ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে দলটির পক্ষ থেকে ১৬ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। ২৮ জুন (শনিবার) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ‘মহাসমাবেশের ঘোষণাপত্র’ পাঠ করেন।
মহাসমাবেশকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ধিত অংশ ও আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে একটি গৌরবময় মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ঘোষণাপত্রে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা বাস্তবায়ন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং স্বৈরতন্ত্র রোধে আমাদের সংস্কার প্রস্তাবনাগুলো সক্রিয় বিবেচনায় নিতে হবে।
ঘোষণাপত্রে উত্থাপিত ১৬ দফা দাবিসমূহ হলো-
১. সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ রাষ্ট্র পরিচালনার মূল নীতিরূপে পুনঃস্থাপন।
২. সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন।
৩. জুলাই সনদের ঘোষণা ও শোষণমুক্ত রাষ্ট্র বিনির্মাণে জাতীয় ঐকমত্য।
৪. ভবিষ্যৎ স্বৈরাচার ও দলীয় কর্তৃত্ববাদ রোধে মৌলিক রাষ্ট্র সংস্কার।
৫. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনে ফ্যাসিবাদী প্রভাবমুক্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
৬. পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার ও পলাতক অপরাধীদের ফিরিয়ে আনার কূটনৈতিক পদক্ষেপ।
৭. পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার ও দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ।
৮. সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও খুন-খারাবি রোধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা।
৯. ভারতের সঙ্গে করা সব চুক্তি প্রকাশ ও দেশবিরোধী চুক্তির বাতিল।
১০. জাতীয় নির্বাচনের আগে সব পর্যায়ে স্থানীয় নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান প্রণয়ন।
১১. দুর্নীতিবাজ, ঋণ-খেলাপি ও সন্ত্রাসীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
১২. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিবেশ নিশ্চিত করা।
১৩. ঘুষ-দুর্নীতি ও রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।
১৪. ইসলাম ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ববিরোধী কর্মকাণ্ডে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ।
১৫. জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজদের প্রতিহত করা।
১৬. রাষ্ট্রের সর্বস্তরে ইসলামের আলোকিত আদর্শ বাস্তবায়নের আহ্বান।
মহাসমাবেশের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় সকাল ১০টা থেকে, যেখানে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন। দুপুর ২টা থেকে মহাসমাবেশের মূল পর্ব শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি রেজাউল করীম চরমোনাই পীর।
মহাসমাবেশে উপস্থিত ইসলামী আন্দোলনের একজন কেন্দ্রীয় নেতা তার বক্তব্যে বলেন, আজকের এই জনসমুদ্র প্রমাণ করে দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। তারা চায় এমন একটি নির্বাচন ব্যবস্থা যেখানে প্রতিটি ভোট মূল্যবান হবে এবং জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।
ঠিকানা/এএস