Thikana News
১৫ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

উৎসবমুখর পরিবেশে চাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে

উৎসবমুখর পরিবেশে চাকসু  নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে



 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ ১৫ অক্টোবর (বুধবার) স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনের ১৫টি ভোটকেন্দ্রে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়। যা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে।

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আজ সপ্তম বারের মত অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন হচ্ছে। তিন যুগেরও বেশি সময় পর শিক্ষার্থীদের হাতে ভোটাধিকার ফিরে আসায় পুরো ক্যাম্পাসে উত্সবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।  
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও আগ্রহ। তপসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনি প্রচারণার শেষ দিন পর্যন্ত প্রার্থীরা শাটল ট্রেন, একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রচারণায়। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেয়ে গেছে লিফলেট, পোস্টার আর ইশতেহারে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২৭ হাজার ৫১৬ জন শিক্ষার্থী ভোটদানের জন্য যোগ্য, এর মধ্যে ৯টি ছাত্র হলে ১৬ হাজার ১৮৪ জন এবং ছয়টি ছাত্রী হলে ১১ হাজার ৩৩২ জন ভোটার রয়েছেন। চাকসু ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৯০৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চাকসুতে ২৬ পদের বিপরীতে ৪১৫ জন এবং হল সংসদে বিভিন্ন পদের জন্য ৪৯৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ২৪ জন প্রার্থী ইতিমধ্যে জয়লাভ করেছেন।

এবার নির্বাচনে ১২টি প্যানেল লড়ছে। সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ২৪ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২২ জন এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হল কাউন্সিল নির্বাচনে ভিপি পদে ২৬ জন, জিএস পদে ২৮ জন এবং এজিএস পদে ৩০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ছয়টি ছাত্রী হলে ভিপি এবং এজিএস পদে ১২ জন করে প্রার্থী এবং জিএস পদে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বমোট ১ হাজার ২০০ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গোপন ভোটকক্ষ ছাড়া বাকি সব জায়গায় থাকবে সিসি ক্যামেরা। পাশাপাশি প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের সামনে থাকবে এলইডি স্ক্রিন, যাতে শিক্ষার্থীরা সরাসরি পরিস্থিতি দেখতে পারেন। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থাও থাকবে। এমনকি কমিশন চাইলে সিসিটিভি ফুটেজ সরাসরি সম্প্রচারও করতে পারে। এছাড়া শহর থেকে ক্যাম্পাসমুখী অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের পরিবহনে ১৫টি বাস যোগ করা হয়েছে। এছাড়া শাটল ট্রেনের শিডিউল বৃদ্ধি করে ৯ জোড়া থেকে ১১ জোড়া করা হয়েছে।

ভোটগ্রহণের জন্য আবাসিক হলের পরিবর্তে পাঁচটি অনুষদ ভবনকে নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব ভবনে ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলসহ মোট ১৫টি ভোটকেন্দ্র হবে এবং ৬০টি ভোটকক্ষ থাকবে। এর মধ্যে শহিদ হৃদয় তরুয়া ভবনে শাহ জালাল হল, এ এফ রহমান হল ও আলাওল হল, সায়েন্স ফ্যাকাল্টিতে শাহ আমানত হল, শহিদ আব্দুর রব হল ও মাস্টার দা সূর্য সেন হল, আইটি ফ্যাকাল্টিতে সোহরাওয়ার্দী হল, বিবিএ ফ্যাকাল্টিতে প্রীতিলতা হল, বিজয় ২৪ হল, শহীদ ফরহাদ হল ও অতীশ দীপঙ্কর হল এবং সমাজবিজ্ঞান ফ্যাকাল্টিতে নবাব ফয়জুন্নেসা হল, অতীশ দীপঙ্কর, শামসুন্নাহার ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়া হলের ভোটাররা ভোট দেবেন।

এবারের নির্বাচনে ১২টি প্যানেল অংশ নিলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তিন প্যানেলে। শিক্ষার্থীদের মতামত ও নির্বাচনি মাঠের তথ্য অনুযায়ী ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের মধ্যে মূল প্রতিযোগিতা হবে। তবে নির্বাচনকে ঘিরে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এবার একটি বড় ফ্যাক্টর হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রায় ১১ হাজার নারী ভোটার এবার প্রথম বারের মতো সরাসরি ভোট দিচ্ছেন, যা সামগ্রিক ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

চবি নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে থাকবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, সিসিটিভি ক্যামেরা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কমিশনার জানিয়েছেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের নেতৃত্ব বেছে নেবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৭০, ১৯৭২, ১৯৭৪, ১৯৮১, ১৯৯০ সালসহ এ পর্যন্ত মোট ছয় বার চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স