বর্তমান সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান তৈরি করতে হবে- এই দাবি নিয়ে জুলাই আন্দোলন হয়নি। সেই আন্দোলন হয়েছিল হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে। এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে এসে তিনি আরো বলেন, চব্বিশের ৫ আগস্ট দেশে কোনো বিপ্লব হয়নি। সামরিক আইন জারি হয়নি। নব্বইয়ের মতোই একটি গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। তাই বিএনপি চায় নির্বাচিত সংসদ এসে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবে। এর বিকল্প কিছু আসলে নেই। যারা এখনি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অযৌক্তিক দাবি করছে তাদের আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিএনপি- যোগ করেন আজিজুল বারী হেলাল।
১৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার এই টকশোতে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন আপিল বিভাগের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) এই অনুষ্ঠান সরাসরি দেখা গেছে ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউব চ্যানেলে। ছাত্ররাজনীতি, ছাত্রসংসদ নির্বাচন, জুলাই সনদ, জাতীয় নির্বাচন, সংবিধান- চলমান রাজনীতির এসব বিষয়ে আলোচনা করেন দুই অতিথি।
ঐক্যমত কমিশন জুলাই সনদ তৈরিতে কাজ করছে। এই কমিশনে গিয়ে বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতি করছে, এমন অভিযোগ সামনে আনলেন জামায়াত ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয় আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনে বিএনপি ইতিবাচক কোনো আলোচনাই করতে চায় না। তারা রাষ্ট্র সংস্কার পাশ কাটাতে চায়। জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি দিতে রাজি নয়। বিএনপির এই অবস্থান জুলাই আন্দোলনের যে ‘স্পিরিট’, জনগণের যে অভিপ্রায়, তার পরিপন্থী বলে মনে করেন তিনি।
তবে বিএনপি নয়, জামায়াতই জুলাই সনদ ঘিরে জটিলতা তৈরি করছে- দাবি করেন বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। তিনি বলেন, একদিকে কমিশনের আলোচনায় অংশ নিচ্ছে, অন্যদিকে পিআর পদ্ধতির দাবিতে রাস্তায় নামতে চায় জামায়াত- এটা দ্বিমুখী নীতি। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দিতে চায় না পতিত আওয়ামী লীগ। এখন জামায়াতও আবার নির্বাচন বানচালের হুমকি দিচ্ছে। আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের দাবি করছে। এটা হলে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে। এমন কিছু হলে এর দায় কিন্তু জামায়াত এড়াতে পারবে না- সতর্ক করে বলেন তিনি।
বিএনপি নেতা আজিজুল বারী হেলাল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাতের রাজনীতি বিগত সময়েও করেছে জামায়াত। ডাকসু-জাকসুতেও ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগের যৌথ প্রযোজনার নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু ছাত্রদল কখনোই গুপ্ত রাজনীতি করেনি। তাই তারা মাত্র এক বছর ধরে ক্যাম্পাসে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। এই সীমাবদ্ধতার জন্য ভোটের ফল কাঙ্খিত হচ্ছে না। ছাত্রদল যদি বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ও স্বতন্ত্রদের সঙ্গে জোট করতে পারতো তাহলে ফলাফল নিজেদের দিকে নিতে পারতো। শিবির কিন্তু সরাসরি নিজেদের নামে প্যানেল দিয়ে নির্বাচন করেনি। তাই ডাকসু-জাকসুতে জয় তাদের, এটা বলাও ঠিক নয়, মনে করেন তিনি।
ছাত্রসংসদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রেই শিবিরের প্যানেল অনেক এগিয়ে ছিল, বলছেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, যারা বিজয়ী হয়েছে তাদের শুধু শিবিরের লেন্স দিয়ে দেখলে হবে না। তারা লেখাপড়ায়ও ভালো। তারা ছাত্রদের জন্য কল্যাণকর অনেক কাজ করেছে। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সৃজনশীলতার পরিচয় দিতে পেরেছে। তাদের প্যানেল অন্তর্ভূক্তিমূলক ছিল। এসব বিষয় শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
ঠিকানা/এএস