মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চার দিনব্যাপী ৩৪তম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা আগামী ২৩ মে শুক্রবার থেকে জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারে শুরু যাচ্ছে। এবারের বইমেলার প্রধান  অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ‘ব্লকেড’ খ্যাত আমেরিকান বন্ধু ফিলিস টেইলর। 
বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান, সাহিত্য সমালোচক, দার্শনিক ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক, অধ্যাপক ড. রওনক জাহান এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন (অব.) সিতারা বেগম। 
বইমেলার শুভ উদ্বোধন করবেন এই সময়ের নন্দিত কবি ও ঔপন্যাসিক সাদাত হোসাইন।
এছাড়াও আমন্ত্রিত লেখকগণের মধ্যে থাকছেন ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার ড. আবদুন নূর, লেখক ও বিতার্কিক বিরূপাক্ষ পাল, কবি ও লেখক ড. আবেদীন কাদের, কবি শামসআল মমীন, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মুস্তাফিজ শফি, লেখক ও সাংবাদিক সরকার কবিরুদ্দীন, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, কবি জাফর আহমদ রাশেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামীম রেজা, কবি ও প্রাবন্ধিক বদরুজ্জামান আলমগীর, কবি জসিম মল্লিক, কবি ও সাহিত্য সম্পাদক ফারুক আহমেদ, কবি মঈনউদ্দিন মুনশী, লেখক ও সাংবাদিক অভীক সারোয়ার রহমান, লেখক ও প্রকাশক হুমায়ূন কবীর ঢালী, বিনোদন সাংবাদিক তানভীর তারেক, শিশুসাহিত্যিক আশিক মুস্তাফা এবং কথাসাহিত্যিক পারমিতা হিম প্রমুখ।
আমন্ত্রিত প্রকাশকদের মধ্যে থাকছেন মনিরুল হক (অনন্যা), আলমগীর সিকদার লোটন (আকাশ প্রকাশন), রেদওয়ানুর রহমান জুয়েল (নালন্দা), জসিম উদ্দিন (কথাপ্রকাশ), সজল আহমেদ (কবি প্রকাশনী), দীপঙ্কর দাশ (বাতিঘর) এবং মাহবুবুল হাসান ফয়সল (ঋদ্ধি প্রকাশন)। অন্যান্য অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা সংস্থাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সময় প্রকাশন, আহমদ পাবলিশিং হাউজ, অন্বয় প্রকাশ, প্রথমা প্রকাশন, অঙ্কুর প্রকাশনী, স্টুডেন্ট ওয়েজ, কাকলী প্রকাশনী, কালের চিঠি, শব্দঘর, পঞ্চায়েত, একুশে চেতনা পরিষদ, গ্লোবাল বাংলা মিশন, ইসলাম ইন্টারন্যাশনাল পাবলিকেশন্স ও মুক্তধারা নিউ ইয়র্ক। এই সকল প্রকাশনীর স্টলে কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, অনুবাদ, ভ্রমণ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের বই পাওয়া যাবে।
বইমেলাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও থাকছে লেখক-পাঠক মুখোমুখি আলোচনা, নতুন বই নিয়ে আলোচনা, স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর, কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও বিভিন্ন মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালা। আমন্ত্রিত শিল্পীদের মধ্যে থাকছেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, ফাহমিদা নবী, শাহ মাহবুব, কৃষ্ণা তিথি, স্বপ্নীল সজীব, মোহাম্মদ শাহীন হোসেন, কার্তিক চন্দ্র মন্ডল, উচ্ছল ব্যানার্জীসহ আরও অনেক স্বনামধন্য শিল্পী।
এছাড়াও থাকছে একুশে চেতনা পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্র-এর সৌজন্যে বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘অমর একুশ’। ভাষা-আন্দোলনের সচিত্র ইতিহাস (১৯৪৭-১৯৫৬)’। এই প্রদর্শনীর কিউরেটরের দায়িত্ব রয়েছেন ড. ওবায়দুল্লাহ মামুন।
নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা ২০২৫-এর আহ্বায়ক, বিশিষ্ট সাংবাদিক রোকেয়া হায়দার এবং মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাংলা ভাষাভাষী সকলকে এই আনন্দঘন মিলনমেলায় অংশ নিয়ে মাতৃভূমি ও মাতৃভাষার সঙ্গে একাত্ম হওয়ার জন্য আন্তরিক আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলন : বইমেলার প্রস্তুতি, কর্মসূচি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য গত ১৬ মে শুক্রবার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বইমেলার আহ্বায়ক এবং ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের সাবেক প্রধান রোকেয়া হায়দার। বর্তমানে তিনি মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে মেলার সার্বিক দায়িত্ব পালন করছেন। সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সিইও বিশ্বজিত সাহা।
অনুষ্ঠানে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন জিয়াউদ্দীন আহমেদ, কো-চেয়ারপারসন নজরুল ইসলাম ও সউদ চৌধুরী, উপদেষ্টা গোলাম ফারুক ভূঁইয়া এবং সিনিয়র সদস্য ওবায়দুল্লাহ মামুন বক্তব্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকেরা জানান, এ বছর বইমেলায় ২৫টির বেশি স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা অংশগ্রহণ করবে এবং ইতিমধ্যে লেখক ও প্রকাশকেরা নিউইয়র্কে এসে পৌঁছাতে শুরু করেছেন। প্রতিবছরের মতো এবারও বইমেলাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য লেখক-পাঠক-মুখোমুখি আলোচনা, নতুন বই নিয়ে আলোচনা, স্বরচিত কবিতা পাঠ, কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক, সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং বিভিন্ন মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। 
সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকেরা আরও বলেন, তিন দশকের বেশি সময় ধরে এই বইমেলা শুধু বইয়ের প্রদর্শনী নয়, এটি বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার এক শক্তিশালী ধারক ও বাহক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বক্তারা উল্লেখ করেন যে ১৯৯২ সালে ‘বাঙালির চেতনা মঞ্চ’ ও ‘মুক্তধারা নিউইয়র্ক’-এর যৌথ উদ্যোগে এই বইমেলার সূচনা হয়েছিল। পরে মুক্তধারা নিউইয়র্ক এবং তার পর থেকে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন এককভাবে এই বইমেলার দায়িত্ব পালন করে আসছে। এই সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন শহীদ পরিবারের সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, লেখক এবং তরুণ প্রজন্মের সাহসী প্রতিনিধিরা।
                           
                           
                            
                       
     
  
 

 ঠিকানা রিপোর্ট
 ঠিকানা রিপোর্ট  
                                
 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                
