ঠিকানা অনলাইন 
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ মনসুরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
১৬ আগস্ট বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দার আদালতে মনসুর আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে সেই আবেদন নাকচ করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে মনসুরকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ।
শাহজাহানপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক শাহ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২০ জুন এ মামলায় বিদেশে পলাতক জিসান ও ফ্রিডম মানিকসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। এ মামলায় পলাতক থাকায় আশরাফ তালুকদারসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আসামিদের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৭ আগস্ট দিন ধার্য রয়েছে।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিরা হলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদার, জিসান আহম্মেদ মন্টু, ফ্রিডম মানিক ওরফে জাফর, রিফাত হোসেন, সোহেল রানা, ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, সামসুল হায়দার উচ্ছল ও ১১ নং ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল।
কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ মনসুর, মশিউর রহমান ইকরাম, ১০ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরিফুর রহমান ওরফে ‘ঘাতক’ সোহেল ও তৌফিক হাসান ওরফে বিডি বাবু।
এর আগে ৫ জুন শাহজানপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় এ চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার। প্রতিবেদনে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তবে এক্সেল সোহেল নামে এক আসামির পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। বিচারের জন্য ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
চার্জশিটভুক্ত উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, ১০ নং ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ১১ নং ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল, ১০ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সদস্য কাইল্যা পলাশ, একই ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ‘ঘাতক’ সোহেল, সুমন শিকদার মুসা, মুসার ভাগনে সৈকত, মুসার ভাতিজা শিকদার আকাশ, ইমরান হোসেন জিতু, মোল্লা শামীম, রাকিব, বিডি বাবু, ওমর ফারুক, ‘কিলার’ নাসির, রিফাত, ইশতিয়াক হোসেন জিতু, মাহবুবুর রহমান টিটু, হাফিজ, মাসুম ও রানা মোল্লা। এদের মধ্যে ২৪ জনই গ্রেপ্তার হয়েছেন। এদের মধ্যে মুসা, শুটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন মানিক আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শো-রুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এ ছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর ওই দিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়।
ঠিকানা/এনআই
