দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জমা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এসময় দলটির প্রতীক হিসেবে শাপলা, কলম ও মোবাইল চেয়েছে এনসিপি। ২২ জুন (রবিবার) বিকেলে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ইসিতে আবেদন জমা দেয়।
আবেদনের আগে নির্বাচন কমিশনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী। তিনি জানান, নিবন্ধনের জন্য যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, তার সব কিছুই আমাদের প্রস্তুত আছে। কাগজপত্র এতটাই বেশি যে ট্রাকে করে নিয়ে আসতে হয়েছে। এখন আমাদের প্রতিনিধি দল ভেতরে গিয়ে সেগুলো জমা দেবে। তিনি আরও জানান, আবেদন জমার পর নেতাকর্মীরা শান্তভাবে অবস্থান নেবেন এবং পরে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন।
নির্বাচন কমিশনের শর্ত অনুযায়ী, একটি নতুন দলকে নিবন্ধনের জন্য কেন্দ্রীয় কার্যালয়, কার্যকর কমিটি, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সমর্থক সদস্য, গঠনতন্ত্র, নির্বাচনি ইশতেহার (যদি থাকে), ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ একাধিক নথিপত্র জমা দিতে হয়। এনসিপি দাবি করেছে, তারা সব শর্ত পূরণ করেই আবেদন করেছে। এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে নানা শর্ত জুড়ে দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তার মধ্যে অন্যতম হলো নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন। এই কমিশন গঠনের আইন, ‘পক্ষপাতমূলক আচরণ’ ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে দলটি। এমনকি বর্তমান কমিশনের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ারও কথা বলছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকেও আনুষ্ঠানিকভাবে এই কমিশনের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে এনসিপি। এ ছাড়া মৌলিক সংস্কার, বিচার, জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই সনদ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে নিজেদের দ্বিধার কথাও জানিয়েছেন তারা।
এদিকে তরুণদের নবগঠিত রাজনৈতিক দল এনসিপির সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত না হলেও নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ হিসেবে দেখছে জামায়াতে ইসলামী। অন্যদিকে কমিশন পুনর্গঠনের দাবিকে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে বিএনপি। ইসিও বলছে, তারা পুরোপুরি নিরপেক্ষভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। ইসি পুনর্গঠনের দাবিটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। এনসিপি নেতারা বলছেন, ২০২২-এর আইনের অধীনে এই ইসি গঠন করা হয়। তাদের দাবি, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নতুন ইসি গঠন করতে হবে। কমিশনের সদস্যরা নিরপেক্ষ নয় বলে মনে করেন তারা। নির্বাচনের আগে এই কমিশন পুনর্গঠন করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতারা।
ঠিকানা/এএস