Thikana News
২১ নভেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
মাঠে নামছেন কোকোর স্ত্রী শর্মিলা

ভোটের আগেই মুক্তি পাচ্ছেন খালেদা জিয়া!

ভোটের আগেই মুক্তি পাচ্ছেন খালেদা জিয়া! ফাইল ছবি
নূরুল ইসলাম : ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর কূটনীতিকেরা সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন। দ্বাদশ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তারা দফায় দফায় আরো বৈঠক করবেন। তারা চাচ্ছেন জাতীয় নির্বাচনের আগে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টি করতে। এ পরিস্থিতিতে বিএনপিকে নির্বাচন কমিশনের আস্থায় আনতে বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে। ভোটে অংশগ্রহণ করতে বিএনপির ওপর বিদেশি কূটনীতিকেরা চাপ প্রয়োগ করছেন। সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমঝোতার কথাও বলছেন তারা। আন্দোলন করে সংঘাত তৈরি না করতে বিদেশিরা কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএনপিকে। তাই আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিয়ে রাখছে বিএনপি। সারা দেশে ৩০০ আসনের বিপরীতে প্রার্থী ঠিক করে রাখছে। প্রাথমিক মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে গোপনে অনেক কাজই এগিয়ে রেখেছে দলটি।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি, নির্বাচনের আগে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পেতে পারেন-সরকার থেকে এমন একটি ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। আইনি জটিলতার কারণে হয়তো তিনি প্রকাশ্যে মাঠে নামতে পারবেন না। কিন্তু ভোটের মাঠ চাঙা রাখার জন্য জিয়া পরিবারের একজন সদস্যকে প্রয়োজন হবে। দলের গ্রহণযোগ্যতার তালিকায় রয়েছেন বড় ছেলে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। কিন্তু দুজনই সাজাপ্রাপ্ত আসামি। বিএনপি কখনো নেতৃত্বে আসার আগ পর্যন্ত এসব রাজনৈতিক মামলা থেকে তাদের মুক্তির কোনো সম্ভাবনা নেই। বিকল্প হিসেবে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথিকে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠে দেখা যেতে পারে। খালেদা জিয়া দলে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত ২১ মার্চ মধ্যরাতে লন্ডন থেকে ঢাকায় ফেরেন শর্মিলা রহমান সিঁথি। বর্তমানে তিনি গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজাতেই অবস্থান করছেন। সেখানে দলের হাইকমান্ডসহ শর্মিলার সঙ্গে অনেক রাজনৈতিক নেতাই বৈঠক করছেন।
তবে দলের হাইকমান্ডের এমন মনোভাবকে স্থায়ী কমিটির একাংশ ভালো চোখে দেখছে না। তারা বলছে, বিএনপি যদি এবারও কারও প্রেসক্রিপশনে ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তাহলে তৃণমূলে ভাঙন তৈরি হবে। বিদেশিদের আহ্বানে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আবারও শেখ হাসিনাকে বৈধতা দেওয়া ছাড়া আর কিছুই মনে করছে না তারা। বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রগুলো বলছে, আরেকটি নাটকীয় নির্বাচনের জন্য সরকার সব ধরনের আয়োজন সম্পন্ন করেছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ড. কামাল হোসেনের ঐক্যের মাধ্যমে সংলাপ ও ভোটপূর্ব নীতিকর্ম শেষ করে। এবার হাবিবুল আউয়াল কমিশনের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র করছে। কয়েকটি স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএমে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ায় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে সরকার ইভিএম পলিসি থেকে সরে আসে। ব্যালটে ভোট হলে অতীতের মতো গভীর রাতে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করার সুযোগ থাকবে। সরকার তার নিজস্ব পলিসিতে আগাম ভোটেরও সব ধরনের আয়োজন প্রায় শেষ করেছে। এখন ইসির মাধ্যমে সংলাপ সংলাপ নাটক করছে।
দলটির কেউ কেউ শঙ্কা করছেন, হয়তো বিএনপি সংলাপেও যেতে পারে। গত ২৩ মার্চ বিএনপিকে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার জন্য চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে বিএনপি বলছে, ইসির প্রস্তাবিত আলোচনায় অংশ নেবে না তারা। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, আগে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, পরে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিএনপির সংলাপ হতে পারে। এদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফেরত যেতে পারবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন লাঞ্চের দাওয়াত দিয়েছিল। সেখানে বলেছি, সংবিধান অনুযায়ী আমরা কেয়ারটেকার সরকারে ফেরত যেতে পারব না।’ তবে নির্বাচন কমিশন বলছে, বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়া জাতীয় নির্বাচন তেমন গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই ইসি বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে আবারও সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে। সরাসরি না হলেও বিএনপি ভার্চুয়ালি সংলাপে অংশ নিতে পারবে বলেও ইসির চিঠিতে জানানো হয়। বিএনপিকে পাঠানো অনানুষ্ঠানিক চিঠির জবাবের জন্য নির্বাচন কমিশন একটা সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বলে জানিয়েছেন ইসি মো. আলমগীর।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাব না। এ সরকারের সঙ্গে কোনো সংলাপেও বসব না। সংলাপ করে অতীতে কোনো ফলাফল আসেনি। এ দেশের মানুষের সমর্থন নিয়েই বারবার নেতৃত্ব দিয়েছি। ভোটে অংশগ্রহণ করেছি। একটি রাজনৈতিক দলের ভোটের প্রস্তুতি থাকবে-এটিই স্বাভাবিক। তবে দলে এখনো পর্যন্ত এ সরকারের অধীনে নির্বাচন নয় বলেই সিদ্ধান্ত রয়েছে।’
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে গিয়ে লাভ কী? সরকার জোর করেই সব নিয়ে নেবে। বিএনপি তো বলেছে এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যতীত এ সরকারের অধীনে আর নির্বাচনে যাবে না। আমাদের দলের চেয়ারম্যান তারেক রহমান অবশ্যই এ বিষয়ে আরো নির্দেশনা দেবেন।’
 

কমেন্ট বক্স