Thikana News
৩১ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫





 

নির্বাচনী দোলাচল

নির্বাচনী দোলাচল





 
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। নির্বাচন কখন হবে, আগামী দুই আড়াই বছরের মধ্যেও হয় কি না, সে অনিশ্চয়তা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রবলভাবেই কাজ করছে। সরকারিভাবে সর্বশেষ আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলার পরই রাজনৈতিক মহলে নির্বাচন, নির্বাচনের তারিখ নিয়ে দ্বিধা, সংশয় বেড়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে ঘোষণা করা হয়েছে, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নতুন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিরোধীদের, বিশেষ করে দেশের রাজনৈতিক শক্তির মুখ্য প্রতিনিধিত্বকারী বিএনপি এবং তার সহগামীরা এতে আশ্বস্ত নন। তারা স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি করে আসছেন। কিন্তু বর্তমান সরকার এতে গুরুত্ব না দিয়ে নির্বাচন যতটা সম্ভব প্রলম্বিত করার নীতি অনুসরণ করে চলছে। সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের বিরোধ এতে প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে এবং সামনে তা শান্তিপূর্ণ, অহিংস না-ও থাকার আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। নির্বাচন দীর্ঘ সময়ের জন্য প্রলম্বিত হলে এবং রাজনৈতিক পরিবেশ-পরিস্থিতিতে শান্তি, স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হলে জাতীয় জীবনে তা কী ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে, তা নিয়ে শঙ্কিত রাজনীতিসচেতন ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দলগুলো।
বিএনপি দ্রুত নির্বাচন দাবি করলেও সরকার তা বিবেচনায় নিয়েছে বলে তাদের কর্মকাণ্ডে, কথাবার্তায়ও আভাস মিলছে না। অপর রাজনৈতিক শক্তির প্রতিনিধিত্বকারী জামায়াতে ইসলামীর দ্রুত বা স্বল্প সময়ে নির্বাচনের দাবিতে জোরালো অবস্থানে নেই। নির্বাচন প্রলম্বিত হলে তাদের আপত্তি নেই। রাজনৈতিকভাবে, বিশেষ করে নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক দল গুছিয়ে নেওয়া, প্রার্থী স্থির করা ও সব বিষয় চূড়ান্ত করার পক্ষে জনমত সংগঠিত করার সুযোগ পাবে তারা।
সুযোগের অপেক্ষায় আছে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট তরুণ শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত এই দল গভীরভাবে আশাবাদী সরকার হটাতে তারা যেমনি সফল হয়েছে, আগামী নির্বাচনে দেশের ভোটার সাধারণ তাদেরকেই বেছে নেবে। নির্বাচন প্রবলম্বিত করার সুযোগে দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন। ব্যাপক সাংগঠনিক-রাজনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছেন। তবে এই তৎপরতা তাদের জন্য খুব একটা সুখকর ফল বয়ে আনছে না। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তারা সাড়া পাচ্ছেন না। এমনকি স্থানীয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সহানুভূতি, সমর্থনসূচক আচরণ না পাওয়ায় দারুণভাবে ব্যথিত তারা। শিক্ষার্থীদের পক্ষে সরকারে থাকা তাদের দুই প্রতিনিধি যথাযথ প্রক্রিয়ায় তাদের জন্য কাজ করছেন। প্রশাসনিক ফায়দা নেওয়া সম্ভব হলেও স্থানীয় জনসাধারণের সমর্থন আদায় করতে পারছেন না। শিক্ষার্থীদের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা এরই মধ্যে তাদের নির্বাচনী এলাকায় শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন।
এমনই অবস্থায় স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে ভোটার সাধারণের মধ্যে সৃষ্ট সংশয়-শঙ্কা দূরীভূত হয়নি। বরং অধিকতর ঘনীভূত হয়েছে। বিশেষ করে, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত সময় নেওয়া ভোটার সাধারণের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যময় ও রহস্যময় বলে প্রতিভাত হচ্ছে। কোনো না কোনো কারণ দেখিয়ে নির্বাচন আগামী বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৭ এর মার্চে নেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল আশঙ্কা করছেন।

কমেন্ট বক্স