Thikana News
২৩ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

নিবন্ধন আবেদনের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে এনসিপি

নিবন্ধন আবেদনের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে এনসিপি সংগৃহীত



 
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা ৯০ দিন বাড়ানোরে অনুরোধ জানিয়েছে। একইসঙ্গে দলটির প্রতিনিধি দল রোববার সিইসির সঙ্গেও বৈঠকের কথা রয়েছে। আজ ১৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) নির্বাচন কমিশন সচিবের দপ্তরে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে। সিইসির একান্ত সচিব আশরাফুল আলম ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সংস্কার সময়ন্ব কমিটির কোঅর্ডিনেটর সারোয়ার তুষার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রবিবার শেষ হচ্ছে এবারের দল নিবন্ধন আবেদনের শেষসময়।
নির্বাচন কমিশন বলছে, ঘোষিত সময় ২০ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।ডিসেম্বরে ভোটের লক্ষ্য ধরে ১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন-ইসি। ২০ এপ্রিল হচ্ছে আবেদনের শেষ সময়সীমা।
জানতে চাইলে সিইসির একান্ত সচিব আশরাফুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবের দপ্তরে এনসিপির পক্ষ থেকে সংস্কার ও দল নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দলটির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রোববার সিইসির বৈঠকের সময়সূচি রয়েছে বলে জানান আশরাফুল। বলেন, রোববার ১২টায় এনসিপি প্রতিনিধি দল আসবে, সিইসির সঙ্গে বৈঠকের সূচি রয়েছে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার জানান, মৌলিক সংস্কার ও নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা ন্যূনতম ৯০ দিন বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের একটা টিম ইসির সাথে দেখা করে উদ্বেগগুলো জানাবে। সেখানে নিবন্ধন সময়সীমা বাড়ানোসহ বেশ কিছু বিষয়ে আমাদের আলাপ হবে।

ইসি সচিবের কাছে পাঠানো চিঠিতে যা বলছে এনসিপি
আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, নির্বাচন সংক্রান্ত বর্তমান প্রচলিত আইনের মধ্যে থেকেই বিগত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন ভোটবিহীন সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা, জাল ভোট, রাতের ভোটসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করেছে। একইভাবে শেখ হাসিনা ও তার দলীয় নির্দেশনা মোতাবেক উক্ত কমিশন সারাদেশে দলীয় প্রতীকে বিতর্কিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেরও অয়োজন করেছিল।

বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস এবং ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। এহেন পরিস্থিতিতে, দেশের ছাত্র-জনতা বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলে এবং শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট ২৪ গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় গণমানুষের প্রত্যাশার আলোকে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গণঅভ্যুত্থানের পরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সংস্কারমূলক কার্যক্রম শুরু করে। তার মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয় এবং উক্ত কমিশন একটি প্রতিবেদনসহ তাদের সুপারিশ কর্তৃপক্ষের নিকট প্রদান করলেও অদ্যাবধি মৌলিক সংস্কার কার্যক্রমের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।

নির্বাচন কমিশনের মৌলিক সংস্কার ও বিদ্যমান আইন যুগোপযোগী না করেই বর্তমান নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য গত ১০ মার্চ, ২০২৫ তারিখে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সংস্কারের আগেই তড়িৎ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে সমালোচনার জন্ম দেয়।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ও প্রাসঙ্গিক আইনের অধীনে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন শর্তাবলীসমূহ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক। পূর্বের স্বৈরাচারী সরকারের আমলে তৈরি এই বিধিগুলো রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য প্রণীত। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন নিজেই জেলা পর্যায় ১০% ও উপজেলা পর্যায়ে ৫% কার্যালয় স্থাপনের শর্ত সহজীকরণের পাশাপাশি প্রতি পাঁচ বছরে নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন নবায়নের বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব দিয়েছেন। তা ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের বর্তমান কাঠামো ও ব্যক্তিবর্গের নিয়োগ বিতর্কিত ২০২২ সালের আইন অনুসারে গঠিত সার্চ কমিটির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। 
এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব, রাজনৈতিক প্রভাব ও নিরপেক্ষতা রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে, যা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ণ করছে। সুতরাং বর্তমানের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রনয়ন বা সংশোধন পূর্বক নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হওয়া দরকার।

তাছাড়াও মৌলিক সংস্কারের আলোকে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, বিদ্যমান নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন হালনাগাদ করাও আবশ্যক। এমতাবস্থায়, অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত মৌলিক সংস্কার সাধন এবং নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা অন্যূন ৯০ দিন বর্ধিতকরণের জন্য বিনীত অনুরোধ করা যাচ্ছে।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স