Thikana News
২৩ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

স্থগিত হতে পারে সংবিধান

স্থগিত হতে পারে সংবিধান
জুলাই বিপ্লবের এক বছর হয়ে গেলেও ফ্যাসিবাদের শেষ চিহ্ন এখনো মুছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। সংস্কার নিয়ে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি আসেনি। জুলাই সনদের ব্যাপারে ঐকমত্য এখনো দেখা যায়নি। জুলাই সনদ ঘোষণা করা যাবে কি না, তা নিয়ে     
স্থগিত হতে পারে সংবিধান রাজনৈতিক অঙ্গনেই সন্দেহ রয়েছে। সরকার ও কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, জুলাই মাসের প্রথম দিকেই ঘোষিত হতে পারে জুলাই ঘোষণা। এই ঘোষণায় ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সংবিধান পরিবর্তনের ওপর থাকবে বিশেষ গুরুত্ব। এর অংশ হিসেবে সংবিধান স্থগিত করা হতে পারে। একই সঙ্গে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পরিবর্তন ঘটতে পারে।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পরিবর্তন হলে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বিদায় নিতে পারেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার স্বার্থে তাকে প্রেসিডেন্ট পদে রেখে দেওয়া হয়। পরিবর্তনের ব্যাপারে দুটি সম্ভাবনার কথা নানা সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, সংবিধান স্থগিত করা হলে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের অনুরোধ জানানো হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নতুন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান হতে পারেন উপপ্রধান উপদেষ্টা। ফ্যাসিবাদ-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো থেকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নেওয়া হতে পারে। বর্তমান উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা ভালো পারফরম্যান্সের পরিচয় দিয়েছেন, তারাও উপদেষ্টা পরিষদে থাকতে পারেন।
অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনের স্থানে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে উপদেষ্টা হিসেবে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা স্থান পাবেন। বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের সফল উপদেষ্টারা পরিষদে স্থান পেতে পারেন। জাতীয় সরকার দায়িত্ব নিলে নতুন সংবিধান প্রণয়নের বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে। এ জন্য নির্বাচন কিছুটা বিলম্বিত করার প্রয়োজন হলে সেটি বিবেচিত হবে।
সূত্র জানায়, রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক পরিবর্তনে বিদ্যমান সংবিধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিবেচনায় ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার বিদায়ের পরই সংবিধান স্থগিত করা প্রয়োজন ছিল। বর্তমানে ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক শক্তি, দেশে বড় ধরনের নাশকতা ও অস্থিরতা ঘটানোর ষড়যন্ত্রের গোয়েন্দা তথ্য বিবেচনা করে সংবিধান স্থগিত ও জাতীয় সরকার গঠনের বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান কখনো অতীতের মতো নুরুল হুদা, হাবিবুল আউয়াল বা কাজী রকিব উদ্দিন মার্কা নির্বাচন করবেন না। তিনি ইতিমধ্যে বলেছেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এবং তা উদাহরণ হিসেবে থাকবে। রাজনৈতিক মহলে শোনা যাচ্ছে, ড. ইউনূস তা করতে না পেরেই পদত্যাগের কথা বলেছিলেন। এটিকে হুমকি হিসেবে দেখা হয়েছিল। কিন্তু নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সংবিধান স্থগিত করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তাই জুলাই বিপ্লবের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে সংবিধান স্থগিত করে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার নতুন করে তার দায়িত্ব শুরু করতে পারে।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ইমরান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক মনে করেন, ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পরই সংবিধান স্থগিত করে বিপ্লবী বা ঐকমত্যের সরকার গঠন করার ছিল মোক্ষম সময়। তবে জনগণের সর্বোচ্চ অভিপ্রায়ের ক্ষমতা সব সময় থাকে। আপাতদৃষ্টিতে সংবিধান স্থগিত করে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন করা কঠিন মনে হলেও বৃহত্তর জনগণের ঐকমত্যের ভিত্তিতে তা হতেই পারে।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট এ বিষয়টি নিয়ে সব পক্ষ একটা দোটানার মধ্যে ছিল। যে কারণে আমরা এখনো সংবিধান মেনেই চলছি। বিপ্লবোত্তর পরিবেশে তখন সংবিধান স্থগিত করে খুব সহজেই নতুন সরকার শপথ নিতে পারত। সেটি সম্ভবও ছিল। আমরা এখনো সংবিধান অনুসরণ করছি। সংবিধান স্থগিত বা স্ক্র্যাপ করা যায় না এটা যেমন ঠিক, তেমনি জনগণের সহজাত ক্ষমতার অধীনে কোনো সরকার সংবিধান স্থগিত করতেই পারে।

কমেন্ট বক্স