দিনের শুরু যেমন হয়, তার প্রভাব পড়ে সারাদিনের কাজ ও মানসিকতায়। তাই সকালে কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে বাড়বে কর্মক্ষমতা, কমবে মানসিক চাপ, আর মনও থাকবে প্রফুল্ল। তবে এর জন্য জটিল বা সময়সাপেক্ষ কোনো রুটিনের দরকার নেই প্রয়োজন কেবল ধারাবাহিকতা আর সচেতনতা।
স্বাস্থ্যকর সকালের জন্য ১০টি অভ্যাস: সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা সকালে স্বাস্থ্যকর ১০টি অভ্যাস মেনে চলার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। এগুলো হলো:
১. সকালের অ্যালার্ম সেট করা: সকালে যথেষ্ট সময় পেতে চাইলে অ্যালার্ম কিছুটা আগে সেট করুন। তবে এর মানে রাতেও তাড়াতাড়ি শুতে হবে। অন্তত সাত ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করা জরুরি।
২. নতুন দিনের শ্বাস নিন: ঘুম থেকে উঠেই ফোনে হাত বাড়ানো এড়িয়ে চলুন। বরং ছয়বার গভীর শ্বাস নিন। এতে মন শান্ত হবে এবং শরীরও সতেজ থাকবে।
৩. কফির আগে পানি: ঘুমের সময় শরীর পানিশূন্য হয়ে যায়। তাই সকালে কফি উপভোগ করার আগে এক গ্লাস পানি পান করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে পানি খেলে মেটাবলিজম প্রায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
৪. শরীর নড়াচড়া করুন: ঘুম থেকে উঠেই সামান্য স্ট্রেচিং বা যোগব্যায়াম করলে শরীর সতেজ হয়। এতে সারাদিনের কাজের জন্য পেশি ও জয়েন্ট প্রস্তুত হয়।
৫. অল্প কিছু ব্যায়াম: পুরো ওয়ার্কআউট সম্ভব না হলেও দাঁত ব্রাশ করার সময় স্কোয়াট বা গোসলের আগে কয়েকটি পুশ-আপ করতে পারেন। এটাকে বলে হ্যাবিট স্ট্যাকিং অর্থাৎ নতুন অভ্যাসকে পুরোনো অভ্যাসের সঙ্গে যুক্ত করা।
৬. মনকে সঠিকভাবে প্রস্তুত করুন: কয়েক মিনিট মেডিটেশন করলে মন শান্ত হয় এবং দিনটা নতুনভাবে শুরু করা যায়। সবসময় মন সমানভাবে ভালো থাকে না। তবে প্রতিদিন এই অভ্যাস করলে দিনের শুরু থেকেই নিজের মনের নিয়ন্ত্রণ আপনার কাছে থাকবে।
৭. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ: সকালে কৃতজ্ঞতার তালিকা লেখা বা সূর্যোদয় দেখা মনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এতে সহমর্মিতা বাড়ে, বিরক্তি কমে।
৮. বিছানা গুছিয়ে নিন: দিনের শুরুতে ছোট একটি কাজ শেষ করার অনুভূতি আত্মবিশ্বাস জোগায়। ঘর পরিচ্ছন্ন থাকলে মনও ভালো থাকে।
৯. রুটিন মেনে চলুন: প্রথমে ভুল হলেও হতাশ হবেন না। নিয়ম ভাঙলেও পরেরদিন থেকে আবার শুরু করুন। ধারাবাহিকতা আসল বিষয়।
১০. আগেভাগে প্রস্তুতি নিন: রাতেই পরদিনের জামাকাপড়, নাশতা বা অফিস-স্কুলের লাঞ্চ গুছিয়ে রাখুন। এতে সকালে চাপ কমবে এবং নতুন অভ্যাস চালিয়ে যাওয়া সহজ হবে।
সকালের রুটিন শুধু দিনের শুরুর জন্য নয়, বরং পুরো জীবনযাত্রার মান উন্নত করার একটি ধাপ। ছোট ছোট পরিবর্তন যেমন পানি খাওয়া, বিছানা গোছানো বা অল্প সময় মেডিটেশন এগুলোই আপনাকে উৎপাদনশীল ও ইতিবাচক করে তুলবে।
ঠিকানা/এএস