Thikana News
২৭ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫


ডিম ►ক্ষোভ প্রকাশে সস্তা কিন্তু শক্তিশালী মাধ্যম

ডিম ►ক্ষোভ প্রকাশে সস্তা কিন্তু শক্তিশালী মাধ্যম



 
ডিম-দৈনন্দিন জীবনের এক সহজলভ্য খাবার। কিন্তু রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনের মঞ্চে বহুবার এটি রূপ নিয়েছে প্রতীকী অস্ত্রে। ক্ষোভ প্রকাশ, প্রতিবাদ কিংবা বিদ্রƒপÑসব ক্ষেত্রেই ইতিহাসে ডিম ছোড়া এক অনন্য দৃষ্টান্ত রেখে গেছে।
কথিত আছে, মধ্যযুগে অপরাধীদের শাস্তি হিসেবে তাদের ওপর ডিম নিক্ষেপ করা হতো। লিখিত ইতিহাসে প্রথম নথিভুক্ত ঘটনা পাওয়া যায় আঠারো শতকে, আয়েল অফ ম্যান দ্বীপে মেথোডিস্ট ধর্মগুরুদের বিরুদ্ধে। ১৮৩৪ সালে মার্কিন কবি জর্জ হোয়াইটার দাসত্ববিরোধী বক্তৃতা দেওয়ার সময়ও ডিম নিক্ষেপের শিকার হন।
রাজনীতির মাঠে বড় বড় নেতারাও এ ‘প্রতীকী অস্ত্র’ থেকে রক্ষা পাননি। ১৯১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিলি হিউজ জনসভায় ডিমের আঘাতে আহত হন। ২০০১ সালে ব্রিটেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী জন প্রেসকটের গায়ে ডিম লাগলে তিনি নিজেই প্রতিক্রিয়া দেখান, যা মুহূর্তেই বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়ে ওঠে। ২০০৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর প্রার্থী আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার প্রচারণার সময় ডিম নিক্ষেপ থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান। ২০০৪ সালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ ডিম আঘাতে হাসপাতালে ভর্তি হন। ২০১১ সালে আফগানিস্তানে তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ইরানি কনস্যুলেটের দিকে ডিম নিক্ষেপ করা হয়।
২০১৩ সালে ফরাসি কৃষকেরা ডিমের দাম বাড়ানোর দাবিতে প্রতিদিন সড়কে লাখ লাখ ডিম ভাঙেন। একই বছরে লন্ডনে একদল বিক্ষোভকারী প্রয়াত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের অন্ত্যেষ্টিতে ডিম নিক্ষেপের হুমকি দিয়েছিল।
কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু গেলম্যানের মতে, ডিম বা খাবার ছোড়া অহিংস প্রতিবাদের কার্যকর উপায়। তার ভাষায়, খাবার সস্তা, সহজলভ্য এবং ফেটে গেলে দৃশ্যমান ক্ষতি করে। এটি পুলিশের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে না গিয়েও প্রতিবাদের বার্তা পৌঁছে দেয়।
ডিম ছোড়ার এই ইতিহাস বলে দেয়-খাবার শুধু পেট ভরানোর উপকরণ নয়, কখনো কখনো এটি মানুষের ক্ষোভ, অপমান আর প্রতিবাদের সবচেয়ে স্পষ্ট প্রতীক হয়ে ওঠে।

কমেন্ট বক্স