আইসিসির প্রথম সহযোগী সদস্যদেশ হিসেবে সংস্থার পূর্ণ সদস্যদেশ বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০৫ রান তাড়া করে জিতে আগের ম্যাচেই ইতিহাস গড়েছিল আরব আমিরাত। এবার আরও বড়, আরও বেশি গৌরবের ইতিহাস গড়ল তারা। বুধবার (২১ মে) শারজায় শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে জিতল সিরিজ। টেস্ট খেলুড়ে কোনো দলের বিপক্ষে এটাই প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় আমিরাতের।
আগের ম্যাচে ২০৫ রান করেও স্বাগতিকদের হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। তাই শেষ ম্যাচে ১৬২ রানের পুঁজি নিয়ে জয়ের আশা ছিল ক্ষীণ। স্বল্প পুঁজি নিয়েও জেতা যায়, যদি শুরুতেই প্রতিপক্ষকে বড় ধাক্কা দেওয়া যায়। কিন্তু এদিন সেটাও করতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। ব্যাটিংয়ে ৫৭ রানে যেখানে ৫ উইকেট খুইয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ, সেখানে ১ উইকেটেই দলীয় ফিফটি করে ফেলে আমিরাত। ১৪ রানে অধিনায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিমকে (৯) হারানো আমিরাত ৫৮ রানে জোহাইব (২৯) এবং ৭৯ রানে রাহুল চোপড়াকে (১৩) হারায়। তবে কখনোই কক্ষচ্যুত হয়নি তারা। চতুর্থ উইকেটে আসিফ খান ও আলিশান সারাফু ৫১ বলে ৮৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়লে ৫ বল হাতে রেখেই জিতে যায় আমিরাত। সারাফু ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেন। আসিফ অপরাজিত থাকেন ৪১ রানে। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন শরীফুল, রিশাদ ও তানজিম।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান পারভেজ হোসেন ইমন আউট হন শূন্য রানে। স্পিনার পরাশরকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন লং অফে। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই দলের বিপদ বাড়িয়ে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক লিটন দাস। মেরিট না বুঝে হায়দার আলির অফ স্টাম্পের বাইরের বল প্যাডল সুইপ খেলার মাশুল দিয়েছেন এলবিডব্লিউ হয়ে। লিটনের রান তখন ১৪, বাংলাদেশের ৩১। হায়দারের ওই ওভারেই কোনো রান না করেই ফিরে যান তাওহীদ হৃদয়। এরপর মেহেদী হাসানও (২) বিদায় নিলে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৪৯।
এমন বিপদেও এক প্রান্ত ধরে রেখে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন তানজিদ হাসান তামিম। মাঝখানে দুই বলে টানা দুটি ছক্কা মারেন তিনি। পরাশের করা সেই ওভারে আসে ১৬ রানও। কিন্তু ইনিংসের সপ্তম ওভারে ব্যক্তিগত ৪০ রান করে ফিরে যান তানজিদ। আকিফ রাজার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪ চার ও ৪ ছক্কায় ১৮ বলে করেন ৪০। তার বিদায়ে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৫৭/৫। একপর্যায়ে সেটি হয়ে যায় ৮৪/৮! তখনএকটা শঙ্কা জাগে মনে, বাংলাদেশের দলীয় সেঞ্চুরি হবে তো! শেষ পর্যন্ত তা হয়েছে, ৯ উইকেটে বাংলাদেশ তুলেছে ১৬২ রান। আর তা সম্ভব হয়েছে জাকের আলী ও ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা হাসান মাহমুদের কল্যাণে। নবম উইকেটে ২৬ বলে ৪৪ রান যোগ করেন তারা। বিরুদ্ধ স্রোতে বুক চিতিয়ে লড়াই করে ১টি চার ও ৩টি ছয়ে ৩৩ বলে ৪১ রান করেছেন জাকের। আর হাসান মাহমুদ ৩টি চারে ১৫ বলে করেছেন অপরাজিত ২৬। শেষ উইকেট জুটিতে হাসান ও শরীফুল (১৬*) ১২ বলে যোগ করেন ৩৪ রান। শেষ পাঁচ ওভারে আসে ৬৪ রান।
বাংলাদেশ ইনিংসের সংক্ষিপ্ত স্কোর না দিয়ে ইনিংসটাকে সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করা যায় এভাবে—দুই অঙ্কের রান করেছেন : তানজিদ, লিটন, জাকের, হাসান ও শরীফুল, কোনো রান করেননি : ইমন, হৃদয় ও রিশাদ, বাকি ব্যাটাররা দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই আউট! ৩ উইকেট নিয়েছেন হায়দার, ২টি করে মাতিউল্লাহ ও সাগির।
ঠিকানা/এনআই



ঠিকানা অনলাইন


