জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের (জেএমসি) দ্বিতল ভবনটিকে চারতলা করা হচ্ছে। ২৭ এপ্রিল জেএমসির ভবন সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্টেট সিনেটর জন ল্যু ও কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট ডনোভান রিচার্ড। নিউইয়র্ক গভর্নর ক্যাথি হোকুলের পক্ষ থেকে প্রশংসাপত্রও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এলাকাবাসী, ডোনার, কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সেদিন এই অনুষ্ঠান প্রবাসী বাংলাদেশিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
ভবন সম্প্রসারণ কাজের জন্য অনেক ডোনার এক লাখ ডলার করে দিয়েছেন। তাদের অনেকে আগামী দিনে দুই লাখ ডলার পর্যন্ত ডোনেশন দিতে পারেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট ডনোভান রিচার্ড এই কাজে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। স্টেট সিনেটর জন ল্যুও বলেছেন, তিনি এই কাজ সফল করার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।
জেএমসির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. নাজমুল খান, জেএমসির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ডা. মোহাম্মদ তুহিন, সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন মান্নান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার তহবিল সংগ্রহ করছেন। এই কাজের জন্য নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে তিন মিলিয়ন ডলার। তবে এখন পর্যন্ত এই তহবিল তারা জোগাড় করতে সক্ষম হননি। তারা এক মিলিয়ন ডলারের বেশি সংগ্রহ করতে পেরেছেন। ওই অর্থ দিয়েই তারা ভবনের সম্প্রসারণ কাজে হাত দিয়েছেন। ১৪ এপ্রিল কাজটি একটি কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে।
মসজিদের পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন মান্নান বলেন, আমরা অনেক সুন্দর ও সফলভাবে সম্প্রসারণ কাজ শুরু করতে পেরেছি। অনেক ডোনার উপস্থিত হয়েছিলেন। তারা সবাই সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি, আমরা তিন মিলিয়ন অর্থ জোগাড় করতে পারব।
পরিচালনা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার বলেন, অত্যন্ত সফলভাবে অনুষ্ঠান করতে পেরেছি। অনেক ডোনার অর্থ দিয়েছেন। আশা রাখছি, কাজের পুরো অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
মসজিদ পরিচালনা পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই কাজ সম্পন্ন হলে তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় আরো ৫ হাজার ৬৫০ বর্গফুট আয়তন বাড়বে। ফলে বর্তমান ৯ হাজার ৮৪০ বর্গফুট মিলে মোট আয়তন দাঁড়াবে ১৫ হাজার ৪৩৪ বর্গফুট। তখন বর্তমান দ্বিতীয় তলা থেকে হিফজ স্কুল তৃতীয় তলায় সরানো হবে। সেটি হলে সেখানে অতিরিক্ত আরো ১৮০ জন মুসল্লির নামাজের স্থান সংকুলান হবে। এ ছাড়া প্রথম তলা থেকে অফিস স্টোরেজ সরালে আরো ৬০ জন মুসল্লির নামাজের জায়গা বাড়বে। বর্তমান ভবনের দুই রুমের মাঝের দেয়াল ভেঙে মিম্বর নিয়ে আসা হবে মাঝামাঝি স্থানে। ইমামের অফিস স্থানান্তর করা হবে চতুর্থ তলায়। ভবন সম্প্রসারণের কাজ সম্পন্ন করা হলে মসজিদে মুসল্লিদের ধারণক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি হাফেজি স্কুল, উইকেন্ড ইসলামি শিক্ষা, মহিলা ও বয়স্কদের জন্য সৃষ্টি হবে অধিকতর সুবিধা। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ আনুমানিক ৬ মাস এবং অঙ্গসজ্জাসহ পূর্ণাঙ্গ কাজ সম্পন্ন হতে আরো ৬ মাস লাগবে। সম্প্রসারণ কাজ চলাকালীন মুসল্লিগণ যাতে নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জেএমসির নতুন ভবন। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারি মাসে আল মামুর মসজিদ ভবনের ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে ভবনটি দোতলা করা হয়। জেএমসির বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে আল মামুর স্কুল, জামিয়া কোরানিয়া একাডেমি, উইকেন্ড ইসলামিক স্কুল, জেএমসি লাইব্রেরি ও জেএমসি পরিচালনা কমিটি।