Thikana News
০৪ মে ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ০৪ মে ২০২৫
টাস্কফোর্সের অগ্রগতি প্রতিবেদন

সাগর-রুনি আত্মহত্যা করেননি, তাদের হত্যা করা হয়েছে

সাগর-রুনি আত্মহত্যা করেননি, তাদের হত্যা করা হয়েছে ছবি সংগৃহীত
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে গঠিত টাস্কফোর্সের অগ্রগতি প্রতিবেদনে নতুন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ওই দম্পতি আত্মহত্যা করেননি, তাদের হত্যা করা হয়েছে। আর চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন দুজন। তবে ডিএনএ অস্পষ্টতায় হত্যাকারীদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সম্প্রতি তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে টাস্কফোর্স জানায়, তদন্তে দাম্পত্য কলহ, চুরি বা পেশাগত কারণে তাদের খুনের তথ্য পায়নি টাস্কফোর্স। ভিসেরা রিপোর্টে চেতনানাশক বা বিষজাতীয় কিছু পাওয়া যায়নি। রান্নাঘরে থাকা ছুরি ও বঁটি দিয়ে হত্যা করা হয় তাদের। ক্ষত নিয়েও অনেকক্ষণ জীবিত ছিলেন তারা। আগে থেকে বাসায় কেউ ছিল না, আর জোর করে কেউ প্রবেশ করেনি।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাত ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে খুন হন সাগর-রুনি। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে বোঝা যায়, প্রথমে সাগর ও পরে ছুরিকাঘাত করা হয় রুনিকে। হত্যার আগে সন্তান মেঘকে নিয়ে একই খাটে শুয়ে ছিলেন তারা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হত্যায় সাগর বাধা দিতে পারেন- এমন ধারণায় তার হাত-পা বাঁধা হয়। রুনি নারী হিসেবে দুর্বল চিন্তা করে তার হাত-পা বাঁধার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়নি।

‘ব্লাড প্যাটার্ন’ পর্যবেক্ষণ করে ধারণা করা হয়, আগে মারা গেছেন রুনি। আর বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করে সমীকরণ মিলিয়ে টাস্কফোর্স বলছে, সাগরের মৃত্যু হয়েছে পরে।

ঘটনাস্থলে চারজনের ডিএনএ পাওয়া যায়। এর মধ্যে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। যাদের মধ্যে দুজন সাগর-রুনি, তবে অন্য দুজনের ডিএনএ কোনোভাবেই শনাক্ত করতে পারেনি টাস্কফোর্স। তাই হত্যার মোটিভ ও খুনে কারা জড়িত সে বিষয়টিও এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট করা যায়নি। এ কারণে তদন্তে আরও সময় চেয়েছে টাস্কফোর্স।

টাস্কফোর্সের রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়, সেদিন (হত্যার রাতের পরদিন সকাল) গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে। এর আগে গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয়দের পায়ের ছাপে ধ্বংস হয়ে যায় অনেক আলামত। তবে রান্না ঘরের বারান্দা সাড়ে ১৪ ইঞ্চি ও সাড়ে ৮ ইঞ্চির ভাঙা অংশটি সম্পূর্ণ নতুন ছিল। তা দিয়ে সহজে মানুষ ঢুকতে ও বের হতে পারে। যদিও সেখানকার পূর্ণাঙ্গ ফুটপ্রিন্ট পাওয়া যায়নি।

এদিকে সিআইডির সঙ্গে ডিএনএ বিশ্লেষণ করে টাস্কফোর্স জানায়, একসঙ্গে দুই বা তিনজনের ডিএনএ থাকলে শনাক্ত করা সম্ভব। সংখ্যায় এর বেশি হলে শনাক্ত করা কঠিন। নমুনায় ৫ থেকে ৬ জনের ডিএনএ থাকায় তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৩ অক্টোবর হাইকোর্টের নির্দেশে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে পিবিআই প্রধানকে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। কমিটিতে এডিশনাল ডিআইজি পদমর্যাদার নিচে নয় পুলিশের একজন প্রতিনিধি, সিআইডির একজন প্রতিনিধি ও র‌্যাবের একজন প্রতিনিধিকে রাখা হয়েছে।

গত বছরের ১৭ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে টাস্কফোর্স গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

তার আগে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তাদেরকে ৬ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হয়। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত থেকে র‌্যাবকে সরিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন আদালত।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। বিভিন্ন বাহিনীর অভিজ্ঞ তদন্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে টাস্কফোর্স গঠন করতে বলা হয়।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন।

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স