স্কোরবোর্ডে কোনো রান জমা না হতেই নেই বাংলাদেশের ২ উইকেট। আর প্রথম ৫ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১৬। অন্যদিকে প্রথম ৫ ওভারে শ্রীলঙ্কা তুলেছে ১ উইকেটে ৫৫ রান। প্রথম ১০ ওভারে দুই দলের স্কোর যথাক্রমে—৫৪/৫ ও ১০৭/১। এরপর ম্যাচে কারা জিততে যাচ্ছে—সেটি বোঝাই যাচ্ছিল। দেখার ছিল একটাই, কত ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ, কত ব্যবধানে জেতে শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপের একপেশে এই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা (১৪০/৪) ৩২ বল হাতে রেখে জিতেছে ৬ উইকেটে।
শ্রীলঙ্কার এই জয়ে বাংলাদেশের সুপার ফোরে যাওয়ার পথ জটিল হয়ে উঠল। এই রাউন্ডে খেলার আশা জিইয়ে রাখতে হলে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে হারাতেই হবে আফগানিস্তানকে।
১৩৯ রানের পুঁজি নিয়ে জিততে হলে লঙ্কান ইনিংসের শুরুতেই শরীফুল-মোস্তাফিজদের তুলে নিতে হতো কয়েকটি উইকেট। কিন্তু তা হতে দেননি লঙ্কান ব্যাটাররা। দলীয় ১৩ রানে চমৎকার এক বলে মোস্তাফিজ ব্যক্তিগত ৩ রানে কুশল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে দিলেও দ্বিতীয় উইকেটে ৫২ বলে ৯৫ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ থেকে বাংলাদেশকে কার্যত ছিটকে ফেলেন ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কামিল মিশ্র। ১০৮ রানে এই জুটি ভাঙলেও আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি লঙ্কানদের। আউট হওয়ার আগে ৬টি চার ও ১টি ছয়ে ৩৪ বলে ৫০ করেছেন নিশাঙ্কা। মিশ্র শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৪৬ রানে। বল হতে ২টি উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে তোলে ১৩৯ রান। টি-টোয়েন্টিতে এটি একটি মামুলি স্কোর। তবে যে দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে ইনিংসের শুরু, তাতে দূরতিক্রম্য হবে না জেনেও এই স্কোরটা বিরুদ্ধ স্রোতে দাঁড়িয়ে জাকের আলী অনিক, শামীম হোসেন পাটোয়ারীর লড়াইয়ের গল্পই বলে!
প্রথম ১০ বলে দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমনের বিদায়। দলের স্কোরে তখন কোনো রানই জমা পড়েনি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম দলীয় শূন্য রানে বিদায় নিলেন দুই ওপেনার। ইনিংসের ১৩তম বলে এসেছে প্রথম রান। শূন্য রানে ২ উইকেট হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই দলীয় ১১ রানে ফিরে যান তাওহীদ হৃদয় (৮)। এরপর ৩৮ রানে মেহেদী হাসান (৯) এবং ৫৩ রানে যখন অধিনায়ক লিটন দাসও (২৮) বিদায় নিলেন, মনে হয়েছিল, ব্যাটিং লাইনআপের হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ার সেই পুরোনো ভিত বোধ হয় ফিরে এল!
কিন্তু সেটি হতে দেননি জাকের আলী অনিক ও শামীম হোসেন পাটোয়ারী। বিরুদ্ধ স্রোতে দাঁড়িয়ে লড়াই করে ৬১ বলে ৮৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছেন তারা, যা এই সংস্করণে এই উইকেটজুটিতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ। আর তাতেই বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ১৩৯। ৩৪ বলে ৪১ করেছেন জাকের আলী। ২টি চার আছে তার ইনিংসে। আর সমান বলে ৩টি চার ও ১টি ছয়ে ৪২ রান করেছেন শামীম। বল হাতে ২৫ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
ঠিকানা/এনআই