বরিশালে চার বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত সুজনকে (৩২) বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতা গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তিনি মারা যান।
শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় নগরীর ধান গবেষণা রোডে স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। এরপর রাত আটটার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান।
মৃত সুজন নগরীর ধান গবেষণা রোড এলাকার জিয়া নগরের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। পেশায় তিনি অটোরিকশাচালক ছিলেন।
ধর্ষণ মামলা সূত্রে জানা যায়, শিশুর বাবা শনিবার সন্ধ্যায় থানায় একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগ অনুযায়ী, গত ১৪ মার্চ দুপুরে প্রতিবেশীর চার বছরের কন্যাশিশুকে নিজ বাসায় নিয়ে গিয়ে সুজন জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালান। ওই দিন দুপুর দেড়টার দিকে ভুক্তভোগী শিশুটিকে একটি রান্নার পাত্র ফেরত দিতে প্রতিবেশী সুজনের বাড়িতে পাঠানো হয়। তখন ঘরের খোলা দরজা দিয়ে শিশুটি ভেতরে প্রবেশ করলে সুজন একা থাকাকালে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। শিশুটি চিৎকার দিলে অভিযুক্ত পালিয়ে যান বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। রাত আটটার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুজনের মৃত্যু হয়।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, শত্রুতার জেরে সুজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে তাকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে।
নিহতের মা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার পোলায় আর অটো চালাইবে না। ওরে শত্রুরা চাপে ফালাইয়া দেড় লাখ টাকা দেনা বানাইছে। হেয়াও আমি শোধ করছি। আমার পোলারে বিভিন্ন রকম লোভ দেখাইয়া গাঁজাও বিক্রি করাইছে। হেই গাঁজা বেচতে না যাওয়ায় আমার পোলারে মারছে। গাছের লগে বাইন্দা মারছে, কোপাইছে। আমার পোলারে যারা মারছে, হেগো বিচার চাই। চাইর বছরের মাইয়ারে যদি ধর্ষণ করে—হেই মাইয়া কেমনে হাইট্টা বাসায় যায়?’
এ বিষয়ে এসআই মানিক সাহা বলেন, লাশ শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী শিশুর বাবার করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। অন্যদিকে গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঠিকানা/এনআই