Thikana News
২৪ এপ্রিল ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

খাদ্যসহ জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি সংকটে সাধারণ মানুষ

খাদ্যসহ জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি সংকটে সাধারণ মানুষ
যুক্তরাষ্ট্রে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের উল্লম্ফনে স্বল্প আয়ের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে চরম প্রভাব ফেলছে। বাজারে যেসব পণ্যের দাম একবার বেড়ে যাচ্ছেÑ তা আর নিম্নমুখী সহজেই হচ্ছে না। এরমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্কারোপ করে আবার চীন ছাড়া অন্যান্য দেশের জন্য ৯০ দিন তা স্থগিত করলেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ইতোমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। দেশের মানুষ তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক জিনিস ব্যবহার করেন, যা চীন থেকে আমদানি করা। বিশেষ করে .৯৯ সেন্টের দোকানগুলো একচেটিয়া চীনের দখলে। এখন আর .৯৯ সেন্টের থেকেও মানুষ স্বল্পমূল্যে জিনিস ক্রয় করতে পারছেন না। পণ্য ক্রয়ে বেশি দাম গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপে মানুষের মাঝে প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া যেসব খাদ্যপণ্য বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়, সেগুলোতেও ঝাঁঝ পরিলক্ষিত হচ্ছে। নিউইয়র্কের বাংলাদেশি মালিকানাধীন গ্রোসারিতে মাছ-মাংস, শাক-সবজি, চাল, মসলার অনেক কিছুতেই দাম গত এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। 
এদিকে দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে অন্যতম ডিমের দাম এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে ডিমের মূল্য। গত মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে প্রতি ডজন ডিমের দাম গড়ে ৬ দশমিক ২৩ ডলার। যা গত এক বছর আগের তুলনায় এই দাম দ্বিগুণেরও বেশি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই দাম ছিল ৫ দশমিক ৯০ ডলার এবং জানুয়ারিতে ছিল ৪ দশমিক ৯৫ ডলার। অর্থাৎ মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানেই মূল্য বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। মার্চের শেষে পাইকারি দামে কিছুটা পতন হলেও, খুচরা বাজারে তার প্রভাব এখনও দৃশ্যমান নয়।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছুদিন আগে দাবি করেছিলেন, দেশে ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে এবং কৃষিমন্ত্রী ব্রুক রোলিন্সের ভূমিকার প্রশংসাও করেছিলেন। তবে বাজারের বাস্তব চিত্র অন্য কথা বলছে। 
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিমের দামে এই অস্বাভাবিক উর্ধ্বগতির মূল কারণ বার্ড ফ্লু মহামারি। ২০২২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বার্ড ফ্লু এক ভয়াবহ সংকট তৈরি করেছে। চলতি বছর এই ভাইরাসে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে খামারিরা বাধ্য হয়ে ৩ কোটির বেশি ডিম দেওয়া মুরগি নিধন করেছে। কঠোর সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, একটি মুরগিও যদি আক্রান্ত হয়, তবে পুরো খামারের পাখি ধ্বংস করতে হয়, যদিও বর্তমানে এই নীতিতে কিছুটা শিথিলতা আনা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহে নতুন করে বার্ড ফ্লুর সংক্রমণ দেখা যায়নি, যা খানিকটা স্বস্তিদায়ক। তবে তবুও ডিম উৎপাদন আবার পূর্ণমাত্রায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে সময় লাগবে। এর মধ্যে যুক্ত হয়েছে আরেকটি নতুন সমস্যাÑ বার্ড ফ্লু এবার কেবল পাখি নয়, দুগ্ধ উৎপাদনকারী গবাদি পশুকেও আক্রান্ত করছে। এই জটিলতা বাজারের ভারসাম্য নষ্ট করছে এবং নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টা ব্যাহত করছে।
এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিকদের জন্য ডিমের মতো মৌলিক খাদ্যপণ্য কেনা যেনো এক ধরনের সংগ্রাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভবিষ্যতে পরিস্থিতির উন্নতি হবে এই আশায় দিন গুণছেন সবাই। 

কমেন্ট বক্স