Thikana News
১৯ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

ইসলামপন্থীদের ভোট ‘এক বাক্সে’ আনার উদ্যোগ 

ইসলামপন্থীদের ভোট ‘এক বাক্সে’ আনার উদ্যোগ 



 
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে হবে- এমন আভাস  পাওয়ার পর দেশের ইসলামি দলগুলো তাদের তৎপরতা বাড়িয়েছে। ভেতরে ভেতরে চলছে নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি।
দলগুলোর সূত্র বলছে, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এরই মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ প্রায় ১০টি রাজনৈতিক দল এক টেবিলে বসেছে। গত কয়েক মাস ধরে ইসলামপন্থীদের ভোট ‘এক বাক্সে’ আনার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তার এ উদ্যোগে শামিল হয় আরও চারটি নিবন্ধিত ইসলামি দল। সেই দলগুলো হলো বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, নেজামে ইসলাম পার্টি ও ইসলামী খেলাফত মজলিস। এর আগে বরিশালে চরমোনাই পীরের সঙ্গে এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানও ইসলামপন্থীদের ভোট ‘এক বাক্সে’ আনার উদ্যোগে একমত হয়েছিলেন।
সূত্রমতে, আগামী নির্বাচনে ইসলামি দলগুলোর পক্ষ থেকে অভিন্ন তথা একক প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে প্রাথমিকভাবে একমত হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্তত ১০টি দল। বাকি দলগুলো হলো ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলনের দুটি অংশ, ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশ এবং নেজামে ইসলাম পার্টির দুটি অংশ। সমমনা কিছু দলও তাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রায় ৩৫ বছর পর পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি দল আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নে একসঙ্গে বসে। এর আগে ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের পর ‘ইসলামী ঐক্যজোট’ নামে ইসলামি দলগুলোর একটি জোট হয়। এখন এত বছর পর আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নে ইসলামি দলগুলোর একমত হওয়ার চেষ্টাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন অনেকে। তবে এ প্রক্রিয়ায় জামায়াতে ইসলামী থাকবে কি না বা তাদের রাখা হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। যদিও জামায়াতের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের বৈরিতা বর্তমানে অনেকটা কমে গেছে। আবার ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মধ্যেও খুব সখ্য ছিল না। এখন দুই দল কাছাকাছি এসেছে।
তবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও ইসলামী ঐক্যজোট- তাদের একটি অংশ বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ছাড়া মাজার, পীর, তরিকতপন্থী দল ও সংগঠন নিয়ে আলাদা জোট করে সব আসনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চিন্তা করছে পতিত আওয়ামী সরকারের সর্বশেষ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ‘বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট’। যদিও রাজনৈতিক অঙ্গনে দলটির তেমন কোনো অবস্থান নেই। অন্যদিকে জামায়াতকে নিয়ে নির্বাচনী সমঝোতার বিষয়ে হেফাজতে ইসলাম সংশ্লিষ্ট একটি অংশের কিছুটা পিছুটান বা আপত্তি আছে বলে জানা গেছে। তারা গোপনে জামায়াতবিরোধী তৎপরতা চালানোর চেষ্টা করছে। বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনে যাওয়ারও মত আছে ওই অংশের। তবে সামগ্রিকভাবে তাদের সেই বিরোধিতার কোনো প্রভাব সবার ওপর পড়বে না বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। কারণ এরই মধ্যে জামায়াতসহ প্রায় সব ইসলামি দল ও শীর্ষ আলেমদের নিয়ে সিরিজ বৈঠক হয়েছে।
এ বিষয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ জানান, আমিরে জামায়াত অনেকের সঙ্গে বৈঠক করছেন, কথা বলছেন, চরমোনাই পীরের বাসায় গেছেন। এসবের মাধ্যমে ঐক্যের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা সবার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছি। সবার সঙ্গে যোগাযোগ অনেক বেড়েছে, এটা অব্যাহত থাকবে।
ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, বর্তমানে আমাদের (ইসলামি দলগুলোর) কাছাকাছি আসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে জনগণের প্রত্যাশাও আছে। আমাদের চেষ্টা থাকবে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনটা যাতে করতে পারি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হলো বড় দলগুলোর প্রলোভন। তাদের কারণে ছোট দলগুলো বিকাশ হতে পারে না। এখন আমরা যদি নীতির ওপর অটল থাকতে পারি, তাহলে সুযোগ আছে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ জানান, তাদের মধ্যে কয়েক দফার বৈঠকে অনেক কিছু চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ২৫ জুন আরেকটি বৈঠকে প্রার্থী দেওয়ার কৌশল ও আসনভিত্তিক প্রার্থী ঠিক করা হবে।

কমেন্ট বক্স