রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে আহত যোদ্ধাদের যৌন জীবনে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে ইউক্রেন। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে দেশটির রিসেক্স নামে একটি দাতব্য সংস্থা। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে আহত যেসব যোদ্ধা স্বাভাবিক যৌন জীবনে ফিরতে পারছেন না, মূলত তাদের সহায়তা করছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে রিসেক্স প্রকল্পের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ইভোনা কস্টিনা বলেন, 'এর আগে মার্কিন সেনারা যুদ্ধের পর একই সমস্যায় পড়েছিলেন। সে ঘটনার পর ২০১৮ সালে প্রথম তাঁরা এ প্রকল্প সম্বন্ধে ধারণা করতে পারেন'। তিনি আরও জানান, প্রকল্পের শুরুতে বিভ্রান্তির মুখে পড়েছিলেন তারা। জনগণ ও যোদ্ধাদের তোপের মুখেও পড়তে হয়েছিল। এমনকি তখন অনেকেই বলেছিল, 'মানুষ মারা যাচ্ছে, আর আপনারা আছেন যৌনতা নিয়ে'!
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রিসেক্স এই পর্যন্ত প্রায় ছয় হাজার পুস্তিকা মুদ্রণ করে ইউক্রেনের বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্র, অভিজ্ঞ সৈনিক ও তাদের পরিবারের কাছে পাঠিয়েছে। এছাড়া এই পুস্তিকাগুলো অনলাইনেও সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তারা ভিডিও, গ্রাফিক্স ও একটি হেল্প লাইনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচারণা চালু করেছে। সংস্থাটি তাদের প্রচারণায় স্বমেহন থেকে শুরু করে সেক্স টয়ের মতো বিষয়বস্তুও রেখেছে। ইভোনা বলেন, 'আমরা মোটামুটি সবকিছুই রাখার চেষ্টা করেছি। পুস্তিকাটিতে কুমার বা কুমারী আহত যোদ্ধাদের জন্য একটি বিশেষ অংশও আছে। আহত হওয়ার পরেও এটিই হবে প্রথম যৌনতা, যা তারা কখনো কল্পনা করেননি'।
রিসেক্সের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ক্যাটেরিনা স্কোরোখড জানান, তারা নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা নির্দেশিকাও প্রকাশ করেছেন যাতে সংশ্লিষ্ট সঙ্গী বা সঙ্গিনীদেরকে তাদের অভিজ্ঞতা ও শরীরের সঙ্গে মানানসই পরামর্শ দেওয়া হয়। যদিও এই প্রকল্পের লক্ষ্য, শারীরিক ব্যাপারের চাইতে মানসিক ব্যাপারে বেশি জোর দেয়া। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, 'নিজেকে গ্রহণ করা, নিজেকে ভালোবাসতে পারা এবং যুদ্ধে আহত হওয়ার পরেও কীভাবে নিজের ও নিজের সঙ্গীর মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে, এসব নিয়েই এ প্রকল্প'।
রিসেক্স প্রকল্পের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ইভোনার বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, যৌনতা নিয়ে আলোচনা করার জন্য যে ভাষাটি ব্যবহার করা হয় তাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটি কোনো নির্দিষ্ট ভাষা নয় যাকে বাধা অতিক্রম করতে দেয়া যাবে না। এসব ভাষা সম্ভবত খেলাধুলার জন্য ভালো। আর সবার যৌনতার মাত্রাও একই নয় তাই এই প্রকল্প থেকে অনেক আহত যোদ্ধাই মানসিকভাবে স্বস্তি লাভ করেছেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
ঠিকানা/এসআর