জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে। এতে জড়িত মূলত আওয়ামী লীগের প্রবাসী নেতাকর্মীরা। অথচ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে সেখানে গিয়েছেন এনসিপির এই নেতা। আওয়ামী লীগের হেনস্থা থেকে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নায়ককে সুরক্ষা দিতে পারেনি দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তাই নিউ ইয়র্ক কনস্যুলেটের সব কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার দাবি তুলেছে এনসিপি। দলটির এই ‘ক্ষিপ্ত’ প্রতিক্রিয়া ‘অস্বাভাবিক’ কিছু নয় বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা।
ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘ অধিবেশনে আসা বাংলাদেশে সরকারের প্রতিনিধিদের সার্বিক বিষয় দেখছে জাতিসংঘের স্থায়ী মিশন। আর প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হলেও ভিসা ক্যাটাগরির পার্থক্যের কারণে রাজনৈতিক নেতারা ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার পাননি। এই কারণে বিপত্তি ঘটে- দাবি করেন তিনি।
২৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার এই টকশোতে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন ভয়েজ বাংলার সম্পাদক মোস্তফা ফিরোজ। নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) এই অনুষ্ঠান সরাসরি দেখা গেছে ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউব চ্যানেলে। নিউইয়র্কে ঢাকার রাজনীতির উত্তাপ, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি, দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পরিস্থিতি- এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেন দুই অতিথি।
নিউইয়র্কে এনসিপি নেতাদের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন ভয়েজ বাংলার সম্পাদক মোস্তফা ফিরোজ। তবে তিনি বলেন, ক্ষোভ-বিক্ষোভের অংশ হিসেবে ডিম ছোড়া, জুতা ছোড়ার ঘটনা পশ্চিমা বিশ্ব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে দেখে না। এগুলো সেখানে প্রায়ই ঘটে থাকে। সে হিসেবে সেখানে বাংলাদেশি রাজনীতিকদের পাথর মারা হয়নি, অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়নি। ডিম ছোড়াকে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেই দেখতে হবে।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ আরো যোগ করেন, রাজনীতিতে পাল্টাপাল্টি স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু জাতিসংঘ অধিবেশনে যাওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিদের সব দল যদি স্বাগত জানাতো, সেটা দেখতে সবচেয়ে ভালো লাগতো। সেটা ঘটেনি, ঘটেছে বিপরীত ঘটনা। তবে এনসিপি নেতাকে হেনস্থার মাধ্যমে দেশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ যে রাজনৈতিকভাবে কিছু অর্জন করলো সেটাও নয়, তাদের আরো ক্ষতি হলো- মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের প্রতিনিধিরা যুক্তরাষ্ট্রে ভিভিআইপি নিরাপত্তা পাবেন, কিন্তু রাজনৈতিক সফরসঙ্গীরা তা পাবেন না, এটা তো আগেই জানা থাকার কথা, সেভাবে ভেবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? এমন প্রশ্ন করেন ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীন। এর জবাবে প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা বলেন, প্রতিনিধি দলে রাজনৈতিক নেতারা শেষদিকে এসে যুক্ত হয়েছেন। সেই কারণে হয়তো খতিয়ে দেখা হয়নি। ঘটনা ঘটার কারণে মানুষ এখন সমালোচনা করবে, এটাও যৌক্তিক। তবে নিউ ইয়র্কে আওয়ামী লীগ ‘সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ড করতে পারে, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সব নিরাপত্তা সংস্থাকে আগেই তথ্য দিয়ে রাখা হয়েছিল, দাবি করেন তিনি।
প্রবাসী আওয়ামী লীগ আখতারদের যখন হেনস্থা করছিল, তখন তাদের সুরক্ষায় প্রবাসী বিএনপি ও এনসিপির কেউ এগিয়ে আসেনি কেন- এমন প্রশ্ন সামনে আনেন ভয়েজ বাংলার সম্পাদক মোস্তফা ফিরোজ। তিনি বলেন, জামায়াতের নেতাকে নিয়ে দলটির নেতাকর্মীরা ভালোভাবে বেরিয়ে গেলেন। তারাও আখতারদের পাশে থাকলেন না, এটাও একটা খটকা- মন্তব্য করেন তিনি।
ঠিকানা/এএস


ঠিকানা রিপোর্ট


