Thikana News
২৭ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

গাজা আলোচনা থেকে প্রতিনিধি দল প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের

গাজা আলোচনা থেকে প্রতিনিধি দল প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। ছবি: এএফপি
গাজা যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে কাতারে চলমান আলোচনায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই (বৃহস্পতিবার) এক বিবৃতিতে জানান, হামাসের সর্বশেষ প্রস্তাবে ‘যুদ্ধবিরতির প্রকৃত আগ্রহ নেই’। এমন অভিযোগে আলোচনা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে এবং প্রতিনিধি দল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, তারাও আলোচনায় অংশ নেওয়া প্রতিনিধি দল কাতার থেকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। খবর আল জাজিরার। 

এদিকে হামাস জানিয়েছে, তারা উইটকফের মন্তব্যে বিস্মিত। এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, ‘আমরা আলোচনা অব্যাহত রাখতে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে গঠনমূলকভাবে অংশগ্রহণে আগ্রহী।’

এর আগে দিনটিতে কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হামাস আলোচনার একটি নতুন কাঠামোর প্রস্তাবের জবাব দেয়। ইসরায়েল নিশ্চিত করেছে যে তারা ওই প্রস্তাব পেয়েছে এবং তা পর্যালোচনার অধীনে রয়েছে, তবে কোনো পক্ষই বিস্তারিত প্রকাশ করেনি।
 
গাজার ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি এবং দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল ও হামাস  উভয়ের ওপরই আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় অপুষ্টিতে অন্তত ১১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অধিকাংশ মৃত্যুই সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ঘটেছে।

স্টিভ উইটকফ বলেন, ‘মধ্যস্থতাকারীরা অনেক চেষ্টা করেছে, কিন্তু হামাস আন্তরিকতা দেখাচ্ছে না। আমরা এখন বিকল্প পথ খুঁজব যাতে করে জিম্মিদের মুক্ত করা যায় এবং গাজার মানুষের জন্য স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা যায়।’

উল্লেখ্য, উইটকফ একজন ব্যবসায়ী, যার আগে কোনো আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল না। তিনি বলেন, “গাজায় যুদ্ধের অবসান চাওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কিন্তু হামাস স্বার্থপরতার পরিচয় দিচ্ছে।”

চলমান আলোচনায় যেই প্রস্তাব আলোচনায় ছিল, তা অনুযায়ী ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরিকল্পনা ছিল। এতে হামাস ১০ জন জীবিত জিম্মি এবং ১৮ জনের মরদেহ ফিরিয়ে দেবে। বিনিময়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেবে এবং গাজায় ত্রাণ প্রবাহ বাড়ানো হবে। এই সময়ের মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলবে।
তবে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে যুদ্ধবিরতির পর কী হবে। ইসরায়েল স্পষ্ট করেছে, তারা গাজায় দীর্ঘমেয়াদি সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনায় অটল এবং হামাসকে সম্পূর্ণ পরাজিত না করা পর্যন্ত যুদ্ধ থামাবে না।
এ মাসের শুরুতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ গাজায় একটি ‘মানবিক শহর’ গড়ে ফিলিস্তিনিদের সেখানে জোরপূর্বক স্থানান্তরের পরিকল্পনার কথা বলেন যেটিকে অনেকেই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও এই পরিকল্পনা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে, কারণ এটি যুদ্ধবিরতির পথ রুদ্ধ করতে পারে এবং গাজায় আটক থাকা জিম্মিদের মুক্তির সম্ভাবনাও ক্ষুন্ন করতে পারে।

ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক শিহাব রতনসি জানান, এখনো স্পষ্ট নয় এটি আসলেই আলোচনা শেষ নাকি একটি কৌশল মাত্র। তিনি বলেন, “এটি খুব কঠিন ভাষায় লেখা একটি টুইট, যেখানে ‘গাজার জনগণের জন্য স্থিতিশীল বিকল্প পরিবেশ’ তৈরির কথা বলা হয়েছে।”
রতনসি যোগ করেন, “আমরা জানি ট্রাম্প তথাকথিত ‘স্বেচ্ছা নির্বাসন’-এর পক্ষে কথা বলেছেন যা আদতে জাতিগত নির্মূলের সমান হতে পারে।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় কমপক্ষে ৫৯ হাজার ৫৮৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স