বাংলাদেশ রেমিট্যান্স ফেয়ার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১৯-২০ এপ্রিল। শনি ও রোববার বিকেল তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে আয়োজকেরা রেমিট্যান্স ফেয়ারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মেলার তিনটি পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে প্রথম দিনে পাঁচতারকা হোটেলে ওয়েলকাম ডিনার ও পরিচয় পর্ব অনুষ্ঠান রয়েছে। এটি হবে লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে। এরপর দুটি পর্ব হবে জ্যাকসন হাইটসের সানাই রেস্টুরেন্টের পার্টি হলে। ‘বৈধ রেমিট্যান্স, উন্নত বাংলাদেশ’ শিরোনোমে এবারের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে আরও বেশি পরিমাণে যাতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ করে সবাই, সে ব্যাপারে উৎসাহিত করা হবে। মেলায় প্রবেশমূল্য থাকছে না। ফলে যে কেউ এই মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। সেখানে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হবে।
এদিকে মেলার অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, এফবিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, সোনালী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকারের আসার কথা রয়েছে এবং তাদের নাম ও ছবি দিয়ে আয়োজকেরা বিজ্ঞাপন প্রচার করছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ এবং আমেরিকার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ মেলায় উপস্থিত থাকবেন বলেও প্রচারণা চালাচ্ছেন। যদিও এই মেলার বিষয়ে নিউইয়র্কের একাধিক পত্রিকায় নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও এমন খবর বেরিয়েছে যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এই অনুষ্ঠানে আসছেন না। তবে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে তিনি আসেন কি না তা দেখার জন্য। রেমিটেন্স ফেয়ারের আয়োজন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের আসার বিষয়ে আয়োজকদের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তিত্ব বিইউসিসিআইয়ের সিইও ও মেলার প্রধান সমন্বয়কারী বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, আমরা নিশ্চিত করে বলতে চাই যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. হাসান এইচ মনুসর আমাদের অনুষ্ঠানে আসছেন। তিনি ১৮ এপ্রিল বিকেল চারটায় এসে নিউইয়র্কে পৌঁছুবেন। এরপর তিনি আমাদের ১৯ ও ২০ এপ্রিলের রেমিটেন্স ফেয়ারের অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন। ২০ তারিখের পর তিনি নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে যাবেন। সেখানে বিশ্বব্যাংকের অনুষ্ঠান আছে। সেখানে তিনি যোগ দিবেন।
বিশ্বজিৎ সাহা আরো বলেন, আমি ৩৫/৩৬ বছর ধরে কাজ করছি। কখানো কোন বিতর্কিত ও অন্যায় কোন কাজ করিনি। কিছু কিছু মানুষ না জেনেই, আমাদেরকে কোন কিছু জিজ্ঞেস না করে এবং গভর্নরের অফিসে খবর না নিয়েই বলে দিলেন যে গভর্নর আমাদের অনুষ্ঠানে আসছেন না। এবং মেলার আয়োজন নিয়ে অনেক নেতিবাচক কথা বলেছেন। এই সব কথার ভিত্তি নেই। কারণ শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে চাই যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আমাদের অনুষ্ঠানে আসবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি যে আসছেন তার অগ্রবর্তী দল নিউইয়র্কে ইতোমধ্যে এসে গেছেন। তারা তার আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ও তিনি আসছেন এটাই বলতে পারি। রেমিটেন্স ফেয়ার নিয়ে যারা নেতিবাচক কথা বলছেন এটা গভর্নর যখন আসবেন ও অনুষ্ঠানে আসবেন তখনই দেখতে পারবেন। আমরা বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রেরণের বিষয়টি উৎসাহিত করছি। আশা করছি রেমিটেন্স ফেয়ারে সবাই আসবেন ও যোগ দিবেন।
মেলার আকর্ষণ হিসেবে থাকবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ২০টিরও বেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মানি ট্রান্সফার কোম্পানি। প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ, রেমিট্যান্স অফশোর ব্যাংকিং ও প্রবাসী ব্যবসা-সংক্রান্ত সেমিনার, আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব। এ ছাড়া থাকবে সেরা ১০ জন বাংলাদেশি আমেরিকান রেমিট্যান্স প্রেরককে পুরস্কার প্রদান, বাংলাদেশের শীর্ষ ও রেমিট্যান্স রিসিভার ব্যাংককে পুরস্কার প্রদান, শীর্ষ তিন মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি/রেমিট্যান্স চ্যানেল পার্টনারকে পুরস্কার প্রদান, রেমিট্যান্স নেটওয়ার্কিং ডিনার ও প্রবাসী নেটওয়ার্কিং ডিনারও আছে অনুষ্ঠানসূচিতে।
মেলা পরিদর্শন করবেন রেমিট্যান্স প্রেরণকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি প্রবাসী, পেশাজীবী সম্প্রদায় ও সাংস্কৃতিক সংস্থার সদস্য, প্রবাসী ফোরাম ও সমিতির সদস্য ও প্রবাসী উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী প্রমুখ। এখন পর্যন্ত মেলার জন্য স্টল বরাদ্দ চলছে।
মেলার আগের দিন ১৮ এপ্রিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক পিএলসির সৌজন্যে ডিনার অনুষ্ঠিত হবে সন্ধ্যা সাতটায়। সেখানে প্রবাসীদের সঙ্গে বাংলাদেশিদের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার সুযোগ হবে। এনসিসি ব্যাংকের সঙ্গে অনুষ্ঠানটি সফল করতে সার্বিকভাবে রয়েছে মেলার আয়োজক সংগঠক বিইউসিসিআই। বিইউসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট ও আহ্বায়ক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, বিউসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মেলার জয়েন্ট কনভেনর রায়হানুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিইউসিসিআইয়ের সিইও ও মেলার প্রধান সমন্বয়কারী বিশ্বজিৎ সাহা মেলায় আসার জন্য প্রবাসীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
মেলার আয়োজন করছে বিইউসিসিআই ও ইউএসএ-বাংলাদেশ বিজনেস লিঙ্কস। সহযোগিতা করছে এফবিসিসিআই, বিডিপি। মিডিয়া পার্টনার রয়েছে বণিক বার্তা, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, একাত্তর টিভি, টিবিএন ২৪ এবং ঠিকানা পত্রিকা।