চিত্রনায়ক জায়েদ খানের ঠিকানা এখন নিউইয়র্ক। আর নিউইয়র্কের মিডিয়া হাউজ ঠিকানায় যোগ দিয়েছেন তিনি। ঠিকানা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে শুরু হয়েছে তার উপস্থাপনায় সেলিব্রেটি শো ‘ফ্রাইডে নাইট উইথ জায়েদ খান’। প্রথম পর্বে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশা।
নিউইয়র্কে ঠিকানার স্টুডিওতে ধারণকৃত এ অনুষ্ঠানটি গত ৫ জুলাই শুক্রবার সম্প্রচারের পর দেশ ও প্রবাসে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছি। এ পর্যন্ত এক লাখের বেশী দর্শক ইউটিউবে দেখেছেন অনুষ্ঠানটি। অন্যদিকে ঠিকানা নিউজের ফেসবুক পেজে অনুষ্ঠানটি এ পর্যন্ত দেখেছেন ৮ লাখ ৩৬ হাজার দর্শক। এর আগে এ অনুষ্ঠানের প্রমো ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ঠিকানা নিউজের ফেসবুক পেজে প্রমো দেখেছেন প্রায় ত্রিশ লাখ (৩ মিলিয়ন) দর্শক। অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারের পর দেশ ও বহির্বিশ্বে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।
‘ফ্রাইডে নাইট উইথ জায়েদ খান’ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অতিথি হিসাবে থাকছেন চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। প্রায় এক ঘণ্টার অনুষ্ঠানটি যে কোনো শুক্রবার ঠিকানা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত হবে। এই পর্বেও দর্শকের জন্য অনেক চমক থাকবে বলে জানিয়েছেন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও চিত্রনায়ক জায়েদ খান।
প্রথম পর্বেই ‘বাজিমাত’ প্রসঙ্গে জায়েদ খান বলেন, ‘আমার ১৭ বছরের ক্যারিয়ার। নিউইয়র্কে এটি আমার নতুন অভিজ্ঞতা। দারুণ অনুভূতি, যা বলতে পারবো না। দর্শকরা খুব ভালোভাবে আমাকে গ্রহণ করেছেন।’
ফেসবুক ও ইউটিউবে অনেকে সমালোচনা করে কমেন্টস করেছেন। তবে বেশিরভাগ কমেন্টেই জায়েদ খানের প্রশংসা করেছেন। এ প্রসঙ্গে জায়েদ খান বলেন, ‘১০০ জনের মধ্যে ৯০ জন আমার প্রশংসা করেছেন। সমালোচনা করেছেন ১০ ভাগ লোক।’ তিনি বলেন, ‘বদনাম তারই হয়, যার নাম আছে।’
অনুষ্ঠানের নির্বাহী প্রযোজক রুহিন হোসেন বলেন, দেশ ও প্রবাসের সেতুবন্ধ ঠিকানা। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। বহির্বিশ্বের জনপ্রিয় সংবাদপত্র ঠিকানা। তেমনিভাবে ঠিকানা ডিজিটাল ও ঠিকানা টিভিও জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করবে। ইতিমধ্যে ‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশো’ জনপ্রিয় হয়েছে। ‘ফ্রাইডে নাইট উইথ জায়েদ খান’ প্রথম পর্বেই ‘বাজিমাত’ করেছে। পরবর্তী পর্বেও চমক থাকবে বলে জানান রুহিন হোসেন।
প্রবাসে জায়েদ খানের নতুন অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে রুহিন হোসেন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘এই প্রবাসে জায়েদ খান আরো জনপ্রিয় হবেন তার কাজের মাধ্যমে।’
আলোচনায় তানজিন তিশা : ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বেশ কয়েকবার সমালোচনার মুখে পড়েছেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী তানজিন তিশা। তারই ধারাবাহিকতায় এবার খবরের শিরোনাম হলেন নতুন ইস্যুতে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বিয়ে ও বাচ্চা অস্বীকারের। ঠিকানা টিভির সেলিব্রেটি শো ‘ফ্রাইডে নাইট উইথ জায়েদ খান’ টকশোতে হাজির হয়ে মা হওয়ার ইচ্ছার কথা জানান তিশা।
জায়েদ খানের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এ অভিনেত্রী জানান, তিনি মা হতে চান। সেই কথার পরিপ্রেক্ষিতে লন্ডন প্রবাসী একজন সাংবাদিক তিশার সন্তানের ছবি দাবিতে কিছু ছবি প্রকাশ করেছেন। যা বেশ আলোড়ন ফেলেছে।
সম্প্রতি ওই সাংবাদিক ফেসবুকে তিনটি ছবি প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন, এটি তিশার সন্তানের ছবি। ছবিগুলো পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘সেলিব্রিটি হওয়ার পর মানুষ কি তার গর্ভের সন্তানকেও অস্বীকার করতে পারে।’ অভিনেত্রী তানজিন তিশা দাবি করেন, তার আগের বিয়ের খবর এবং পুত্রসন্তানের খবরগুলো মিথ্যা।
যে ছবিগুলো দেখছেন, সেগুলো তিশার মিডিয়ায় আসার আগে। তার সাবেক স্বামী এখন দুবাইতে বসবাস করেন। সেই ঘরে তিশার একটি পুত্রসন্তান হয়েছিল। সেই পুত্রের সঙ্গেই ছবিগুলো।
‘তিশার সেই পুত্রসন্তানটি এখন ঢাকায় তার দাদির সঙ্গে থাকে। তিশা জায়েদ খানকে মিথ্যা কথা বলেছেন। বছরখানেক আগে তানজিন তিশাকে নিয়ে স্টোরি করতে গিয়ে আমরা তার পুত্রসন্তান এবং সাবেক স্বামীকে খুঁজে বের করেছিলাম। তিশা আপনি প্রমাণ করেন, এই বাচ্চা আপনার ছিল না।’ সাংবাদিক নির্ঝরের করা সেই পোস্ট মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন তিশা। ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে অভিনেত্রী জানান, যে ছবিগুলো শেয়ার করা হয়েছে, সেটি তার ভাগনির। পোস্টে তিশা লেখেন, ‘অসভ্যদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ! যে অসভ্যরা আমার আদরের ভাগনে-ভাগনিকে নিয়ে তোলা ছবি; আমার লুকিয়ে রাখা সন্তান হিসেবে ভুঁইফোঁড় অনলাইন পোর্টালে নিউজ করে ২০ ডলার উপার্জনের জন্য! সেসব অসভ্যকে বলছি, এখন পর্যন্ত আমার লুকিয়ে রাখা যত বাচ্চাকাচ্চা আছে তাদের আমার কাছে পৌঁছে দিলে ২০ হাজার ডলার ভিক্ষা দেব। যদি বাচ্চাকাচ্চাগুলোকে আমার কাছে পৌঁছাতে না পারিস তো? নিজ গালে, নিজ উদ্যোগে, জুতা মার তালে তালে।’
এদিকে ‘ফ্রাইডে নাইট উইথ জায়েদ খান’ অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে এক প্রশ্নে উঠে আসে তিশার অতীতের এক তিক্ত অভিজ্ঞতা। জানতে চাওয়া হয়, কোনো সহকর্মীর আচরণে কখনো কষ্ট পেয়েছেন কিনা। জবাবে তিশা জানান, এক সিনিয়র সহকর্মী পুরস্কার না পেলে অনুষ্ঠানে অংশ না নেওয়ার হুমকি দেন, আর সেই চাপের মুখে কর্তৃপক্ষ তার প্রাপ্য একটি অ্যাওয়ার্ড বাতিল করে দেয়। ফোন করে জানানো হয়, ‘তুমি অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছ না।’
তানজিন তিশার এ মন্তব্য শো সম্প্রচারের পরপরই সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মন্তব্য করছেন, ইন্ডাস্ট্রির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি সম্পর্কে এক ঝলক চিত্র উঠে এসেছে তার কথায়।