ভারতের সাবেক বাঁহাতি স্পিনার দিলীপ দোশী আর নেই। ২৩ জুন (সোমবার) যুক্তরাজ্যের লন্ডনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই পরিবারসহ লন্ডনে বসবাস করছিলেন ‘থিংকিং ক্রিকেটার’ হিসেবে পরিচিত এই খেলোয়াড়।
১৯৭০-এর দশকে ভারতের বিখ্যাত স্পিন ‘চতুষ্টয়’–এর (বিষেন সিং বেদি, এরাপল্লি প্রসন্ন, শ্রীনিবাসরাঘবন ভেঙ্কটরাঘবন, ভগবৎ চন্দ্রশেখর) পথ ধরেই জাতীয় দলে আসেন দোশী। এই স্পিনার ভারতের হয়ে খেলেছেন ৩৩টি টেস্ট, নিয়েছেন ১১৪টি উইকেট। পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ছয়বার। ওয়ানডেতে ১৫টি ম্যাচ খেলে মাত্র ৩.৯৬ ইকোনমি রেটে উইকেট নিয়েছেন ২২টি।
১৯৭৯ সালে চেন্নাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩২ বছর বয়সে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল তার। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন সৌরাষ্ট্র, বেঙ্গল, ওয়ারউইকশায়ার এবং নটিংহামশায়ারের হয়ে। ইংল্যান্ডে খেলার সময় কিংবদন্তি গ্যারি সোবার্সের কাছ থেকে পেয়েছিলেন প্রভাব ও অনুপ্রেরণা।
তবে সবচেয়ে বেশি স্মরণীয় হয়ে থাকবে ১৯৮১ সালের মেলবোর্ন টেস্টে তার কীর্তি।
ম্যাচের আগে আঙুল ভাঙা, ব্যথায় কাতর হলেও হাল ছাড়েননি তিনি। প্রতিদিন খেলা শেষে আঙুলে ‘ইলেকট্রোড’ ব্যবহার করে ফোলাভাব কমিয়ে মাঠে নেমে গিয়েছিলেন আবারও। ফল? ঐতিহাসিক সেই ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়ে ভারতকে এনে দেন জয়।
দোশী বরাবরই পরিচিত ছিলেন এক ‘বুদ্ধিদীপ্ত’ স্পিনার হিসেবে। ২০০৮ সালে ইএসপিএনক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘স্পিন বোলিং একরকম বুদ্ধির লড়াই।
’ তার আত্মজীবনীমূলক বই স্পিন পাঞ্চ-এ উঠে এসেছে তার ক্রিকেট-জীবনের অনেক অজানা অধ্যায়। আশির দশকে ক্রিকেট থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেন দোশী। কারণ হিসেবে জানিয়েছিলেন, ভারতীয় ক্রিকেটের ‘চলমান ধারা’ নিয়ে নিজের অসন্তুষ্টির কথা।
তার ছেলে নয়ন দোশীও ক্রিকেটার হয়েছেন। নয়ন ইংল্যান্ডের সারে এবং ভারতের সৌরাষ্ট্রের হয়ে খেলেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে।
ঠিকানা/এএস