ফেনীতে জুমার নামাজ শেষে যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য দোয়া চাওয়ায় এক মসজিদের ইমামকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে ফেনী সদর উপজেলার ফকিরহাট বাজার মাদরাসা জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর প্রয়াত জামায়াত নেতার জন্য দোয়া চেয়েছিলেন ইমাম মাওলানা মো. সলিমুল্লাহ।
তখন তাকে নামাজে উপস্থিত এক ছাত্রলীগ নেতা লাঞ্ছিত করেছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, “ইমাম সাহেব একজন দেশদ্রোহীর জন্য দোয়া করায় উপস্থিত মুসল্লিরা উত্তেজিত হয়ে যায়। পরবর্তীতে উদ্ভূত ঘটনার জন্য তিনি সকলের কাছে মাফ চাইলে তাকে রেহাই দেয়া হয়।
“এ সময় তাকে মসজিদের খতিব পদ থেকে সম্মানের সঙ্গে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে,” বলেন মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
একাত্তরে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের তখনকার নায়েবে আমির সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। পরে ২০১৪ সালে আপিল বিভাগ সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়। সাজা ভোগের মধ্যে গত সোমবার ‘হার্ট অ্যাটাকে’ তার মৃত্যু হয়।
দলের নেতা সাঈদীর জন্য শুক্রবার জুমার নামাজের পর দোয়ার কর্মসূচি দিয়েছিল জামায়াত।
ফকিরহাট মসজিদে নামাজ পড়তে আসা স্থানীয় আবদুল ওহাব জানান, জুমার নামাজ শেষে খতিব সলিমুল্লাহ মুসল্লিদের সাঈদীসহ অন্যান্য আলেম-ওলামার জন্য দোয়া করতে বলেন।
“এ সময় মসজিদে উপস্থিত আব্দুর শুক্কুর মানিকের (ছাত্রলীগ নেতা) নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক ইমামকে থামিয়ে মেহরাব থেকে টেনে মসজিদের বাইরে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তাকে মারধর করা হয়।”
সাঈদীর জন্য দোয়া চাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মাওলানা সলিমুল্লাহ বলেন, ‘আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি, তিনিই ন্যায় বিচার করবেন। আমার আর কিছু বলার নেই।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর শুক্কুর মানিক মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘জুমার নামাজ শেষে বিতর্কিত একজন ব্যক্তির জন্য দোয়া চাইলে মুসল্লিরা ক্ষেপে যান। তখন আমি তাকে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করেছি। সে সময় মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
ফেনী মডেল থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, খতিবকে লাঞ্ছিত করার ব্যাপারে শুক্রবার রাত পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।
ঠিকানা/এসআর