ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি তার উত্তরসূরী হিসেবে তিন জ্যেষ্ঠ ইমামের নাম ঘোষণা করেছেন। খামেনি নিহত হলে এদের মধ্যে একজন ইরানের পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করবেন।
বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত তিন ইরানি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
সিএনএন জানিয়েছে, ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, সর্বোচ্চ নেতা মারা গেলে উত্তরসূরী বেছে নিতে ৮৮ সদস্যের ইমাম পরিষদের বিশেষজ্ঞদের বৈঠক ডাকতে হয়। ১৯৭৯ সালে দেশটিতে ইসলামিক বিপ্লব হওয়ার পর থেকে মাত্র একবার এ প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়েছে। ১৯৮৯ সালে ওই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই খামেনি সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচিত হন।
ইরানি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, খামেনি তার মৃত্যু হলে ক্ষমতা হস্তান্তর যেন দ্রুত, নিয়মতান্ত্রিকভাবে হয় তা নিশ্চিত করতে চান।
খামেনিকে হত্যা করার ইসরায়েলি একটি পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে খবর হয়েছে। গেল সপ্তাহে ট্রাম্প বলেছেন, ইরনের সর্বোচ্চ নেতা একটি ‘সহজ লক্ষ্য’।
মঙ্গলবার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেন, “কোথায় এই তথাকথিত ‘সর্বোচ্চ নেতা’ লুকিয়ে আছেন তা আমরা ঠিকই জানি। তিনি সহজ লক্ষ্য হলেও সেখানে নিরাপদ আছেন- আমরা তাকে সরিয়ে দিতে (হত্যা) যাচ্ছি না, অন্তত এখন না।”
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু খামেনিকে লক্ষ্যস্থল করার সম্ভাবনা বাতিল করেননি। তিনি বলেছেন, “খামেনিকে হত্যা করলে সংঘাত আরও বিস্তৃত হবে না, এটি বন্ধ করবে।”
একটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের এক হাসপাতালে আঘাত হানার পর বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ আরও আগ বাড়িয়ে ঘোষণা করেছেন, “খামেনিকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে না।”
যুদ্ধে ইসরায়েলের সঙ্গী হয়ে ইরানে সরাসরি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যোগ দেবে কি না সে বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। ইরান হামলায় ট্রাম্প যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে যুদ্ধ তীব্রতর হয়ে উঠবে আর বিস্তৃত পরিসরে তার পরিণতির জন্য দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে ওই ইরানি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে টাইমস।
টাইমস জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ইরানের শাসক শ্রেণির চেইন অব কমান্ড মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখনও কার্যকর আছে বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।
গত ১৩ জুন ইসরায়েল আচমকা ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করলে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি তেঁতে ওঠে। প্রথম দিকে ওয়াশিংটন এ হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা থেকে নিজেদের দূরে রাখার চেষ্টা করলেও ওই অঞ্চলে গত কয়েকদিনে যুক্তরাষ্ট্র বিপুল সংখ্যক যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে, বাড়িয়েছে নৌশক্তিও।
ট্রাম্প যদিও কী করবেন তা নিয়ে বিশ্বকে ধাঁধাঁয় রেখেছেন। তিনি কখনো বলছেন, কূটনৈতিক সমাধানের কথা, কখনো ইঙ্গিত দিচ্ছেন তেল আবিবের সঙ্গী হওয়ার।
ঠিকানা/এসআর