বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করি, আমার কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে। তোমারও কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে এবং এটাই হচ্ছে উপযুক্ত একটা ডেমোক্রেসি। বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য যে বাংলাদেশে গণতন্ত্রটা চর্চা হয়নি, ওটা বোধহয় সম্ভবত লিগেসি অফ পাকিস্তান পলিটিক্স থেকে এটা এখানে হয়নি। আমরা এখানে দেখেছি খুব স্বল্প সময় ধরে কিছুটা চর্চা হয়েছিল। তারপরে আবার সেই চর্চা থেকে আমরা দূরে সরে গেছি। ৮ জুলাই (মঙ্গলবার) বাংলা একাডেমিতে “সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনালস-২০২৫”-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি এবং দ্য বাংলাদেশ ডায়ালগ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিতর্ক অনুষ্ঠানে মাননীয় শব্দের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমার দুই দলের বিতর্ক শুনে খুব ভালো লাগছিল। আমার একটা আপত্তি আছে। এই যে আপনার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আর মাননীয় স্পিকার কথাটা এটা কি আমরা বাদ দিতে পারি না? কেন যেন মনে হয় এই মাননীয় কথাটা থেকেই কিন্তু সমস্ত অটোক্রেসির জন্মটা।
১৯৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যুদ্ধের সময় আমি যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অত্যাচার টিকতে না পেরে ভারতে চলে গেলাম পশ্চিম দিনাজপুরের একটা সাবডিভিশনে।ওই সময়ে আমরা রাতে শোবো কোথায়, থাকবো কোথায়, খাবো কী, সবকিছুই সমস্যা ছিল। একজন সুরি দয়া করে আমাদেরকে একটা সাইকেল স্টোরের পেছনে জায়গা করে দিলেন। ওখানে দুইদিন পর বিকেলবেলা ওখানে একটা গাড়ি আসল, এম্বাসেডর ভারতীয় গাড়ি। তার উপরে একটা সিকিউরিটি লাইট বসানো গাড়ি থেকে নামলেন ধুতি পড়া এক বয়স্ক লোক। মাত্র একজন ব্যক্তি, তার হাতে সম্ভবত একটা বন্দুক ছিল গার্মেন্ট। আমি লক্ষ্য করে দেখলাম যে ভদ্র লোক বিহারের চিফ মিনিস্টার। এখানে কিছু বাংলাদেশ থেকে লোক এসছে যারা যুদ্ধ করছে তাদের সঙ্গে কথা বলতে তিনি এখানে এসেছেন। তার একজন দেহরক্ষী নিয়ে তিনি সেখানে এসে উপস্থিত হয়েছেন। আর আমাদের এখানে আমাদের যেই মন্ত্রী হয়ে গেল সেই সেই সম্পূর্ণভাবে ভিন্ন জগতে চলে গেল। তার স্যালিউট, তার গাড়ির সামনে একটা গাড়ি, পেছনে আরেকটা গাড়ি। এই যে মানসিকতাটা তৈরি হয় এই মানসিকতাটা আমাদের ধীরে ধীরে ওই ডিক্টেটরের দিকে নিয়ে যায়।
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা ১.৮৭ শতাংশ রাজনীতিতে আগ্রহীর একটা জরিপ দেখে সকালে মন খারাপ হয়ে গেছিলো। একখানে এসে আমরা আশা বেড়েছে। আমাদের তরুণরা আরো বেশি যোগ্য। তারা দেশ গঠনে বেশি ভুমিকা রাখতে পারবে।
তিনি বলেন, অনেকে বলেন যে এখানে কিছু হবে না। এটা সঠিক নয়। আমি অত্যন্ত আশাবাদী। অনেক কিছু হবে এবং বাংলাদেশে অবশ্যই আমরা মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারব।
ঠিকানা/এএস