জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা সারজিস আলম শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে পঞ্চগড়ে নিজ এলাকায় সোমবার শোডাউন করেন। এ বিষয়টি সমর্থন করতে পারছেন না মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলছেন, শোডাউন আগে আওয়ামী লীগ, বিএনপি করতো। এমন শোডাউন দিয়ে রাজনীতি হয় না, মাস্তানি হয়। যারা জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারা যদি এখন ‘অন্যভাবে’ চলেন, এটা ‘দুঃখজনক’- মন্তব্য করেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে এসব কথা বলেন তিনি।
২৫ মার্চ মঙ্গলবার নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) এই আলোচনা অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউব চ্যানেলের এ টকশোতে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উম্মে ওয়ারা। যেখানে দেশের সমসাময়িক রাজনীতি, নিরাপত্তা, সংস্কার, নারী অধিকার- এমন নানা বিষয়ে ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের প্রশ্নের জবাব দেন দুই অতিথি।
একদিকে পাওনা বেতন আদায়ে শ্রমিকদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে, অন্যদিকে তরুণ একজন রাজনৈতিক নেতা শতাধিক গাড়ি নিয়ে শোডাউন করছেন- এ বিষয়টি সামনে এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক উম্মে ওয়ারা বলেন, জুলাই আন্দোলনটা ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে। অথচ শ্রমিকরা আন্দোলন করতে গেলে পুলিশ লাঠিপেটা করছে, আবার একই জায়গায় এর আগে ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি পালন করেছে এনসিপি। এখনো যদি এভাবে বৈষম্য থেকে যায়, তাহলে তো হবে না।
“সারজিস যদি গাড়ি বহরের পেছনে খরচ না করে, সেই টাকা শ্রমিকদের জন্য ব্যয় করতেন, তাহলে আরো বেশি মানুষের মন জয় করতে পারতেন।” যোগ করেন অপরাধ বিজ্ঞান গবেষক উম্মে ওয়ারা।
কথিত তৌহিদি জনতার নামে যেসব কর্মকাণ্ড চলছে, সেগুলোকে ‘মাস্তানি’ আখ্যা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষ যারা, তারা বেশি সুযোগ নিচ্ছে, এমনটা দেখেছি। বর্তমান সরকারের সময় আবার ওলামা নামধারী কেউ কেউ নারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে, আমি তা গ্রহণ করি না।’
এদিকে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পরাজিত শক্তি গুজব ছড়াতে চাইছে। তাই অন্তর্বর্তী সরকার অনেকটা ‘যুদ্ধাবস্থায়’ আছে। প্রধান উপদেষ্টার এমন মন্তব্যের সঙ্গে একমত হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উম্মে ওয়ারা বলেন, দেশে যুদ্ধাবস্থা থাকুক বা অন্য যাই থাকুক সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারেরই দায়িত্ব। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবশ্যই উন্নতি করতে হবে। মব জাস্টিসের নামে দেশে যেসব অপরাধমূক কর্মকাণ্ড চলছে, সেগুলো থামাতে সরকারকে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে- এই দাবি করেন তিনি।