প্রায় ১১ মাস পর সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলে মধ্যরাতে প্রকাশ্যে দেখা গেছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে। ভারতে পালিয়ে থাকা কাদের ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঠেকানোর হুমকি দিয়েছেন। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন ওবায়দুল কাদের। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় দুই দফা অডিও বার্তায় নিজের ‘বাথরুমে লুকিয়ে থাকার’ উদ্ভট কল্পকাহিনি শোনালেও এত দিন নিজের চেহারা দেখাননি তিনি। এই প্রথম ক্যামেরার সামনে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিলেন জুলাই গণহত্যার অন্যতম শীর্ষ এই অভিযুক্ত। তার এই ভিডিও বার্তা ঘিরে দেশে-প্রবাসে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। অনেকে তার এমন হুংকারে তাকে নিয়ে রীতিমতো ট্রল করছেন।
ভিডিও বার্তায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে কোনো বিশ্বাসযোগ্য, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। তারা নিজেরাও নির্বাচন দেবে কি না আমরা যথেষ্ট সন্দিহান।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের নামে আজকে তাদের যে অশুভ অ্যালায়েন্স, এই অ্যালায়েন্স সংস্কারের নামে গোটা জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। আজকে বিচারের নামে ক্যাঙ্গারু কোর্ট বসিয়ে প্রহসন করছে। এই ধারা আমরা গুঁড়িয়ে দেব। এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ চলবে। কাদের হুমকির সুরে বলেন, ‘বাংলাদেশে আজ অর্ধেকেরও বেশি ভোটার যে দলের সমর্থক, দিনে দিনে শেখ হাসিনার পক্ষে জনমত বাড়ছে, সেই দলকে বাদ দিয়ে এদেশে ইনক্লুসিভ বা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না। আমরাও হতে দেব না।’
বিশ্লেষকদের মতে, ওবায়দুল কাদেরের এই ভিডিও বার্তার পেছনে রয়েছে বেশ কিছু অ্যাজেন্ডা। প্রথমত, নির্বাচনকে ঘিরে জনমনে আতঙ্কের জন্ম দিতে চাচ্ছেন তিনি, যাতে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে আসতে ভয় পায়। দ্বিতীয়ত, দেশে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এটা বোঝানো যে ওবায়দুল কাদের নেতা হিসেবে তাদের পাশে আছেন; আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে চায়, হারিয়ে যায়নি। তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকদের এই বার্তা দেওয়া যে, আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়। চতুর্থত, নির্বাচনের সময় দেশব্যাপী বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের একজোট করা।