মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক হাসান মনিমনেহ বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইরানের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে দুটি পরস্পরবিরোধী বক্তব্য প্রকাশ করেছে। এই দ্বৈত বার্তা মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
মনিমনেহ’র বিশ্লেষণ অনুযায়ী, প্রথম বক্তব্যটি হলো— আমেরিকা ‘শুধু (ইরানকে) আলোচনায় ফিরে আসার দাবি করছে’ ও ‘এই মুহূর্তে’ ইরানের ওপর আক্রমণ করার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। এটি কূটনৈতিক সমাধানের দিকে একটি ইঙ্গিত। তবে দ্বিতীয় বক্তব্যটি, যা ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে ‘টুকরো টুকরো ও স্পষ্ট কথা’র মাধ্যমে প্রচার করছেন বলে মনে হচ্ছে, তা হলো— আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরায়েলের সঙ্গে যোগসাজশ করছে।
মনিমনেহ আল জাজিরাকে বলেন, ট্রাম্প ‘ইসরায়েল যা করছে তার প্রশংসা করছেন। মনে হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
মনিমনেহ প্রশ্ন তুলেছেন, বাস্তবে কোন বক্তব্যটি সঠিক। তিনি বলেন, ‘স্পষ্টতই আমরা জানার অবস্থানে নেই। তবে কেবল দ্বিতীয় বক্তব্যটি তথ্য দ্বারা সমর্থিত বলে মনে হচ্ছে।’
মনিমনেহ আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি কল্পনা করা যায় না, যেখানে ক্ষতি করার ক্ষেত্রে ইরান যে ধরণের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে সফল হয়েছে তা আমেরিকা মেনে নেবে। অন্তত ইসরায়েলের কোনো ধরণের কর্মসূচি ধ্বংস করার ক্ষমতা তাদের নেই। কিন্তু চলমান যুদ্ধ থামতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না, যদি না কোনো ধরণের মার্কিন হস্তক্ষেপ—অথবা কোনো কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ না হয়।’
এই বিশ্লেষণ ইঙ্গিত দেয় যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে একটি বড় ধরনের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুন (বৃহস্পতিবার) ভোরে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি ও ইসলামিক রেভ্যুলিউশনারি গার্ডস কর্পসের (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামিসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানীও নিহত হয়েছেন। এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিশোধের হুমকি দেওয়া হয়। পরে ইরানের পক্ষ থেকে পাল্টা হামলা করা হয় ইসরায়েলে। এরপর থেকে দুই পক্ষই একে অপরের ওপরে হামলা অব্যাহত রেখেছে।
ঠিকানা/এসআর