রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানোর ঘটনা নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করেছে হেফাজতে ইসলাম। ইসলামে লাশ পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা থাকার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি সংগঠনটি এও বলছে, স্থানীয় জনতার ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান।
হেফাজতের বিবৃতিতে বলা হয়, ইসলামে লাশ পোড়ানো নিষিদ্ধ। এটি মানবিক মর্যাদার প্রশ্ন। ইসলাম-প্রদত্ত এই মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। ফলে নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানো নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য কাজ। একটি অন্যায় রোধ করতে গিয়ে আরেকটি অন্যায় করার সুযোগ নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রশাসন নুরাল পাগলার ব্যাপারে যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি বলেই এমন সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হতে পেরেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে হেফাজত।
গতকাল শুক্রবার গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা নুরাল পাগলার লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয়। হামলায় পুলিশ সদস্যসহ অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন এবং নিহত হন একজন।
হামলার এই ঘটনা নিয়ে হেফাজতের শীর্ষ দুই নেতার বিবৃতিতে বলা হয়, কাবার আদলে ১২ ফুট উঁচু নুরাল পাগলার মাজার ও বেদি নির্মাণ, নিজেকে ইমাম মাহাদী দাবি ও নিজস্ব কালেমার প্রচলন ইত্যাদি শরিয়তবিরোধী কর্মকাণ্ড নিয়ে অনেক দিন ধরে রাজবাড়ীর স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। নুরাল পাগলার পরিবারকে স্থানীয়রা নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেও বিফল হন। এমনকি নুরাল পাগলার এসব অপকর্ম রোধে একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে তারা বৈঠক করে স্মারকলিপি দেন এবং সংবাদ সম্মেলনও করেন। এতে তাদের ধৈর্যের পরিচয় পাওয়া গেলেও প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে ক্ষুব্ধ স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা নুরাল পাগলার কথিত কাবার আদলে তৈরি কবর ভেঙে লাশ তুলে পুড়িয়ে দেয়।
হেফাজতের আমির ও মহাসচিব বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষার ক্ষেত্রে সরকার ও প্রশাসন প্রায়ই করিতকর্মার পরিচয় দেয়। বাম ও প্রগতিশীল ঘরানাও খুবই সরব থাকে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এলে তাদের সব সময় নিষ্ক্রিয় ও নীরব দেখা যায়। এই বৈষম্য ইসলামবিদ্বেষপ্রসূত বলে মনে করেন তারা।
ঠিকানা/এনআই


ঠিকানা অনলাইন


