Thikana News
২৩ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
ড. সিদ্দিক চিৎকার করে বললেন

আমাদের প্রতিবাদ বিএনপি নয় ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে

আমাদের প্রতিবাদ বিএনপি নয় ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে ছবি: সংগৃহীত



 
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এ ছাড়া অনলাইনেও আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধনও স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এদিকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সংবাদ জানার পরই নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, শেখ হাসিনা মঞ্চ, জেনোসাইড একাত্তর ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। ১০ মে শনিবার বিকেলে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা গগনবিদারী  স্লোগানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ করেন এবং ইউনূসকে গণশত্রু হিসেবে অভিহিত করে অবিলম্বে তাকে পদত্যাগের দাবি জানানো হয়।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার খবরে নিউইয়র্কে আনন্দ-সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত ১০ মে সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় ১২ মে সোমবার জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় বাংলা ব্লকেড ইউএসএর ব্যানারে আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই মিছিলে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে একই স্থানে বিএনপির একটি সমাবেশ ছিল। সেখানে ‘ছি ছি হাসিনা, লজ্জায় বাঁচি না’সহ নানা স্লোগান দেন বিএনপির নেতারা। এসব স্লোগানকে কেন্দ্র করে বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার বিরোধ বাধে। এই বিরোধ শেষ পর্যন্ত পুলিশে গড়ায়। তবে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। এই ঘটনা নিরসনে সেখানে উপস্থিত হন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. সিদ্দিকুর রহমান। আর আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ। তাদের হস্তক্ষেপে বিএনপি ও ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ডা. সিদ্দিকুর রহমান চিৎকার করে বলেন,  আমাদের (আওয়ামী লীগের) প্রতিবাদ সমাবেশ বিএনপির বিরুদ্ধে নয়, এই প্রতিবাদ ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে। আমরা বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো কথা বলছি না। বিএনপির নেতাদের নিয়েও কিছু বলছি না। এখানে আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। আমরা ইউনূস সরকার ও এই সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করায় আমরা সরকারের বিরুদ্ধে সমাবেশ করেছি। তিনি আরও বলেন, আপনারা আমাদের দল ও আমাদের নেত্রীকে নিয়ে নেতিবাচক কথা বলছেন ও স্লোগান দিচ্ছেন। বিএনপি কেন আওয়ামী লীগ ও আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলবে। তিনি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা না বলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে অনুরোধ করেন। পাশাপাশি বিএনপির প্রতি এই হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেন, অপেক্ষা করুন, আপনাদেরকেও একই পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে। এই কথার মধ্য দিয়ে তিনি ভবিষ্যতে বিএনপিও নিষিদ্ধ হতে পারে, তেমন আভাসই দিয়েছেন। এ কারণে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপিকেও ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। 
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ নেতাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করায় তারা এখন প্রবাসে সাংগঠনিক কর্মসূচি জোরদার করে তা পালনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ কারণে নিউইয়র্কে তাদের অত্যন্ত সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। 
যদিও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে বিভিন্ন সমাবেশে বিএনপি, দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে নানা আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. সিদ্দিকুর রহমান। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির অনেক নেতা মনে করেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ায় বিপদে পড়ে এখন ডা. সিদ্দিক বিএনপির প্রতি মায়াকান্না দেখাচ্ছেন। সুযোগ পেলে সুর পাল্টাতে তিনি একটুও দ্বিধা করবেন না। তাই নিষিদ্ধ এই দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে বিএনপিকে দূরে থাকতে হবে। কেউ কেউ এটাও বলছেন, ক্ষমতায় থাকতে এই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নামও শুনতে পারত না। গালমন্দ করা ছাড়াও যেভাবে পেরেছে বিএনপিকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। আওয়ামী লীগ সব সময় বিএনপিকে কোণঠাসা করে রাখতে চেয়েছে। দমন-নিপীড়ন করেছে। ক্ষমতার বাইরে রাখতে চেয়েছে। আজ নিষিদ্ধ হয়ে তারা বিএনপির সহানুভূতি পাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন ডা. সিদ্দিকুর রহমান, আব্দুস সামাদ আজাদ, শামসুদ্দিন আজাদ, প্রদীপ কর, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, আবুল হাসিব মামুন, মহিউদ্দিন দেওয়ান, শাহীন আজমল, শাহ বখতিয়ার, তারিকুল হায়দার চৌধুরী, দরুদ দিয়া রনেল, সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, মো. আব্দুল কাদের মিয়া, কামাল হোসেন মিঠু, মো. জাফরউল্লাহ, নুরুল আবসার, জালালউদ্দিন জলিল, কায়কোবাদ খান, কাশেম ভূইয়া, খসরুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন, খান শওকত, কিবরিয়া, নুরুজ্জামান সর্দার, সাখাওয়াত বিশ্বাস, ইমদাদ চৌধুরী, সোলায়মান আলী, আব্দুল হামিদ, মফিজুল ইসলাম, আলী হোসেন গজনবী, তুলন মিয়া, আশফাক মাসুক, জহুরুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, নজরুল, জেডএ জয়, শেখ জামাল, রহিমুজ্জামান সুমন, জাহিদ খন্দকার, শহিদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আকবর রিচি, শাহানারা রহমান ও মমতাজ শাহনাজ।

আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় নিউইয়র্কে আনন্দ সমাবেশ ও মিষ্টি বিতরণ
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার খবরে নিউইয়র্কে আনন্দ-সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত ১০ মে সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসে ডাইভারসিটি প্লাজায় এ আয়োজনে মিষ্টি বিতরণও করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আব্দুল কাদেরের সঞ্চালনায় সমাবেশে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ। আরও উপস্থিত ছিলেন রিটা রহমান, এমএ সবুর, মনিরুল ইসলাম, দেওয়ান কাউসার, শাহাদত হোসেন রাজু, নীরা রাব্বানী, মো. হারুন মিয়া, হাসান সিদ্দিক, নূর আমিন, আবুল কালাম প্রমুখ।
বক্তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের স্থান নেই। এখন সময় এসেছে অতীতের শাসনকালে সংঘটিত অনিয়ম ও নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত করার।
বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে এরশাদ, জামায়াত ও এক-এগারোর কুশীলবদের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতা করেছেন এবং দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থেকে গণতন্ত্রের ক্ষতি করেছেন। এসব কার্যকলাপ স্বাধীনতা ও মানবাধিকার পরিপন্থী, তার জন্য আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ হওয়া যৌক্তিক।
এদিকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় গত ১২ মে সোমবার জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় বাংলা ব্লকেড ইউএসএর ব্যানারে আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মিছিলে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা অংশ নেন। তারা আওয়ামী লীগকে জঙ্গি সংগঠন এবং মানবতা ও গণতন্ত্রের দুশমন হিসেবে আখ্যায়িত করে দলটিকে চিরতরে নিষিদ্ধ এবং ফ্যাসিস্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলা ব্লকেডের অন্যতম সংগঠক ও বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভুঁইয়া এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদ। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় সমাবেশে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ সম্রাট, গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান জিল্লু, গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, আব্দুর সবুর, মোশারফ হোসেন সবুজ, ইবাদ চৌধুরী, জাহাঙ্গীর হাসান, খলকুর রহমান খলকু, আবু সাঈদ, আনোয়ার হোসেন পলাশ, জিয়াউর রহমান মিলন, আল মামুন সবুজ প্রমুখ।

 

কমেন্ট বক্স