে ধরা হয়েছে ৪০ পৃষ্ঠার সনদে।

 

গত ৩১ জুলাই সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ হয়। কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরে ঐকমত্য কমিশন সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলো ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে। ৯ অক্টোবর এই আলোচনা শেষ হয়। আলোচনায় গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নে ঐকমত্য হয়।

 

তবে বিপত্তি বেধেছে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে। এ নিয়ে ছয়টি বৈঠকেও সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি কমিশন। গত ১৪ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাতে ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই জাতীয় সনদের যে চূড়ান্ত কপি পাঠিয়েছে, তার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবে অধিকাংশ দলই একমত হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রস্তাবের বিষয়ে ভিন্নমত রয়ে গেছে। জুলাই জাতীয় সনদে সেগুলো যুক্ত করা হয়েছে ‘নোট অব ডিসেন্ট’সহ।

 

এই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, সেই বিষয়ে আলাদা করে কোনো সুপারিশের কথা উল্লেখ করা হয়নি জুলাই সনদে। যদিও জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত যেসব সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো কোনো প্রকার কালক্ষেপণ না করে দ্রুততম সময়েই বাস্তবায়ন করবে অন্তর্বর্তী সরকার।

 

সনদ স্বাক্ষরের আগে চূড়ান্ত ঐকমত্যে পৌঁছাতে ১৫ অক্টোবর (বুধবার) সন্ধ্যায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ‘অতি জরুরি’ বৈঠক ডাকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি এই কমিশনের প্রধান। শুক্রবার রাজনৈতিক দলগুলো উৎসবমুখর পরিবেশে জুলাই সনদ স্বাক্ষর করবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

 

কিন্তু সনদ স্বাক্ষরের অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অন্যথায় তারা স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়েছে। নির্বাচনের আগেই গণভোট এবং পিআর পদ্ধতি নিয়ে অনড় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা দলগুলো। তবে সনদ স্বাক্ষর করার ইঙ্গিত দিয়েছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো।

 

ঠিকানা/এএস


কমেন্ট বক্স