পাকিস্তানে গণতন্ত্রের চর্চা থাকলে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ঝামেলা কম হতো। কিন্তু সেনাবাহিনী দেশটিতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। তারাই ‘সর্বেসর্বা’ হয়ে থাকতে চায়। এমন দাবি করেছেন ভারতের সাংবাদিক দীপ্তেন্দ্র রায়চৌধুরী। ঠিকানা টিভির সরাসরি সম্প্রচারিত আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বলছেন, সন্ত্রাসবাদে প্রশ্রয় দেওয়ার মতো বিষয় যদি না থাকে তাহলে পাকিস্তানে গণতন্ত্র প্রসারিত হবে। সেটা হলে দেশটা কিন্তু সেনাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। তাই তাদের প্রত্যক্ষ মদদে সেখানে জঙ্গিগোষ্ঠী আশ্রয় পায়, প্রশিক্ষণ পায়- অভিযোগ করেন তিনি।
ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের উপস্থাপনায় এই টকশো হয়েছে ৯ মে শুক্রবার নিউইয়র্ক সময় বেলা ১২টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা)। ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউব চ্যানেলে যা প্রচার হয়। এ আয়োজনে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন ই-সাউথ এশিয়ার প্রধান সম্পাদক মাসকাওয়াথ আহসান। ভারত ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি সশস্ত্র হামলার প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশি দেশ দুটির বৈরিতার নানা প্রসঙ্গ তুলে ধরেন দুই অতিথি।
বর্তমানে করাচিতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সিনিয়র সাংবাদিক মাসকাওয়াথ আহসান বলেন, ‘পাকিস্তানে রাজনীতিসহ অনেক কিছুই সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে, সেটা অবশ্যই দুর্ভাগ্যজনক। তবে তাদের আগের সেই শৌর্য-বীর্য আর নেই। নাগরিক সমাজ এখন সেনাবাহিনীর সমালোচনা করে থাকে। সেনাবাহিনী পাকিস্তানে অপছন্দের পাত্র হয়ে গেছে।’
তিনি আরো যোগ করেন, যুদ্ধ চায়, পাকিস্তানের সমাজে এমন মানুষ কমই দেখা যাচ্ছে। যুদ্ধের নাম করে কিছু সময়ক্ষেপণ হতে পারে বড় জোর। কারণ সেখানে মানুষ মনে করে যুদ্ধ করার মতো আর্থিক সামর্থ্য পাকিস্তানের নেই।
পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্ম কাশ্মীর নিয়ে আগের প্রজন্মের মতো ভাবে না বলে মনে করেন ই-সাউথ এশিয়ার প্রধান সম্পাদক মাসকাওয়াথ আহসান। তিনি বলেন, গত দুটি জাতীয় নির্বাচনে পাকিস্তানে কাশ্মীর গুরুত্বপূর্ণ কোনো এজেন্ডা হিসেবেই ছিল না। সবমিলিয়ে দেশটিতে সেনাবাহিনী এক ধরনের চাপেই আছে- বলছেন তিনি।
কাশ্মীরিদের চাওয়া-পাওয়া প্রসঙ্গে সিনিয়র সাংবাাদিক মাসকাওয়াথ আহসান বলেন, ভারত ও পাকিস্তান- দুই অংশে থাকা কাশ্মীরিরাই এখন বুঝে গেছে তাদের আর আলাদা স্বাধীন দেশ পাওয়া সম্ভব না। সেভাবেই তারা এখন পরিস্থিতি মানিয়ে নিচ্ছে- মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে ভারতের কাশ্মীরে প্রত্যক্ষ সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিক দীপ্তেন্দ্র রায়চৌধুরী বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় কাশ্মীর আলাদা একটি রাষ্ট্র হলেই কাশ্মীরিদের জন্য ভালো হতো। সেটা তখন হয়নি। উল্টো দুই ভাগ হয়ে গেল। স্থায়ী সমস্যা তৈরি হলো। এভাবে সাত দশকের বেশি চলে গেছে। এখন স্বাধীন কাশ্মীর দুই দেশের কেউ আর মেনে নেবে না- মন্তব্য করেন তিনি।
ঠিকানা/এসআর