সুদানের সংঘর্ষ চার মাস ছাড়িয়েছে। দেশটিতে নারী ও শিশুদের অবস্থা ভয়াবহ। জাতিসংঘ ও একাধিক সংস্থা এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বিশ্বের ২০টি গুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘ যৌথভাবে এ রিপোর্ট পেশ করেছে। সুদানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ওই রিপোর্টে বলা হয়, এমন অবস্থা চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই ভয়াবহ খাদ্য সংকট তৈরি হবে সুদানে। বস্তুত, তীব্র খাদ্য সংকটের পরিস্থিতি থেকে সুদান এক পা দূরে আছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, খাদ্য সংকট হলে সুদানের ৬০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। না খেতে পেয়ে মৃত্যু হবে তাদের। ইতোমধ্যে দেশটিতে খাবার লুট শুরু হয়েছে। সংঘর্ষে লিপ্ত দুপক্ষের সেনাই বেসামরিক মানুষের জন্য আসা খাবার এবং মানবিক সাহায্য লুট করছে। মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীদের ওপরেও হামলা চালানো হচ্ছে।
গত ১৫ জুলাই থেকে সুদানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে আধা সামরিক বাহিনীর প্রধানের লড়াই শুরু হয়। এতে সামরিক বাহিনী কার্যত দুভাগে হয়ে গেছে। এর মধ্যে আটবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হলেও লড়াই থামেনি। ফলে দেশের প্রশাসন কার্যত ভেঙে পড়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়, যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নারী ও শিশুরা। নারীদের ওপর অত্যাচার ৯০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে এবং যৌন হেনস্তা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত অন্তত চার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ২৮ জন মানবাধিকার কর্মী এবং স্বাস্থ্যকর্মী আছেন, যারা বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার সঙ্গে কাজ করতেন। মৃত্যু হয়েছে ৪৩৫ শিশুর।
যুদ্ধের ফলে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন অন্তত ৪০ লাখ মানুষ। তারা হয় নিজের দেশে অন্যত্র অথবা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সুদানে।
মানবাধিকার সংগঠন ও জাতিসংঘের বক্তব্য, বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর এবার সুদানে হস্তক্ষেপ করা উচিত। আর অপেক্ষা করলে বড্ড বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে। লাখ লাখ মানুষের প্রাণ সংকটের মুখে পড়বে। ফলে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
যুদ্ধরত দুপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকে বসার চেষ্টা করেছে জাতিসংঘ। কিন্তু, লড়াই থামাতে রাজি হয়নি তারা।
ঠিকানা/এসআর