ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না। আরও নির্দিষ্ট করে বললে ভারতের সামনে পাত্তাই পেল না পাকিস্তান, রীতিমতো উড়িয়ে দিল। দুবাইয়ে তাদের ৭ উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে এক পা দিয়ে রাখল সূর্যকুমার যাদবের দল। ১২৮ রানের লক্ষ্য ২৫ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে যায় ভারত।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে লক্ষ্য তাড়ায় নেমে আক্রমণাত্মক শুরু করেন ভারতের দুই ওপেনার অভিষেক শর্মা ও শুবমান গিল। বড় ইনিংস যদিও খেলতে পারেননি কেউ, তবে সহজ করে দেন পথটা।
সায়েম আইয়ুবের ক্যারম বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন গিল (১০)। অভিষেক আউট হওয়ার আগে ১৩ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৩১ রান। বাকিটা পথ তিলক ভার্মা (৩১) ও শিভাম দুবেকে (১০*) নিয়ে পাড়ি দেন সূর্য। ১৬তম ওভারে সুফিয়ান মুকিমের পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে বিজয়ের তিলক আঁকেন তিনি। ৩৭ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪৭ রানে অপরাজিত থেকে শেষ করেন ইনিংস।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে যেন ব্যাটিংটাই ভুলে যায় পাকিস্তান। ইনিংসের শুরুটা ওয়াইড দিয়ে করলেও প্রথম বৈধ বলে উইকেট তুলে নেন হার্দিক পান্ডিয়া। তার আউটসুইং ডেলিভারিতে মারতে গিয়ে যশপ্রীত বুমরাকে দিয়ে ক্যাচের অনুশীলন করান পাকিস্তানের ওপেনার সায়েম আইয়ুব। এর আগে ওমানের বিপক্ষে ম্যাচেও গোল্ডেন ডাক উপহার দেন তিনি।
পরের ওভারে দেখা গেল বিপরীত দৃশ্য। এবার বুমরার বলে ক্যাচ নেন পান্ডিয়া। সাজঘরে ফেরেন ৫ বলে ৩ রান করা মোহাম্মদ হারিস।
শুরুর এই ধাক্কা আর কাটিয়ে ওঠার সাহস পায়নি পাকিস্তান। তবে সাহিবজাদা ফারহান যা করলেন, তা অবাক করার মতো। বুমরাকে ছক্কা মেরেছেন তিনি। একবার নয় দুবার; আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এর আগে পাকিস্তানের কোনো ব্যাটারই ছক্কা মারতে পারেননি বুমরাকে। ৪০০ বলের অপেক্ষা শেষে সেই দুঃখ ঘোচান সাহিবজাদা। কিন্তু তিনি বা অন্য কোনো ব্যাটারও পরে আর আক্রমণাত্মক হতে পারেননি।
পাওয়ার প্লের পর পাকিস্তানের রানের টুঁটি চেপে ধরেন ভারতের স্পিনাররা। অষ্টম ওভারে ফখর জামানকে (১৭) ফেরান অক্ষর প্যাটেল। পরের ওভারে অধিনায়ক সালমান আলী আগাকে শিকারে পরিণত করেন তিনি। ১২ বল খেলে মাত্র ৩ রান করেন সালমান। প্রথম ১০ ওভারে সব মিলিয়ে পাকিস্তান ডট খেলেছে ৩১টি। রান করতে পারেনি ৪৯ এর বেশি।
বাকি ১০ ওভারে কুলদীপের ভেলকির সামনে আরও দাঁড়াতে পারেনি পাকিস্তান। ১৩তম ওভারে পরপর দুই বলে হাসান নওয়াজ ও মোহাম্মদ নওয়াজকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান বাঁহাতি এই স্পিনার। থিতু হয়ে থাকা ফারহানও তার কাছে পরাস্ত হতে বাধ্য হন পরে। ৪৪ বলে ১ ছক্কা ও ৩ চারে ৪০ রানে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার।
শেষ দিকে শাহিন শাহ আফ্রিদি ও সুফিয়ান মুকিমের চেষ্টায় রান ছাড়িয়ে যায় তিন অঙ্ক। মূল ব্যাটারদের যেন দেখিয়ে দিচ্ছিলেন কীভাবে ব্যাটিং করতে হয়। মুকিম ৬ বলে ১০ রান করে থামেন। তবে ১৬ বলে ৪ ছক্কায় ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন শাহিন। তার এই ইনিংসে অলআউট হওয়ার লজ্জা এড়ায় পাকিস্তান।
ভারতের হয়ে ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন কুলদীপ। এ ছাড়া বুমরা ও অক্ষরের শিকার দুটি করে উইকেট। একটি করে নেন পান্ডিয়া ও বরুণ চক্রবর্তী।
ঠিকানা/এনআই