Thikana News
২১ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

৯ বছর পর আবাহনীকে হারাল মোহামেডান

৯ বছর পর আবাহনীকে হারাল মোহামেডান ছবি সংগৃহীত



 
নাজমুল হোসেন শান্ত যেন একাই লড়ছিলেন জয় এনে দিতে। উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রেখে হাঁকিয়েছেন ৬৩ বলে দুর্দান্ত এক অর্ধশতক। গরমে বারবার ক্র্যাম্প হলেও থেমে যাননি, লড়েছেন দলের প্রয়োজনে। তবে যখন প্রয়োজন ছিল আরও একটু ধৈর্যের, ঠিক তখনই স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফিরলেন ৮০ রানে। ধৈর্যচ্যুতি না ঘটলে সেঞ্চুরিও পেতেন, আবাহনীর জয়ও সুনিশ্চিত হতো। শান্তর বিদায়ের পর ছন্দপতন এমনভাবে হলো, শেষ পর্যন্ত ৩৯ রানে হেরে মাঠ ছাড়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। তাতে দীর্ঘ প্রায় ৯ বছরের অপেক্ষার অবসান হয়। ২০১৬ সালের পর আবারও আবাহনীকে হারানোর স্বাদ পেল মোহামেডান।

ঐতিহ্যবাহী দলটির কাছে এই জয় কেবলই পয়েন্টের নয়, সম্মানেরও। লিগের এই ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে সমতায় ফিরেছে দুই দলই। যদিও নেট রান রেটের ব্যবধানে তালিকার শীর্ষে এখনো আবাহনী। তবে মোহামেডানের এই জয়ে স্পষ্ট—ডিপিএলের সুপার লিগ হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ভরা।

২৬৪ রানের লক্ষ্যে নেমে আবাহনীর শুরুটা হয়নি শুভ। ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও জিসান আলম মিরপুরের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ভরসা দিতে ব্যর্থ। তৃতীয় ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে জিসান ফিরলে প্রথম ধাক্কা খায় দলটি। পরের ওভারেই বিতর্কিত এক সিদ্ধান্তে বেঁচে যান ইমন, যদিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনিও। ইবাদতের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কভারের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৬ রানে।

ধাক্কার পর ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন শান্ত ও মিঠুন। কিন্তু আম্পায়ারিং নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে এই পর্বে। ইবাদতের এক ডেলিভারিতে মিঠুন এলবিডব্লিউ হতে পারতেন, তবে আম্পায়ার তানভীর আহমেদ তাকে নট আউট ঘোষণা করেন। সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করে মোহামেডান ফিল্ডাররা তর্কেও জড়ান। যদিও মিঠুন বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, মিরাজের বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন ১৯ রানে।

শান্ত চেষ্টা করেছেন দলকে জয়ের পথে রাখতে। এক প্রান্তে ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি মুমিনুল (২৫), রাব্বি (১), সৈকত (২৪)-রা। স্লোয়ার ডেলিভারিতে শান্তর স্কুপ ব্যর্থ হয়ে বোল্ড হলে ধসে পড়ে আবাহনীর ইনিংস। একই ওভারে রাকিবুল হাসানকেও ফেরান সাইফউদ্দিন। এরপর রিপন মণ্ডল আউট হলে শেষ হয় আবাহনীর ইনিংস—৪৭.১ ওভারে ২২৫ রানে।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে স্বপ্নের সূচনা পায় মোহামেডান। রনি তালুকদার ও আনিসুল হক ইমনের ব্যাটে দ্রুত ওঠে রান। রনি ১৬ রানে ফিরলেও ইমন ও অঙ্কনের জুটিতে গড়ে ওঠে ১২৩ রানের ভিত্তি। ফিফটি পান ইমন, অঙ্কনও ছিলেন সীমানায়। তবে ৪৮ রানে ফেরেন তিনি। এরপর তাওহীদ হৃদয় এলবিডব্লিউ হন মাত্র ৩ রানে।

তবে ইনিংস গুছিয়ে নেন ইমন ও মুশফিক। ডিপিএলে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন আনিসুল হক ইমন—১০৪ বলে। কিন্তু ক্লান্তি আর মনোযোগের অভাবে ১১৪ রান করে শর্ট বলে ক্যাচ দেন। এরপর মুশফিক (১৮) ও রিয়াদ (১৮) ব্যর্থ হলে চাপ পড়ে শেষ দিকে। মিরাজ (১৮) আর সাইফউদ্দিনও ফিনিশ করতে পারেননি।

২৬৪ রানে থেমে যায় ইনিংস, যেখানে আরও ২০-২৫ রান যোগ হওয়ার সুযোগ ছিল। প্রায় ২ ওভার আগেই অলআউট হওয়া হতাশাই বাড়ায়।

আবাহনীর হয়ে রাকিবুল হাসান ছিলেন সবচেয়ে কিপটে ও কার্যকর। ৩ মেইডেনসহ মাত্র ২৩ রানে ২ উইকেট নেন। সমান উইকেট পেয়েছেন নাহিদ রানা, মৃত্যুঞ্জয় ও রাব্বি। তবে বোলাররা যেভাবে মাঝপথে মোহামেডানকে চাপে ফেলেছিলেন, ব্যাটসম্যানরা সেই ধারা ধরে রাখতে পারেননি।

এই জয় ডিপিএল সুপার লিগে উত্তেজনার পারদ আরও চড়িয়ে দিয়েছে। দুই দলের পয়েন্ট এখন সমান, তাই লিগের শেষ দিকে লড়াইটা হবে আরও তীব্র, আরও জমজমাট।

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স