Thikana News
৩০ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫


রাজশাহীতে মাইকে স্লোগান দিয়ে খানকা ভাঙচুর

রাজশাহীতে মাইকে স্লোগান দিয়ে খানকা ভাঙচুর ছবি সংগৃহীত



 
রাজশাহীর পবায় একটি খানকায় হামলা-ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের পানিশাইল চন্দ্রপুকুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

খানকাটির নাম হক বাবা গাউছুল আজম মাইজভান্ডারি গাউছিয়া পাক দরবার শরিফ। স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুর রহমান ভান্ডারি প্রায় ১৫ বছর আগে বাড়ির পাশে নিজের জায়গাতেই এই খানকা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি তার ভক্তদের কাছে ‘পীর’ হিসেবে পরিচিত।

জানা যায়, খানকায় ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তিন দিনের আয়োজন ছিল। সেখানে ভান্ডারি ও মুর্শিদি গান হয়। এ নিয়ে ওই এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শুক্রবার জুমার নামাজের পর দুই গাড়ি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে ছিলেন পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম। তবে হামলার সময় পুলিশ নীরব ছিল।

হামলার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, দেড় শতাধিক লোক খানকাটি আক্রমণ করেন। তারা টিন দিয়ে ঘেরা ওই খানকায় মুহুর্মুহু আঘাত করেন। দূর থেকেই এর শব্দ শোনা যায়।

তবে হামলার সময় বাড়ি থেকে বের হননি খানকার ‘পীর’ আজিজুর রহমান ভান্ডারি। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই এলাকার কিছু লোক আমাদের অনুষ্ঠানে বাধা দিচ্ছিল। অনুষ্ঠান বন্ধ করতে গত রাতে তারা পবা থানায় গিয়েছিল। পুলিশের সঙ্গে কী আলাপ হয়েছে জানি না। জুমার নামাজের পর তারা একত্রিত হয়ে খানকা শরিফে হামলা চালায়। ভক্তরা আমাকে বাড়ি থেকে বের হতে দেয়নি। তাই তারা আমার বাড়ি লক্ষ্য করেও ইট-পাটকেল ছুড়েছে।’

আজিজুর রহমান ভান্ডারি দাবি করেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য গোলাম মোস্তফা এতে নেতৃত্ব দেন। তার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরাও ছিলেন। তারা হামলার সময় মাইকে ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন।

থানায় কোনো অভিযোগ করবেন না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশ ছিল, ডিবি ছিল, ওসি নিজেই ছিলেন। সেখানে তারা রক্ষা করেন না, অভিযোগ করব কার কাছে?’

আজিজুর রহমান ভান্ডারি বলেন, ‘আমি অভিযোগ করব না। আমি মানবধর্ম করি, আমার কাছে সবাই আসে। সবাইকে মাফ করে দিলাম। আল্লাহও যেন তাদের মাফ করে দেন। তারা ভেঙে খুশি হয়েছে, হোক।’

অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমাকে গত রাতে থানায় ডেকেছিল। সে জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু আজ হামলার সময় আমি ছিলাম না। পরে এসে শুনছি যে এমন ঘটনা ঘটেছে।’

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী হোসেন বলেন, ‘গোলাম মোস্তফা বিএনপির পুরোনো লোক। তিনি এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন কি না, তা আমার জানা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘খানকা ভাঙার দরকার কী? যার যেটা বিশ্বাস, সে সেটা করবে। বিএনপি হলেও কারও ছাড় নেই।’

জামায়াতের পবা উপজেলার আমির আযম আলী বলেন, ‘আমাদের দলের লোকের কাজ নাই তো, তারা গেছে খানকা ভাঙতে! আমরা নিজেদের কাজই করে শেষ করতে পারছি না।’

এ বিষয়ে পবা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গত রাতে থানায় অনেক মানুষই এসেছিল খানকার বিষয়ে। আমি সবাইকে শান্ত থাকতে বলেছিলাম। তার পরও একটু উৎকণ্ঠা থাকায় পুলিশ গিয়েছিল। পুলিশ একটু দূরেই ছিল। তখনই উত্তেজিত জনতা এটা করে ফেলে। মানুষ এত বেশি, অল্প কয়েকজন পুলিশের কিছু করার ছিল না। এখন কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে দেখা হবে।’

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স